সকলকে চমকে আচমকাই কিম জং উনের শত্রু দেশে জারি হয়েছিল জরুরি সামরিক আইন (মার্শাল ’ল)৷ লক্ষ্য ছিল উত্তর কোরিয়ায় কমিউনিস্ট শক্তির হুমকি থেকে দেশকে রক্ষা করা এবং রাষ্ট্রবিরোধী উপাদানগুলিকে নির্মূল করা৷ কিন্তু দেশজুড়ে প্রবল বিক্ষোভের মুখে সামরিক আইন নিয়ে পিছু হঠল দক্ষিণ কোরিয়া৷ এই আইন লাগু হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তা প্রত্যাবার করে নিলেন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল৷
দক্ষিণ কোরিয়ায় আচমকা জারি সামরিক শাসন
উলেখ্য, গত মঙ্গলবার আচমকাই দেশে সামরিক আইন চালু করার কথা ঘোষণা করেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট৷ এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা হতেই দেশ জুড়ে শুরু হয় ব্যাপক বিক্ষোভ। রাতভর টানটান উত্তেজনা, রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিক্ষোভ ও প্রতিবাদের পর অবশেষে মার্শাল ল’ নিয়ে পিছু হঠতে বাধ্য হল পূর্ব এশিয়ার এই দেশ। মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রেসিডেন্ট ইউন বলেন, ‘‘উত্তর কোরিয়ার কমিউনিস্ট বাহিনীর হুমকি থেকে দক্ষিণ কোরিয়াকে রক্ষা করতে এবং জনগণের স্বাধীনতা ও শান্তি ধ্বংসকারী রাষ্ট্রবিরোধী শক্তিগুলোকে নির্মূল করার জন্য, আমি জরুরি সামরিক আইন ঘোষণা করছি।’’ এই আইন বাস্তবায়নের দায়িত্ব সঁপেন সে দেশের সেনাপ্রধান জেনারেল পার্ক আন-সু-র হাতে। সামরিক আইন জারির মধ্যে দিয়ে তিনি দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে চেয়েছিলেন৷
প্রসঙ্গত, আইন জারির পাশাপাশি এদিন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টিকেও আক্রমণ শানান প্রেসিডেন্ট ইউন৷ তাঁর অভিযোগ, শুধুমাত্র ‘ইমপিচমেন্ট, বিশেষ তদন্ত এবং দলের নেতাদের আইনি কোপ থেকে রক্ষা করার’ উদ্দেশ্যে দেশের শাসনব্যবস্থাকে ‘পঙ্গু’ করে রেখেছে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি। তবে, প্রেসিডেন্ট ইউন সামরিক আইন ঘোষণার পরই দেশজুড়ে শুরু হয় ব্যাপক বিক্ষোভ৷ শুধু বিরোধীরাই নয়, শাসক দলের অনেক নেতাও বিক্ষোভে সামিল হন৷ অ্যাসেম্বলি ভবনের সামনে পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বাধে জনতার৷ প্রতিবাদের মুখে পড়ে ছয় ঘণ্টার মধ্যে সামরিক আইন প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হন ইউন। সামরিক আইন নিয়ে ভোটাভুটিতেও দেখা যায়, ৩০০ সদস্যের মধ্যে ১৯০ জনই বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘কিছুক্ষণ আগে জাতীয় পরিষদ থেকে জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছিল, এবং আমরা সেই সামরিক বাহিনী প্রত্যাহার করেছি, যা সামরিক আইন কার্যকর করার জন্য মোতায়েন করা হয়েছিল।’’