আসামের বিহু উৎসব জানুন কিছু অজানা তথ্য

banner

#Pravati Sangbad Digital:

বাংলায় যখন মকর সংক্রান্তি পালন করা হচ্ছে, তখনই অসমে উদযাপন করা হচ্ছে মাঘ মাসে বিহু উৎসবের। পূরাণ মতে জানা যায়, পৌষ ও মাঘ মাসের সংক্রান্তির দিন থেকে শুরু হয় মাঘ বিহু উৎসবের। এই উৎসব দুদিন ব্যাপি উদযাপন করা হয়। কথিত রয়েছে, বিহু উৎসবে ফসল কাটার উৎসব হিসেবে পালিত হয়। এই সময়ে সেখানকার মানুষ বাঁশ ও পাতা দিয়ে কুঁড়েঘর তৈরি করে। এই উৎসবের প্রথমদিনটিকে বলা হয় "উরুকা"। এই উরুকা উদযাপনে মানুষ এই বাঁশ ও পাতা দিয়ে তৈরি অস্থায়ী ঘরে দিন যাপন করেন। রাতও কাটান সেখানে। এই সময়ে মাছ ধরারও রীতিও রয়েছে।
মকর সংক্রান্তি, লহোড়ি, পোঙ্গল, উত্তরায়ন কিংবা বিহু উৎসব- সারা দেশ জুড়ি বিভিন্ন নামে বিভিন্ন উৎসব পালিত হয় সংক্রান্তির দিন। হিন্দু শাস্ত্রে, মাঘ সংক্রান্তির গুরুত্ব বিস্তর। শীতের শেষে পালিত হয় এই উৎসব। কোথাও এদিন পূজিত হন সূর্যদেব, কোথাও পালিত হয় ফলস কাটা ও নতুন ফসল বপন করার উৎসব। এ সময় অসমে পালিত হয় বিহু উৎসব। এদিন অসমের লোকেরা ভোগালী বিহু উৎসব পালন করেন। এই উৎসব "মাঘ বিহু" বা "মাঘ ডোমাহি" উৎসব নামেও পরিচিত।
বছরে সূর্য ১২টি রাশির মধ্য দিয়ে যায়। সেই দিনগুলো পালিত হয় সংক্রান্তি। সূর্য এদিন ধনু রাশি ছেড়ে মকর রাশিতে প্রবেশ করে। সে কারণে এই দিন পালিত হয় মকর সংক্রান্তি। সংক্রান্তির দিনটি অসমে অগ্নি দেবতাকে উৎসর্গ করা হয়। সেখানে নতুন ফসল কাটা হয় এদিন। এই উপলক্ষে পালিত হয় বিহু উৎসব। অসমে এই উৎসব চলে দুদিন ধরে চলে। সেখানে একটি ভোজের মাধ্যমে উদযাপন করা হয় বিহু। বিভিন্ন উপজাতি ও সম্প্রদায়ের বহু মানুষ সম্মিলিতভাবে এই উৎসব পালন করে।

মাঘ বিহু উৎসবে মাঠে আগুন জ্বালিয়ে উৎসব পালনের রীতি রয়েছে অসমে। বিহু উৎসব পালিত হয় দুদিন ধরে। প্রথম দিন উরুকা ও পরের দিন বিহু  নামে পরিচিত। বিহু উৎসব ফসল কাটার উৎসবের সমাপ্তি হিসেবে পালিত হয়। এদিন যুবকরা বাঁশ ও পাতা দিয়ে কুঁড়ে ঘর তৈরি করে। উরুকা অর্থাৎ প্রথম দিন ভেলাঘর নামে পরিচিত অস্থায়ী ঘরে রাত কাটায়। এদিন সকলে মাছ  ধরেন। এছাড়াও, এই উৎসবের চুরির রীতি প্রচলিত। উরুকার দিন রাতে অন্যের বাড়ি থেকে শস্য চুরির রীতি আছে। তার পরের দিন মাঠে আগুন জ্বালিয়ে পালিত হয় উৎসব। এদিন দেবতার পুজো করা হয় এবং নৈবেদ্য দেওয়ার রীতি আছে। নাচ , গানে মেতে ওঠেন সকলে। অনুষ্ঠানের শেষে মিষ্টি ও বিভিন্ন মিষ্টি জাতীয় খাবার বিতরণ করা হয়। এই দিন পিঠে তৈরির রীতি আছে। বিহু উৎসবে অসমবাসীরা পিঠে, নাড়ু, তিলের পিঠে, ঘিলা পিঠে, সুতুলি পিঠে, হেঁচ পিঠে, ডেকা পিঠে, ভুরভুরী পিঠে তৈরি করেন। তাছাড়া, চিড়ে, সন্দেশ, মুড়ি, খৈ বিতরণ করা হয়। সব মিলিয়ে সাড়ম্বরে পালিত হয় এই "বিহু উৎসব।"

জানা যায়, মাঘ বিহু উৎসবের সময় এলাকার যুবকরা অন্যের বাড়ি থেকে শস্য, ক্ষেত থেকে ফলও চুরি করেন। এই সময়ে অন্যের বাড়ি থেকে শস্য কিংবা ফসল চুরির রেওয়াজ বহু বছর ধরে চলে আসছে। উৎসবের প্রথম দিন পুকুর, খাল, বিল কিংবা যেকোনও জলাশয় থেকে সবাই একসঙ্গে মাছ ধরার প্রচলন রয়েছে। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সমস্ত মানুষ এই মাঘ বিহু উৎসবে একসঙ্গে মেতে ওঠেন। কথিত আছে, বহু বছর আগে এই মাঘ বিহু উৎসবের সময় মোরগের লড়াই এবং মহিষের লড়াইয়ের প্রচলন ছিল। কিন্তু কালক্রমে মহিষ কিংবা মোরগের লড়াইয়ের রীতি কিছুটা ম্লান হলেও উৎসব উদযাপনের অন্যান্য রীতি এতটুকুও কমেনি। এই উৎসবে তিলের তৈরি পিঠেই প্রধান বলে মনে করা হয়। একে অপরের সঙ্গে নতুন ফসলের তৈরি খাবার তৈরি করে, নাচ, গানের মাধ্যমে উৎসবে মেতে ওঠেন।

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : Sangita Rana

Tags:

Related News