ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গত বৃহস্পতিবার দিল্লিতে এক বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে কাশ্মীরের ইতিহাস নিয়ে একটি বড় ঘোষণা করেছেন। মোদী জমানায় এলাহাবাদ হয়েছে প্রয়াগরাজ। মুঘলসরাই হয়েছে দীন দয়াল উপাধ্যায় জংশন। সেই নামবদলের ধারা মেনে এবার কাশ্মীরের নামও বদলে যাবে? সেই ইঙ্গিতই দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
বাজারে কমদামে 400 CC সেরা কয়েকটি বাইক বিস্তারিত জেনে নিই
তিনি জানান, কাশ্মীরের নাম পরিবর্তন করে “কাশ্যপ” রাখা হতে পারে। তাঁর মতে, কাশ্মীরের নাম নিয়ে ইতিহাসের প্রচলিত কিছু তথ্য ভুল বা বিকৃত হয়েছে। শাহ বলেন, কাশ্মীর এবং ঝেলম নদীকে ৮০০০ বছর পুরনো গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে, যা প্রমাণ করে যে কাশ্মীর কখনই ভারতের বাইরে ছিল না। তিনি আরো বলেন, "কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ এবং সর্বদাই ছিল। ইতিহাসের যে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে, তা ভুলভাবে রচিত হয়েছে।'' এই মন্তব্যের মাধ্যমে অমিত শাহ ইতিহাসের প্রকৃত তথ্য অনুসন্ধান ও বিশ্লেষণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেন, এমন সময় ছিল যখন শাসকদের খুশি করার জন্য ইতিহাস লেখা হত, যা এখন সময়ের সাথে পরিত্যক্ত।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “১৫০ বছরের একটি সময় ছিল, যখন ইতিহাস মানে ছিল দিল্লির দরবার থেকে বাল্লিমারান পর্যন্ত। কিন্তু এখন এমন এক সময় এসেছে যখন ইতিহাসবিদদের কাজ হবে প্রমাণের ভিত্তিতে সত্য এবং সঠিক ইতিহাস লেখার।" তিনি ইতিহাসবিদদের কাছে আবেদন জানান, যেন তাঁরা ১০ হাজার বছরের পুরনো তথ্যসহ সঠিক ইতিহাস লিখেন। অমিত শাহ বলেন, কাশ্মীরের ভারতীয় সংস্কৃতির অটুট সম্পর্কের প্রমাণ পাওয়া যায় শঙ্করাচার্য, সিল্ক রুট, হেমিস মঠের মাধ্যমে। তাঁর মতে, কাশ্মীরে বিভিন্ন ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক কাঠামো যেমন সুফি, বৌদ্ধ ও শৈব মঠ গড়ে উঠেছে, যা ভারতের সংস্কৃতির অমূল্য অংশ।
শাহ আরো বলেন, "কাশ্মীরের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। লাদাখে মন্দির ভাঙা হয়েছিল এবং কাশ্মীরে স্বাধীনতার পর কিছু ভুল হয়েছিল, কিন্তু সেগুলি পরবর্তীতে সংশোধন করা হয়েছে। কাশ্মীর ভারতের সংস্কৃতির ভিত্তি স্থাপন করেছে, এবং এখান থেকে কন্যাকুমারী, গান্ধার, ওড়িশা এবং বাংলা পর্যন্ত আমাদের সংস্কৃতি সংযুক্ত হয়েছে।" অমিত শাহের এই বক্তব্যে তিনি সঠিক ইতিহাস প্রবর্তন এবং ভারতের সংস্কৃতি সংরক্ষণে গুরুত্ব আরোপ করেছেন। তাঁর মতে, ভারতের অটুট ঐতিহ্য এবং ইতিহাস বিশ্বের অন্য কোন ভূ-রাজনৈতিক শক্তি দিয়ে সংজ্ঞায়িত করা সম্ভব নয়। এই ভাষণটি কেবল কাশ্মীরের ঐতিহাসিক গুরুত্বকে আরও একবার প্রতিষ্ঠিত করল, বরং ভারতীয় সংস্কৃতি ও ইতিহাসের এক দীর্ঘ সময়কালকে পুনরায় চিহ্নিত করার দিকে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দিল।