গত সোমবার দুপুর ২:৩০ নাগাদ কলকাতার পার্ক সার্কাস স্টেশনের কাছেই এক কারখানায় দাউ দাউ করে আগুন লেগে যায়, যার ফলে পুরো এলাকা কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। ধোঁয়া এতটাই ঘন হয়ে যায় যে, বহু মানুষ ভাবতে শুরু করেন, স্টেশনেই হয়তো আগুন লেগেছে। ধোঁয়া ধীরে ধীরে গোটা পার্ক সার্কাস স্টেশন চত্বরে ছড়িয়ে পড়ায় সেখানে উপস্থিত যাত্রীদের মধ্যে এক বিশাল আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
প্রসঙ্গত, পার্ক সার্কাস স্টেশনটি কলকাতার ব্যস্ততম স্টেশনগুলির মধ্যে একটি। অনেকেই আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করেন, এবং সবার মনে একটাই প্রশ্ন ছিল—হঠাৎ যদি ট্রেন চলে আসে, তবে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটে কিনা। কিন্তু ভাগ্যক্রমে পার্ক সার্কাস স্টেশনে বড় কোনও বিপদ ঘটেনি। রেলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগুন লাগার পরই কর্ড লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। পার্ক সার্কাসে দুটি মূল রেল লাইন রয়েছে—মেন লাইন এবং কর্ড লাইন। মেন লাইনটি শিয়ালদহ থেকে দক্ষিণ শহরতলির বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার লোকাল ট্রেনের জন্য ব্যবহার হয়, আর কর্ড লাইনটি শিয়ালদহে না গিয়ে সরাসরি বারাসতের দিকে চলে যায়। আজকের আগুন সেই কর্ড লাইনের ধারে অবস্থিত একটি কারখানায় লেগেছিল।
হাতের লেখা দেখে, লেখকের শারীরিক ও চারিত্রিক বিবরণ আন্দাজ করা যায়
যাত্রীদের বক্তব্য অনুযায়ী, আগুনের ধোঁয়া এতটাই ঘন হয়ে গিয়েছিল যে, কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। কেউ কেউ আতঙ্কিত হয়ে ওভারব্রিজ দিয়ে অন্যদিকে চলে যেতে শুরু করেন। অনেক যাত্রী লাইনের দিকে নেমে অন্য প্ল্যাটফর্মে চলে যাচ্ছিলেন। শেহনাওয়াজ খান নামে এক স্থানীয় যুবক জানান, ‘‘আশপাশে ভাল করে কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে প্ল্যাটফর্ম বদলাচ্ছিলেন।’পুলিশ ও দমকল বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালান, কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত আগুন পুরোপুরি নেভানো যায়নি। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানায়, ক্যানিং-বারাসত লাইনের একটি লোকাল ট্রেন বালিগঞ্জ স্টেশনে দাঁড়িয়ে রাখা হয়, এবং পার্ক সার্কাসের মেন লাইনও কিছুটা থমকে থমকে চলছিল।
এছাড়াও, পার্ক সার্কাস স্টেশনের ওভারব্রিজে অনেক যাত্রী আগুন দেখতে দাঁড়িয়ে থাকায়, সেখানে ওঠানামাও নিয়ন্ত্রণ করা হয়। বহু মানুষ আতঙ্কিত হয়ে প্ল্যাটফর্মের এক কোণে জড়ো হয়ে পড়েন। ট্রেন চলাচলের পাশাপাশি, সেখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য পুলিশ দৃষ্টিকোণ থেকে কঠোর ব্যবস্থা নেন। এদিকে, স্থানীয় বাসিন্দারা এবং যাত্রীরা ভয়ে ছিলেন যে, আগুনের তীব্রতা যদি আরও বাড়ে, তবে পার্ক সার্কাসের মতো ব্যস্ত স্টেশনে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তবে দমকল ও পুলিশের তৎপরতায় সেই বিপদটা এড়ানো গেছে।