এক জন স্বাধীন নাগরিক হিসেবে দেশের নেতৃত্বে কাকে বেছে নেবেন, তা নির্ভর করে কোনও মানুষের ভোটাধিকারের ওপরেই। কোনও পরিবর্তন আনতে চান অথবা ভবিষ্যৎ সুরক্ষা করতে চান, ভোট দেওয়া হল প্রাথমিক অধিকার।
অনেক সময়েই দেখা যায় অসাবধানতা বশতঃ সেই ভোটার আই ডি কার্ড হারিয়ে গেলে ভীষণ সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। প্রথমত, ভোটার আই ডি কার্ড না থাকলে কোনও মতেই পরিচয়পত্র না দেখিয়ে ভোট দেওয়া সম্ভব নয়। পাশাপাশি, বহু জায়গায় নিজের পরিচয়পত্র হিসেবে ভোটার আই ডি কার্ডই দেখানোর প্রচলন আছে। এক বার ভোটার আই ডি কার্ড হারিয়ে গেলে ফলে অন্যান্য কাজেও তার প্রভাব পড়তে পারে।
নিজের গাফিলতিতে হোক, কোনও ভাবে বাড়ি বদল করতে গিয়ে হোক কিংবা স্রেফ ফাইল চুরি… ভোটার আই ডি কার্ড হারিয়ে যেতে পারে নানা কারণে। আবার এ-ও হওয়া সম্ভব যে কোনও ভাবে ভোটার আই ডি কার্ড ছিঁড়ে গেছে এবং তা প্রমাণ পত্র হিসেবে দাখিল করার ক্ষেত্রে অনুপযুক্ত। সে ক্ষেত্রেও প্রয়োজন হতে পারে ডুপ্লিকেট ভোটার আই ডি কার্ড।
ডুপ্লিকেট ভোটার আই ডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে গেলে যথেষ্ট কারণের দরকার পড়ে। কারও কাছে ইতিমধ্যে ভোটার আই ডি কার্ড আছে অথচ তিনি কোনও কারণে আর একটি অর্থাৎ ডুপ্লিকেট ভোটার আই ডি কার্ড চান, সেটা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।
কী ভাবে ডুপ্লিকেট ভোটার আই ডি কার্ডের জন্য আবেদন করবেন?
ডুপ্লিকেট ভোটার আই ডি কার্ডের জন্য আলাদা করে আবেদন করার প্রয়োজন পড়ে। দেখে নেওয়া যাক এর জন্য কী কী করতে হবে আবেদনকারীকে।
১) প্রথমে আবেদনকারীকে নিজের নির্বাচন অফিসে যেতে হবে। সেখানে গিয়ে আপনাকে এপিক-০০২ অর্থাৎ ই পি আই সি – ০০২ নামের ফর্মটির একটি কপি নিতে হবে। এই ফর্মটি ডুব্লিকেট ভোটার আই ডি কার্ড বানানোর জন্য প্রয়োজনীয়।
২) এ বার ফর্মটি পুরোপুরি ঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ বা ফিল আপ করতে হবে।
৩) আবেদন পত্রের যেখানে আবেদনকারীর নাম, ঠিকানা আর অন্যান্য তথ্য দেওয়ার দরকার, সেখানে তাই দিয়ে পূরণ করতে হবে।
৪) শুধু ফর্ম ফিল আপ করলেই চলবে না। এর পাশাপাশি অর্থাৎ আবেদন পত্রের সঙ্গে যে যে নথি চাওয়া হয়েছে, সেই সমস্ত নথির একটি করে প্রতিলিপি অর্থাৎ ফোটো কপি এর সঙ্গে জুড়ে দিতে হবে।
৫) ভোটার আই ডি কার্ড হারিয়ে গেলে এবং সেই সংক্রান্ত অভিযোগ ইতিমধ্যে নিকটবর্তী থানায় অর্থাৎ পুলিশের কাছে জানিয়ে রাখলে কিংবা জি ডি বা জেনারেল ডায়েরি করলে, সেই জি ডি-র একটি ফোটো কপি কিংবা প্রতিলিপি জমা করতে পারেন।
৬) এ বার সমস্ত নথি সমেত আবেদনপত্র জমা দিতে হবে নির্বাচনী অফিসে।
৭) ই পি আই সি – ০০২ ফর্মটি জমা দিলে নির্বাচনী অফিস থেকেই একটি বিশেষ রেফারেন্স নম্বর দেওয়া হবে। সেই নম্বর যত্ন করে রেখে দেওয়া জরুরি। কারণ এই নম্বরটির মাধ্যমে ভবিষ্যতে যখনই চাইবেন, ট্র্যাক করে দেখতে পারবেন যে, ডুপ্লিকেট ভোটার আই ডি কার্ডের সেই মুহূর্তের স্টেটাস কী।
৮) ফর্ম জমা দেওয়ার পরে বেশ কিছু দিন পরে খবর পাঠানো হয় এবং জানানো হয় যে ডুপ্লিকেট ভোটার আই ডি কার্ড তৈরি হয়ে গেছে। এ ছাড়া নিজেরাও অনলাইনে ট্র্যাক করার মাধ্যমে জানতে পারবেন ডুপ্লিকেট ভোটার আই ডি কার্ডটি তৈরি হয়েছে কি না।
৯) ডুপ্লিকেট ভোটার আই ডি কার্ড তৈরি হয়ে গেলে নিজেরাই নির্বাচনী অফিস থেকে সেই কার্ড সংগ্রহ করে নিতে পারবেন।
১০) এ প্রসঙ্গে এ কথাও জানিয়ে রাখা প্রয়োজন যে, ডুপ্লিকেট ভোটার আই ডি কার্ডের জন্য কেউ যদি নির্বাচনী অফিসে গিয়ে আবেদন করতে না চান, সে ক্ষেত্রে নিজেরাই ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমেও আবেদন করতে পারবেন।
ভোটার কার্ড হারিয়ে গেলে কী ভাবে ডুপ্লিকেট ভোটার কার্ডের জন্য আবেদন করবেন?