বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি পরিচালক ও নির্মাতা স্বপন সাহা, যিনি একের পর এক সুপারহিট ছবি উপহার দিয়েছেন, আজও জনপ্রিয় বর্তমান প্রজন্মের কাছে। তার শিল্পের প্রতি ভালোবাসা, নির্মাণের অনবদ্য দক্ষতা এবং সিনেমার প্রতি নিঃস্বার্থ অবদানে তিনি বাংলা সিনেমার অন্যতম মহান ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। ১৫ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল-এর তৃতীয় বার্ষিক উৎসবে এই সৃষ্টিশীল ব্যক্তিত্বকে 'লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট' সম্মানে ভূষিত করা হয়।
আগামী ২৯ এপ্রিল দিঘার নতুন জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন হতে চলেছে
উলেখ্য, উৎসবে উপস্থিত ছিলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, যিনি স্বপন সাহাকে এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার প্রদান করেন। ঋতুপর্ণা অত্যন্ত আবেগপ্রবণ হয়ে তার জীবনের এক বিশাল প্রাপ্তি হিসেবে এই মুহূর্তকে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, "স্বপনদার সঙ্গে কাজ করতে পেরে আমি অনেক কিছু শিখেছি। উনিই তো আমাকে ‘মাস অডিয়েন্স’-এর সঙ্গে পরিচয় করিয়েছেন। তার পরিচালনায় আমি অভিনীত অনেক সুপারহিট ছবি বাংলা সিনেমার ইতিহাসে অমর হয়ে রয়েছে।" এছাড়া, স্বপন সাহা তার অভিমত প্রকাশ করতে গিয়ে বর্তমান বাংলা চলচ্চিত্রের পরিস্থিতি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “বর্তমানে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি পিছিয়ে পড়েছে, এবং এর একটি বড় কারণ হচ্ছে সিঙ্গল স্ক্রিন মুভি হাউজ়ের সংকট। আগে যেখানে বছরে শতাধিক ছবি তৈরি হতো, এখন সেরকম ছবি তৈরি হচ্ছে না। তার উপর সিনেমা হলগুলোর বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে অনেকটা সংকটে পড়েছে সিনেমা শিল্প। তবে, আমরা এই ইন্ডাস্ট্রিকে আবারও বাঁচিয়ে তুলতে পারি যদি আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করি।”এবারের উৎসবে মোট ১০টি ছবি প্রদর্শিত হয়, যার মধ্যে একটি ছবি আসে নেপাল থেকে। উৎসবের মূল স্লোগান ছিল ‘বাংলা সিনেমা বিশ্বের আবেগ’, যা বাংলা সিনেমার বৈশ্বিক গুরুত্ব এবং আবেগময় প্রভাবকে তুলে ধরেছে।
প্রসঙ্গত, উৎসবের অন্য অতিথিরা ছিলেন রোহিত রায়, অন্বেষা দত্তগুপ্ত, দেবলীনা দত্ত, রামকমল মুখোপাধ্যায়, সংঘমিত্রা চৌধুরী, সৌমজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, হৈমন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়, এবং কাঞ্চন বন্দ্যোপাধ্যায়। এই উৎসব বাংলা সিনেমার প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও তার ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার এক অসাধারণ মঞ্চ হয়ে উঠেছে। স্বপন সাহার জীবনদর্শন, বাংলা সিনেমার প্রতি তার অবিচল ভালোবাসা এবং এর টেকসই ভবিষ্যতের জন্য তার চিন্তা ভাবনা এই উৎসবে উজ্জ্বল হয়ে উঠে। তবে, চলচ্চিত্র শিল্পের বর্তমান অবস্থা এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে তার সতর্কতা মনে করিয়ে দেয়, যে পরিসরে কাজ করছেন শিল্পীরা, তার জন্য প্রয়োজন রয়েছে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এবং আড়ালকৃত অভ্যন্তরীণ সহযোগিতার।