অতিমারি পরিস্থিতি কাটিয়ে রেকর্ড গড়ল খড়গপুর আইআইটি

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

দেশের আর পাঁচটা আইআইটি থেকে সব সময় প্রতিযোগিতার দৌড়ে এগিয়ে ছিল খড়গপুর আইআইটি বা ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি। পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বিধান চন্দ্র রায় পশ্চিমবঙ্গের শিল্প বিস্তারের জন্য ভারতের তৎকালীন প্রধান মন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুকে এই  ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার জন্য রাজি করিয়েছিলেন। ১৯৫১ সালে তৈরি এই প্রতিষ্ঠানটি প্রায় দুই হাজার একরের বেশি জায়গার ওপর গঠিত। পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়গপুরে অবস্থিত এই ইনস্টিটিউটের বর্তমান শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ১০ হাজারের বেশি। ১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রাথমিকভাবে স্বাধীন ভারতের ইঞ্জিনিয়ারদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। ৫০ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত এই টেকনোলজি ইনস্টিটিউট ২০১৯ সালে ইনস্টিটিউট অফ এমিনেন্সের তকমা লাভ করে। ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায় ১৯৫১ সালে ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার সময় ২২৪ জন ছাত্র এবং ৪২ জন শিক্ষক ছিলেন, বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানের নাম প্রথম সারিতে।
বর্তমানে আবার এই প্রতিষ্ঠান রেকর্ড গড়ে দেখাল। অতিমারি পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতিতে বড়সড় ধস দেখা দিয়েছিল, কিন্তু অতিমারির ধাক্কা সামলে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বরং কয়েকগুন বেশিই জিএসটি লাভ করেছে কেন্দ্র সরকার, যা জিএসটি শুরু পরে দ্বিতীয় সর্বচ্চো। অর্থনীতির সাথেই পাল্লা দিয়ে এই অতিমারি আবহেও রেকর্ড গড়ে দেখাল দেশের অন্যান্য আইআইটি গুলির সাথে খড়গপুর আইআইটিও। খড়গপুর আইআইটির রেকর্ড সংখ্যক পড়ুয়া আবার ক্যাম্পাসিংয়ে চাকরি পেয়েছেন। তার মধ্যে সর্বচ্চো বেতন বার্ষিক ১ কোটি ২০ লক্ষ্য টাকার চাকরি পেয়েছেন ৭ জন পড়ুয়া। ডিসেম্বরের শুরুতেই ক্যাম্পাসিংয়ে ৫৬৩ জন পড়ুয়া চাকরির সুযোগ পেয়েছেন, গুরগাঁওয়ের একটি শেয়ার ট্রেডিং সংস্থা সর্বচ্চো বেতনের ভিত্তিতে তাদের মধ্যে ৭ জনকে নিয়োগ করেছে। ৭ জনের মধ্যে একজন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভোগপুরের চাকদহ গ্রামের বাসিন্দা, নাম শেখ ইজাজুর রহমান। অন্তিম বর্ষের এই ছাত্র সফটওয়্যার ডেভেলপার পদে চাকরি পেয়েছেন।

২৩ বছর বয়সি শেখ ইজাজুর এক বাংলা মিডিয়াম স্কুলের ছাত্র, বাবা শেখ ওয়াসেফউর রহমান চাঁইপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, মা আনোয়ার বেগম গৃহ বধূ, ছেলের এই সাফল্যে তারা খুব খুশি। ২০১৭ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে ইজাজুর খড়গপুর আইআইটিটে ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তি হন। বাকি ৬ পড়ুয়াদের নাম অর্ণব মাইতি, যশরাজ গুপ্ত, আনশুল গয়েল অর্চিত আগারওয়াল, দেবর্ষি চন্দ্রকান্ত প্যাটেল এবং যশপরাগ বুটালা।

খড়গপুর আইআইটির রেজিস্টার তমাল নাথ বাবু বলেন, “ গত বছরেও এত বেতনের চাকরি ছিল না, সর্বচ্চো বেতন ছিল ৩০ লক্ষ্য টাকা বা তার কিছু বেশি। তবে করোনা কালীন পরিস্থিতিতে অনলাইন ক্লাসে পঠনপাঠনেও কোন খামতি ছিল না, তাই এই বছর রেকর্ড সাফল্য আমরা পেয়েছি”। সদ্য চাকরি প্রাপ্ত ইজাজুর বলেন, “ ক্যাম্পাসিংয়ে সর্বচ্চো ৩০ লক্ষ্য টাকার চাকরি পেতে আমি দেখেছি, আমিও ভেবেছিলাম আমি ঐ রকম বেতনেরই কোন চাকরি পাবো, তবে এত বেতনের চাকরি আশা করিনি। মনে রাখতে হবে আইআইটি পড়া মানেই কোটি টাকা বেতন নয়”। এর আগেই বিদেশি সংস্থাগুলি এত বেতনের চাকরি দিত, তবে এই বছর দেশীয় সংস্থা গুলিও তাদের পেছনে ফেলে রাখেনি। শুধু খড়গপুর আইআইটি নয় দেশের অন্যান্য আইআইটি যেমন বোম্বে আইআইটি, মাদ্রাজ আইআইটির পড়ুয়ারাও কোটি টাকার প্যাকেজের চাকরি পেয়েছেন।

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : Sagarika Chakraborty