চিরনিদ্রায় পেলে, মেয়ের কথায়, "শান্তিতে ঘুমাও"

banner

#Pravati Sangbad digital Desk:

ব্রাজিলের সংবাদপত্র ‘ফোলহা ডে সাও পাওলো’ জানিয়েছিল, কেমোথেরাপি কাজ করছে না পেলের শরীরে। কোনও চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন না ব্রাজিলের হয়ে তিন বার বিশ্বকাপ জেতা ফুটবলারকে রাখা হয়েছিল ‘প্যালিয়াটিভ কেয়ার’-এ। অবশেষে নখত্রপতন ঘটল শুক্রবার। দুই বছর আগে ৬০ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছিলেন ফুটবলের রাজপুত্র মারাদোনা। তাঁর পথ অনুসরণ করেই ৮২ বছর বয়সে বিশ্বফুটবলকে অভিভাবকহীন করে চলে গেলেন পেলে। ফুটবল জগতে আবারও নেমে এলো শোকের ছায়া। জীবনের কঠিন যুদ্ধে হার মানলেন ফুটবল জগতের সব থেকে বড় যোদ্ধা। প্রয়াত হলেন সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফুটবলার পেলে। বৃহস্পতিবার ভারতীয় সময়ে রাতে হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনবারের বিশ্বকাপ জয়ী এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। দীর্ঘ অসুস্থতার পর প্রয়াত হয়েছেন বিশ্ব ফুটবলের সম্ভবত প্রথম সুপারস্টার পেলে। বয়স হয়েছিল ৮২। ব্রাজিলের সাও পাওলোর একটি হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ফুটবলের সম্রাট। শুক্রবার (ভারতীয় সময় অনুযায়ী) ইনস্টাগ্রামে পেলের মেয়ে লেখেন, ‘আমরা যা কিছু হয়েছি, সেটা তোমার জন্য। তোমায় অপরিসীম ভালোবাসি। শান্তিতে ঘুমাও।’

পেলে ১৯৭৭ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ এশিয়ায় এসেছিলেন এই কিংবদন্তি। খেলেছিলেন কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে। মোহনবাগানের সঙ্গে একটি ম্যাচ খেলেছিলেন বিশ্ব ফুটবলের এই সম্রাট। নিজের পেশাদারি কেরিয়ারের একেবারে শেষলগ্নে কসমস ক্লাবের এশিয়া সফরের অঙ্গ হিসেবে কলকাতায় এসেছিলেন তিনি। তিনবার বিশ্বকাপজয়ীর একঝলক দেখতে ভেঙে পড়েছিল কলকাতা। বিমানবন্দর, হোটেল থেকে শুরু ইডেন গার্ডেন্স – লোকে লোকারণ্য ছিল।

তবে ইডেন গার্ডেন্স পুরো ম্যাচটা খেলতে পারেননি পেলে। বৃষ্টির জেরে খেলার পক্ষে কার্যত অযোগ্য হয়ে গিয়েছিল মাঠ। ৩০ মিনিট খেলেছিলেন। কেরিয়ারের শেষলগ্নে এসে কাদা মাঠে পেলের পা থেকে আগেরমতো স্কিলের বিচ্ছ্যুতি দেখা না গেলেও সেদিন সেইসব কিছুর পরোয়া করেনি কলকাতা। শুধুমাত্র পেলেকে নিজের চোখে সামনে থেকে চাক্ষুষ করেছিলেন মানুষ। যে ম্যাচে ২-২ গোলে ড্র করেছিল কসমস ও মোহনবাগান।

পেলের মৃত্যুর পর নেইমার লিখেছেন, ‘পেলের আগে ১০ নম্বর ছিল শুধুই একটি সংখ্যা। আমি কোনো এক সময় কোথায় জানি এটা পড়েছিলাম। সুন্দর হলেও সেটা ছিল অসম্পূর্ণ। আমি বলতে চাই, পেলের আগে ফুটবল ছিল শুধুই একটা খেলা। পেলে সব কিছু বদলে দিয়েছে। তিনি ফুটবলকে শিল্পে বদলে দিয়েছেন, আনন্দে ভরিয়ে দিয়েছেন। তিনি দরিদ্রদের, কালোদের কণ্ঠস্বর দিয়েছেন। বিশেষ করে ব্রাজিলিয়ানদের দৃশ্যমান করেছেন। ফুটবল এবং ব্রাজিলের মানকে ওপরে তোলার জন্য রাজাকে ধন্যবাদ। তিনি চলে গেলেন, কিন্তু তার জাদু থেকে গেল। পেলে চিরন্তন।’

পর্তুগিজ মহাতারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো লিখেছেন, ‘ব্রাজিলের জন্য আমার গভীর সমবেদনা। বিশেষ করে জনাব এডসন অরান্তেস দো নাসিমেন্তোর পরিবারের প্রতি। ফুটবলের চিরন্তন রাজার বিদায় ফুটবল-দুনিয়া যে ব্যথা অনুভব করছে তা প্রকাশ অযোগ্য। তিনি লাখো মানুষের অনুপ্রেরণা। আজ, কাল এবং সারাজীবনের জন্য দৃষ্টান্ত। আমার প্রতি সব সময় যে স্নেহ তিনি সব সময় দেখিয়েছেন তা ছিল পারস্পরিক। এমনকি দূর থেকেও। তিনি কখনো বিস্মৃত হবেন না। আমাদের মতো ফুটবলপ্রেমীদের স্মৃতিতে তিনি থেকে যাবেন সব সময়। শান্তিতে ঘুমান রাজা পেলে।’

আরেক ব্রাজিলিয়ান কাসেমিরো বলেছেন, ‘শান্তিতে ঘুমান পেলে। ফুটবল এবং ব্রাজিলকে আপনি যে গৌরব এনে দিয়েছেন সে জন্য ধন্যবাদ। আপনার উত্তরাধিকার চিরন্তন।’

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : Aparna Dutta

Related News