সারা দেশ জুড়ে নয় থেকে ১৪ বছর বয়সি মেয়েদের সার্ভিকাল ক্যানসারের টিকা দিতে উদ্যোগী হল কেন্দ্র। শিক্ষামন্ত্রকের তরফে বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে ইতিমধ্যে এই নিয়ে চিঠিও পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন রাজ্যের জেলাস্তরে পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত নথিভুক্ত ছাত্রীর সংখ্যা জানার চেষ্টা করছে মন্ত্রক।
রাজ্যগুলিকে ইতিমধ্যেই তথ্যগুলি সংগ্রহ করে পাঠাতে বলা হয়েছে।
এদিন মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, দেশের টীকা সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শদাতা সংস্থার (ন্যাশনাল টেকনিক্যাল অ্যাডভাইসারি গ্রুপ) তরফে এই টীকাকরণের কথা বলা হয়েছে। তাদের তরফে শিক্ষামন্ত্রককে জানানো হয়, সার্বিক টিকাকরণ প্রকল্পের মাধ্যমে সার্ভিকাল ক্যানসারের টীকাকরণ শুরু করা জরুরি। নয় বছর বয়সিদের থেকে শুরু হবে এই টিকাকরণ। মূলত বয়ঃসন্ধিতে থাকা মেয়েদেরই এই টিকা দেওয়া হবে বলে জানা যায়।
কেন্দ্রের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং ভূ - বিজ্ঞান মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং বিশেষ অনুষ্ঠানে জানান, ‘‘জরায়ুমুখ ক্যানসারের টিকা তৈরির কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গিয়েছে। এ বার অতি দ্রুত সাধারণের কাছে তা পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু করতে হবে।’’ কেন্দ্রীয় প্রতি মন্ত্রী এদিন আরও বলেন, ‘‘কোভিড পরিস্থিতি প্রতিরোধ মূলক স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করেছে। এর ফলস্বরূপ সারভাইকাল ক্যানসারের টিকার মতো প্রতিষেধক তৈরির কাজ দ্রুততার সঙ্গে শেষ করা সম্ভব হয়েছে। বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারগুলি সব সময়ে তাঁদের প্রাপ্য সম্মান পায় না। কর্কট রোগের ক্ষেত্রে দেশের বিজ্ঞানীরা এত বড় সাফল্য পেয়েছেন আর তাঁদের এই সাফল্য উদযাপনের করতেই আজ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।’’
করোনা টিকা তৈরি করে বিশ্ব জুড়ে কোভিড সংক্রমণ ঠেকাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল পুণের সিরাম ইনস্টিটিউট। এ বার সেই আদার পুণাওয়ালার সংস্থা সিরামই বাজারে আনতে চলেছে জরায়ুমুখ ক্যানসারের টিকা। এই ক্যানসারের পিছনে রয়েছে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস। আর সেই ভাইরাসকে রুখতেই কাজে আসবে সিরামের এই নয়া টিকা।
প্রাথমিকভাবে স্কুলচত্বরেই শুরু হবে এই টিকাপ্রদান। ছাত্রীসংখ্যার নিরিখে স্কুল বেছে নিয়ে চলবে টিকাকরণ প্রকল্প। ছাত্রীসংখ্যা বেশি এমন স্কুলগুলিতে প্রথমে টীকা দেওয়া শুরু হবে। টিকাকরণের দিন স্কুলে উপস্থিত থাকতে না পারলে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে পরেও টিকা নেওয়া যাবে। নয় থেকে ১৪ বছর বয়সি যে মেয়েরা স্কুলে নথিভুক্ত নয় তাদের জন্যও একই ব্যবস্থা থাকবে বলে জানানো হয়। মন্ত্রকের তরফে বলা হয়, ভ্রাম্যমান টিকা প্রদানের একটি দল থাকবে। এরা স্কুলে নথিভুক্ত নয় এমন মেয়েদের টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করবে। টিকাকরণের উদ্যোগ সফল করতে একই সঙ্গে সরকার ইউ-উইন অ্যাপে নাম নথিভুক্ত করার কথা জানায়। এতে দেশ জুড়ে মোট কতজন টিকা পেল সেটিও জানা সম্ভব হবে। মন্ত্রকের তরফে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে এই নিয়ে সচেতনতা প্রসারের জন্য উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে।