সাজো সাজো রব শহর জুড়ে।সামনেই দীপাবলী ও কালীপূজা উৎসব। নানান রঙের প্রদীপ , মোমবাতি ও বাহারি আলোয় আর কিছুদিন পর সেজে উঠবে বাড়ির আঙিনা। এসমস্ত প্রদীপ ক্রেতাদের হাতে তুলে দিতে ব্যস্ত কলকাতা তথা ভারতের অন্যতম প্রদীপ তৈরীর বাজার দক্ষিণ দাড়ি। সল্টলেক ও উল্টোডাঙার মাঝে উত্তর কলকাতায় অবস্থিত এই বাজারে কয়েক প্রজন্ম ধরে প্রদীপ বানানো কাজ করে যাচ্ছেন বৈশাখী, কৃষ্ণচন্দ্র পালেরা।
করোনাকালে
বাজার মন্দা থাকলেও এই বছর আবারও
প্রাণ ফিরে এসেছে দক্ষিনদারি পটুয়া পল্লীতে। গত বছরের তুলনায়
এ বছর ব্যবসার হাল কেমন জিজ্ঞেস করাতে কৃষ্ণচন্দ্র পাল বলেন, “আগের বছরে ট্রান্সপোর্ট বন্ধ থাকায় তৈরি মাল বাজারে পাঠাতে পারিনি কিন্তু এ বছর চাহিদা
আছে।“
বর্তমান যুগে প্লাস্টিকের রমরমাতেও মাটির তৈরি এমন অভূতপূর্ব প্রদীপ, মোমবাতি রাখার স্ট্যান্ড, লক্ষ্মী গণেশের মূর্তি এক শৈল্পিক নিপুণতার দাবি রাখে। পুজোর আগে শেষ সপ্তাহে ব্যস্ত তাই তুঙ্গে। ক্রেতা বিক্রেতার খরিদ্দার এর মাঝে তাই চলছে শেষ মুহূর্তের রংয়ের কাজ। প্রায় পাঁচশো পরিবারের বাস এই অঞ্চলে এবং সকলেই প্রায় এই পেশার সাথে যুক্ত। মাটির চাকা দিয়ে শুরু করে বর্তমানে ছাঁচের মাধ্যমে মৃৎশিল্প বৃহত্তর আকার ধারণ করেছে।
শুধুমাত্র কলকাতা শহরতলি নয় এখানকার প্রদীপ চাহিদা মেটায় সারা ভারতের। সারা বছর বিভিন্ন কারণে প্রদীপ প্রয়োজন হয়। বৈশাখী পাল বলেন, "সারা বছর চাহিদা থাকলেও সিজনে প্রায় পঁচিশ থেকে ত্রিশ হাজার প্রদীপ তৈরি হয়। লক্ষ্মী গণেশের মূর্তি তো আছেই সেগুলিও প্রায় দশ হাজারটি তৈরি হয়।"
কিন্তু পটুয়াদের অভিযোগ সরকারি সাহায্য পেলেও প্রদীপ তৈরীর কাঁচামাল সংগ্রহ করতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। মুখ্য কারণ গাড়িভাড়া। তাই একটি গাড়ি তে করে কয়েকজন ভাগাভাগি করে কাঁচামাল আমদানি করেন ক্যানিং থেকে।
করোনা
আবহে এই পল্লী নিঝুম
হয়েছিল। ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিলেন বিভিন্ন শিল্পী। সব শেষে তাদের
একটাই আশা এবছর যেন লক্ষ্মী দেবী একটু সহায় হন।