মহাকাশের বিভিন্ন প্রান্তে গবেষণা এবং অনুসন্ধানের জন্য বিশ্বের অন্যতম বড় উদ্ভাবনী প্রতিষ্ঠান হিসেবে উঠে এসেছে স্পেসএক্স। গত মাসে সুনীতারা, মাস্কের কোম্পানির পাঠানো মাস্কের ড্রাগনযানে চেপে ৯ মাসের বন্দি দশা কাটিয়ে পৃথিবীতে ফিরে এসেছেন। আর এর মধ্যেই ইলন মাস্ক ঘোষণা করেছেন যে, তার সংস্থা স্পেসএক্স আগামী ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে মঙ্গল গ্রহে নভোশ্চরদের পাঠানোর লক্ষ্যে বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে। এই ঘোষণাটি একেবারে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে, যেখানে NASA-এর দীর্ঘদিনের সাফল্যকে চ্যালেঞ্জ করে নিজের সংস্থা, স্পেসএক্স, মহাকাশ অভিযানে এক নতুন রূপরেখা তৈরি করতে চায়।
উলেখ্য, মঙ্গল গ্রহে নভোশ্চর পাঠানোর জন্য স্পেসএক্স দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। গত বছরই তারা পুনঃব্যবহারযোগ্য মহাকাশযান তৈরি করেছে, যা একেবারে নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে মঙ্গল অভিযানে সাফল্য অর্জনের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত। ইলন মাস্কের এই উদ্যোগের লক্ষ্য শুধু সাফল্য নয়, বরং পুরো মহাকাশ অভিযানের রূপরেখা পুনরায় নতুন করে গড়ে তোলা। মাস্ক বলেন, "আমরা খুব তাড়াতাড়ি মঙ্গল গ্রহে নভোশ্চরদের পাঠাতে সক্ষম হব। তবে এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, এবং আশা করছি আগামী ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে আমরা এই অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারব।"
আমেরিকার মহাকাশ গবেষণায় NASA-এর রয়েছে একটি ঐতিহাসিক সুনাম, কিন্তু গত কয়েক বছরে স্পেসএক্স নিজের উদ্ভাবনী কাজের মাধ্যমে এই খাতে অনেক সাফল্য অর্জন করেছে। বিশেষ করে, সুনীতাদের পৃথিবীতে ফেরানোর ক্ষেত্রে NASA বারবার ব্যর্থ হলেও, স্পেসএক্স সফলভাবে তাদের ড্রাগনযান পাঠিয়ে মঙ্গলগ্রহের বুক থেকে সুনীতাদের উদ্ধার করেছে। এই সাফল্য স্পেসএক্সের জন্য এক বিশাল অগ্রগতি এবং সাফল্য হিসেবে গন্য হচ্ছে। স্পেসএক্স-এর মঙ্গল অভিযানে সফলতা পৃথিবীকে শুধুমাত্র একটি নতুন মহাকাশ যাত্রার স্বাদ দেবে না, বরং পৃথিবী থেকে বহুদূরে একটি নতুন মানব বসতি গড়ার পক্ষে এক নতুন দৃষ্টিকোণ সৃষ্টি করবে। একদিকে, মহাকাশ গবেষণার পথে এই অভিযানে অনেক প্রযুক্তিগত পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং নতুন উদ্ভাবনীর চ্যালেঞ্জ থাকবে, অন্যদিকে মানবজাতির জন্য নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত খুলে যাবে।
মাসের পর মাস মহাকাশে থাকলে মহাকাশচারীদের শরীরে কিকি ধরণের প্রভাব পরে
প্রসঙ্গত, ইলন মাস্ক জানিয়েছেন, তাদের মূল উদ্দেশ্য মঙ্গল গ্রহে এক স্থায়ী বসতি স্থাপন করা এবং সেইসঙ্গে এটি একদিন পৃথিবী থেকে মহাকাশে মানুষের অভিবাসনের প্রথম ধাপ হতে পারে। তাদের এই মহাকাশ অভিযানে আরও অনেক ধাপে তৈরি হবে নতুন প্রযুক্তি এবং মহাকাশ অনুসন্ধানের নতুন রূপরেখা। এমনকি মঙ্গল গ্রহে মানুষের বসবাসের জন্য বিশেষ কায়দায় প্রযুক্তিগত উন্নয়নও সম্ভব হতে পারে। স্পেসএক্সের মঙ্গল অভিযানের পরিকল্পনা মহাকাশ গবেষণার জন্য এক নতুন যুগের সূচনা করতে পারে। ইলন মাস্কের দূরদর্শিতা এবং স্পেসএক্সের উদ্ভাবনী ক্ষমতা মানবজাতির মহাকাশ অনুসন্ধানের পথকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে। আগামী ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে মহাকাশে এক নতুন অভিজ্ঞান সৃষ্টি হতে পারে, যেখানে মঙ্গল গ্রহ হয়ে উঠতে পারে আমাদের ভবিষ্যতের নতুন ঠিকানা।