শরীরে খারাপ ও ভাল দুই ধরনের কোলেস্টেরল থাকে। খারাপ কোলেস্টরলকে বলা হয় 'লো ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন' (এলডিএল) এবং ভাল কোলেস্টেরলকে বলা হয় 'হাই ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন' (এইচডিএল)। রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লেই হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে বাড়ে স্ট্রোকের সম্ভাবনাও।
তাই শরীরে এইচডিএল-এর সঠিক মাত্রা বজায় রাখা জরুরি। খাদ্যতালিকায় এবং জীবনযাত্রায় সামান্য কিছু পরিবর্তন আনলেই রক্তে এইচডিএল-এর মাত্রা স্বাভাবিক রাখা সম্ভব।
কোলেস্টেরল এক ধরনের চর্বিজাতীয়, তৈলাক্ত স্টেরয়েড যা সেল মেমব্রেনে পাওয়া যায় এবং যা রক্তে পরিবাহিত হয়। স্তন্যপায়ী প্রাণীদের সেল মেমব্রেনের এটি একটি অত্যাবশ্যক উপাদান । কিন্তু কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি থাকলে সর্বনাশ! বাড়ে হৃদরোগ এবং রক্ত সংবহণ জাতীয় অসুখের ঝুঁকি! হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক-এর আশঙ্কাও বহুগুণ বৃদ্ধি পায়। কাজেই সাবধান হন!
খাবারের মধ্যে দিয়ে বেশি করে শর্করাযুক্ত খাবার শরীরে ঢুকলে খেলে তা পরিণত হয় ফ্যাটে। তখন দেহের কোষগুলি বেশি পরিমাণে খারাপ কোলেস্টেরল তৈরি করে। এখানেই বিপদ! অনেকেই কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে রোজকার ডায়েট থেকে দুধ ও দুগ্ধজাতীয় খাবার বাদ দেন! কিন্তু দুধ কি কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়? সম্প্রতি একটি গবেষণায় এই প্রশ্নের উত্তর দিলেন গবেষকরা।
International Journal of Obesity-তে প্রকাশিত একটি পেপারে বলা হয়েছে, কোলেস্টেরল মাত্রার উপর দুধ বা দুগ্ধজাতীয় খাবার কোনও প্রভাব ফেলে না। বরং নিয়মিত দুধ খেলে শরীরের খারাপ ও ভাল... দু'রকম কোলেস্টেরলের মাত্রাই কমে ।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যাঁরা নিয়মিত দুধ খান, তাঁদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ১৪ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। পর্যাপ্ত পরিমাণে দুধ খেলে কোলেস্টেরল এবং ওজন, কোনওটাই বাড়ে না।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রিত রাখতে বাদাম, ওটস খান। প্রতিদিন এক মুঠো বাদাম আপনার রক্তে ক্ষতিকর চর্বি বা কম ঘনত্বের লিপিডের (এলডিএল) মাত্রা ৫ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে। এ ছাড়া বাদাম খেলে পাবেন ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম-সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা সারাদিন আপনাকে এনর্জিতে ভরপুর রাখবে।
কোলেস্টেরল কমাতে শিমের বিচি, মটরশুঁটির জুড়ি মেলা ভার! এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, যা সহজে পেট ভরায়, সারাদিন খিদে কম পায় এবং কম খাওয়া হয়। সবুজ পাতা ও ডাঁটাওয়ালা সবজি, যেমন বিভিন্ন ধরনের শাক এবং খোসা-সহ ফল যেমন পেয়ারা, আপেলে রয়েছে অন্ত্রের চর্বি শোষণ কমানোর উপাদান। এই ধরেনের সবজি ও ফল আপনার রক্তে এলডিএলের মাত্রা ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে।
তৈলাক্ত মাছ, বিশেষ করে তৈলাক্ত সামুদ্রিক মাছে আছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, যা রক্তে ক্ষতিকর ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমিয়ে দেয়।