এ যেন বাঘ বন্দির খেলা

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

কিছু দিন আগেই দক্ষিণ ২৪ পরগণার কুলতুলিতে শোনা গিয়েছিল বাঘের গর্জন, অনেকেই শুনতে পেয়েছিল তা, কারোর চখে পড়েছিল দক্ষিণরায়ের পায়ের ছাপ। রীতিমতো আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছিলেন এলাকার বাসিন্দারা। ২৫শে ডিসেম্বরের পিকনিকও বাতিল হয়েছে অনেকেরই, কারণটা রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। সে কতই না খাটুনি, গাছের মগ ডালে মাচা বাঁধা থেকে শুরু করে ছাগলের টোপ কিছুতেই পাত্তা দেইনি দক্ষিণরায়। এ জেনো বন কর্মীদের রয়্যাল বেঙ্গল রহস্য উদ্ঘাটন। বাঘের কথা জানার পরেই বন দপ্তরের কর্মীরা গোটা জঙ্গল জাল দিয়ে ঘেরে ফিরেছিলেন কিন্তু তাতেও কাজ দেয়নি। এমনকি বোমার আওয়াজেও চিড়ে ভেজেনি।
দক্ষিণ ২৪ পরগণার কুলতুলির কাছে গত ২৩শে ডিসেম্বর প্রথম দেখা মিলেছিল বাঘের। পরিকল্পনা ছিল চকলেট বোমা ফাটিয়ে ভয় দেখাবেন তাকে, কিন্তু সে কি আর বাড়ির পোষা বেড়াল, অত সহজে ভয় পেলে যে মান থাকবে না বাংলার রাজার। বন কর্মীরা ভেবেছিলেন বোমার শব্দে বাঘ যখন ভয় পেয়ে পালাবে থিক তখনই মাচার ওপর থেকে ঘুম পাড়ানি গুলিতে কুপোকাত করবেন তারা, এ যেন ঠিক বাঘ বন্দির খেলা, আর তা দেখতেই ভিড় জমিয়ে ছিলেন এলাকার মানুষ। পুলিশ দিয়ে ভিড় সামালও দেওয়া হয় কিন্তু বাঘ ধরা কি মুখের মজা। দীর্ঘ ২ ঘণ্টা ধরে বন কর্মীরা চেষ্টা চালান। এমনকি ড্রোন দিয়েও খোঁজাখুঁজি শুরু করেন তারা, কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি।

রবিবার দক্ষিণরায়ের দেখা মিলেছিল কেল্লার কাছে শেখ পাড়াতে। এদিন সকালে বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পান গ্রামবাসীরা, সাথে সাথে বন দপ্তরে খবর দেওয়া হয়, কিন্তু তাতেও ধরা দিতে নারাজ বাঘ মামা। এত খোঁজাখুঁজি এত চেষ্টার পরে অবশেষে ঘুম পাড়ানি গুলিতে ধরা দেই সে। প্রায় ৬ ফুট দীর্ঘ, দেখলেই যেন হাড় হিম হওয়ার জোগাড়। ৬ দিনের পরিশ্রমের পরে মঙ্গলবার ধরা দেয় সে। প্রায় শ-খানেক লোকের কাল ঘাম ছুটেছিল বাঘটিকে ধরতে। মনে হয় তাদের ওপর খানিকটা দয়া দেখিয়েই ধরা দেয় সে।  তবে মঙ্গলবার সকালেও বাঘ ধরতে হিমসিম খেতে হয়েছিল বন কর্মীদের। বন কর্মীদের হাঁকাহাঁকিতে আর হস পাইপে করে জল ছেটানোর ফলে টনক নড়ে তার।

এই শীতের সকালে ঠাণ্ডা জলের ছিটে কারই বা ভালো লাগবে। জলের ছিটে পেয়ে হঠাৎ উঠে দাড়াই সে আর বন কর্মীদের কয়েকজন হাতে ঘুম পাড়ানি গুলি নিয়ে তৈরি ছিলেন, সঙ্গে সঙ্গে পর পর দুটি গুলি ছোড়া হয় দক্ষিণরায়কে লক্ষ্য করে। তাতেই কুপোকাত তিনি। আসতে আসতে নিস্তেজ হয়ে পরেন তিনি। তার পরে তাকে খাঁচাই বন্দি করে নিয়ে যাওয়া হয় শারীরিক পরিক্ষা নিরীক্ষার জন্য। বুধবার সকালে তাকে দক্ষিণ ২৪ পরগণার রামগঙ্গা রেঞ্জে ছেড়ে দেওয়া হয়। দুই জন পশু চিকিৎসক পরিক্ষাও করে বাঘটির কিন্তু তাতে কোন রোগ ধরা পরেনি। বন কর্মীদের ধারনা আগে হয়তো বাঘটি ধরা পড়েছিল তাই এত সহজে খাঁচাই ধুকতে চাইনি, তবে নিশ্চিত হওয়ার জন্য বাঘটির ছবি ওয়াল্ড লাইফ ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়াতে পাঠানো হয়েছে।

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : Sabyasachi Chatterjee

Tags:

Related News