রাম মন্দির কি শাস্ত্র মতে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে নাকি শুধুই গেরুয়া রাজনীতির গিমিক ?

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

রাম মন্দির কি শাস্ত্র মতে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে নাকি শুধুই গেরুয়া রাজনীতির গিমিক ?  

 দেশের ৪ শঙ্করাচার্যই যাচ্ছেন না রাম মন্দিরের উদ্বোধনে। হিন্দুধর্মের কাণ্ডারীদের মতে এই উদ্বোধন সনাতন ধর্মের নিয়মের লঙ্ঘন।

পুরী গোবরধনপীের স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতী, উচ্চরাখণ্ডের জ্যোতিষপীঠের স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী সহ ৪ শঙ্করাচার্য অযোধ্যার রামমন্দির উদ্বোধনে থাকছেন না।

অযোধ্যায় উদ্বোধন হতে চলেছে রাম মন্দির। তবে সেখানে যোগ দিচ্ছেন না উত্তরাখণ্ডের জ্যোতিষপীঠের শঙ্করাচার্য। শুধু তিনিই নন, দেশের ৪ শঙ্করাচার্যই যাচ্ছেন না রাম মন্দিরের উদ্বোধনে।


অভিমুক্তেশ্বরানন্দ জানান, দেশের 'কোনও শঙ্করাচার্যই ২২ জানুয়ারির অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন না। আমাদের কোনও অশুভ ভাবনা নেই। তবে শঙ্করাচার্যদের দায়িত্ব হল হিন্দুধর্ম সঠিকভাবে পালন করা, আর বাকিদের তা করতে বলা।'

রাম মন্দির উদ্বোধনে অংশগ্রহণ করবেন না হিন্দু সনাতন ধর্মের চার শীর্ষগুরু। হিন্দু ধর্মের নিয়মভঙ্গের অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা। শঙ্করাচার্যদের মতে মন্দিরের কাজ সম্পূর্ণ না করেই রাম লালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হিন্দু শাস্ত্রের বিরোধী।

উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় রাম মন্দির উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে দেশ জুড়ে যেন উৎসবের মরশুম তৈরি হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিশিষ্ট ব্যক্তিরা আসবেন উদ্বোধনের দিন (২২ জানুয়ারি)। কিন্তু এরই মধ্যে শোনা যাচ্ছে চার শঙ্করাচার্যের রাম মন্দির উদ্বোধনে অংশগ্রহণ নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যেই পুরীর গোবর্ধনপীঠের শঙ্করাচার্য স্বামী নিশ্চলানন্দ এবং উত্তরাখণ্ডের জোশিপীঠের শঙ্করাচার্য স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী রাম মন্দির উদ্বোধনে যাবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। 


রাম মন্দির উদ্বোধনে অংশ না নেওয়ার কারণ হিসেবে স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতী বলেন, 'রাম মন্দির উদ্বোধনে সঠিক নিয়ম মানা হচ্ছে না। আমন্ত্রণ পেয়েছি ঠিকই কিন্তু যাবো না। স্কন্দপুরাণ অনুযায়ী সমস্ত নিয়ম আচার না মানলে মূর্তিতে ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে। এখন না গেলেও মন্দিরের কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর যাবো।"

স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী বলেন, "আমাদের কারুর বিরুদ্ধেই কোনো অভিযোগ নেই। কিন্তু শঙ্করাচার্যদের দায়িত্ব হচ্ছে হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন নিয়ম রীতি রক্ষা করা। কিন্তু এখানে (রাম মন্দির উদ্বোধন) একাধিক হিন্দু নিয়ম লঙ্ঘন করা হচ্ছে। মন্দিরের কাজ শেষ হওয়ার আগেই রাম লালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা উচিত নয়"।

"১৯৪৯ সালের ২২ ডিসেম্বর এক জরুরী অবস্থার মধ্যে মধ্যরাতে সেখানে (বাবরি মসজিদ) ভগবান রামের মূর্তি রাখা হয়েছিল। তারপর সেই নির্মাণটি ভেঙে ফেলা হয়েছিল। তখন কিন্তু কোনো শঙ্করাচার্য কিছু বলেননি। কারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সেই কাজ করেছিল। কিন্তু এখন পরিস্থিতি আলাদা। এখন তো কোনো জরুরী অবস্থাও নেই। মন্দিরের কাজ শেষ করেও রাম লালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা যেত"।


পাশাপাশি তিনি বলেন, "এখন হয়তো অনেকেই আমাদের মোদী বিরোধী বলতেই পারেন। কিন্তু আমাদের কিছু করার নেই। অসম্পূর্ণ মন্দির উদ্বোধন করা এবং সেখানে দেবতার মূর্তি স্থাপন উচিত নয়। আমরা আমাদের ধর্মশাস্ত্রের বিরুদ্ধে যেতে পারি না"।

পুরী গোবরধনপীের স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতী, উচ্চরাখণ্ডের জ্যোতিষপীঠের স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী সহ ৪ শঙ্করাচার্য অযোধ্যার রামমন্দির উদ্বোধনে থাকছেন না। 

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, লোকসভা নির্বাচনে লাভের জন্য রাম মন্দির উদ্বোধনের দিন এগিয়ে আনা হয়েছে। একই অভিযোগ করেছে দেশের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসও। এক বিবৃতিতে দলের মুখপাত্র জয়রাম রমেশ জানিয়েছেন, "আরএসএস এবং বিজেপি দীর্ঘদিন ধরে অযোধ্যায় মন্দির প্রতিষ্ঠাকে একটি রাজনৈতিক প্রকল্প হিসাবে তৈরি করেছে। বিজেপি ও আরএসএসের নেতাদের দ্বারা অসম্পূর্ণ মন্দিরের উদ্বোধন হচ্ছে। স্পষ্টতই আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে লাভের জন্য এই উদ্বোধন এগিয়ে আনা হয়েছে।"


সোনিয়া গান্ধী, মল্লিকার্জুন খাড়্গেরা মন্দির প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন না বলে জানিয়েছেন তিনি।

আগামী ২২ জানুয়ারি অযোধ্যার রাম মন্দিরে দেব বিগ্রহের প্রাণ প্রতিষ্ঠা উৎসব রয়েছে। একই সঙ্গে উদ্বোধন হবে রামমন্দিরের। এদিকে, কয়েক মাস গেলেই ২০২৪ লোকসভা ভোট। তার আগে বিজেপি সরকারের রাম মন্দির প্রতিষ্ঠা নিয়ে বিরোধীরা সওয়াল করছে। এদিকে, রাম মন্দিরের উদ্বোধনের দিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আরতি অনুষ্ঠানে হবেন শামিল। তিনি আমন্ত্রিত রয়েছেন উদ্বোধনের মুখ্য অতিথি হিসাবে। এমন এক অনুষ্ঠানে দেশের ৪ শঙ্করাচার্যের উপস্থিত না হওয়ার ঘটনা বেশ তাৎপর্যবাহী বলে মনে করছেন অনেকেই।

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : প্রিয়শ্রী

Related News