# Pravati Sangbad Digital desk:
অভিনয়ে: অনির্বাণ ভট্টাচার্য, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, রাইমা সেন, আবীর চট্টোপাধ্যায়, গৌরব চক্রবর্তী, ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়।
পরিচালনায়: সৃজিত মুখোপাধ্যায় কলকাতার মধ্যেই এক অন্য কলকাতা দেখাতে ভালোবাসেন সৃজিত। তাই বাংলা সিনেমায় চায়না টাউন ও তাঁর ভিতরের ড্রাগ মাফিয়া ও গ্যাং ওয়ার দেখালেন ২০২০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত দ্বিতীয় পুরো সিনেমায়। বাইশে শ্রাবণ’ যেখানে শেষ হয়েছিল, এ ছবির শুরু সেখান থেকেই। একেবার প্রথম দৃশ্য থেকেই পর্দায় রক্তের 'হলি' খেলায় মেতে গ্যাংয়ের রিংমাস্টার খোকা। গলায় ক্ষুর চালিয়ে খুনোখুনি আর খোকা ও তাঁর বিশষ বন্ধুকে নিয়ে গল্পের পথ চলা শুরু। প্রথমার্ধে দর্শক ‘ধরতে পারবেন না’ যে দ্বিতীয়ার্ধে কী অসাধারণ মুহূর্ত অপেক্ষা করছে। থ্রিলারের সেটাই মজা! অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটবে ক্লাইম্যাক্সে। আবার থ্রিলার যাঁরা ভালবাসেন তাঁরা এই অপ্রত্যাশিতকে প্রত্যাশা করাতে একটা মজা পান। ৯ বছর আগে বাইশে শ্রাবণ’ ছবিতে যেমন মারকাটারি একটা ব্যাপার ছিল প্রথম থেকেই, তার সিক্যুয়েল ‘দ্বিতীয় পুরুষ’ ছবিতে কিন্তু তা নেই। সত্যি বলতে ‘দ্বিতীয় পুরুষ’ এর শুরুটা একটু আটকেই যায় বাইশে শ্রাবণ’ যেখানে শেষ হয়েছিল, এ ছবির শুরু সেখান থেকেই। তখনকার ‘খুনে কবি’ এবং খোদ নিজেরই পোড়খাওয়া সিনিয়র প্রবীর রায়চৌধুরীকে আততায়ী হিসেবে চিনিয়ে দেওয়া তরতাজা পুলিশ অফিসার অভিজিৎ পাকড়াশী (পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়) এ ছবিতে এখন নিজেই অভিজ্ঞ, সুদক্ষ এবং স্বনামধন্য। আগের ছবিতে তাঁর সাংবাদিক বান্ধবী-লিভ ইন পার্টনার অমৃতা (রাইমা সেন) এখন তাঁর ঘরণী। মাঝের বছর আটেকে সময়ের নোনা ধরা সম্পর্কের তিক্ততা বাড়তে বাড়তে, তাঁদের বিয়েটাই এখন ভাঙনের মুখে। অন্যদিকে ট্যাংরার চিনেপাড়ায় ড্রাগ কারবারিদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে বছর ২৫ আগে পর পর তিনটে রক্তহিম করা খুনে শহর কাঁপিয়ে ধরা পড়ে গিয়েছিল গ্যাং লিডার 'খোকা'। টার্গেটকে কুপিয়ে খুনের পরে কপালে নিজের নাম খোদাই করে রেখে যাওয়াটাই ছিল তার ট্রেডমার্ক। সে সময়ে খোকাকে পাকড়াও করেন ইনস্পেক্টর প্রণব রায়চৌধুরী (বাবুল সুপ্রিয়), অপরাধীকে শেষ করে দিয়ে অপরাধের অবসান ঘটানোটাই যার নীতি। পুলিশি হেফাজতে তাঁর মারে প্রায় মরতে বসা খোকা প্রাণে বেঁচে যায় স্রেফ এক বড়কর্তার হস্তক্ষেপে। ঘটনাচক্রে প্রণব প্রবীরেরই দাদা। ভাইকে তিনিই শিখিয়েছিলেন দোষীকে নিজে হাতে শাস্তি দেওয়ার পাঠ। এর ২৫ পর আগের বারের মতোই ফের পুলিশের নাকের ডগা দিয়ে আরও দুটো খুন। একই টার্গেট, একই ছকে। সৌজন্যে, শুধু চাউনি আর কথার ভাঁজেই হাড় হিম করে দেওয়া আততায়ী (অনির্বাণ ভট্টাচার্য) এবং একে একে খুলে আসা জট, রহস্যের উন্মোচন এবং অবশ্যই গল্পের মোড় সপাটে ঘুরিয়ে দেওয়া চমক। সত্যিই অর্থেই দ্বিতীয় পুরুষ 'স্পিন অফ', বাইশে শ্রাবণের পাস্ট লাইফ নিয়েই হাড় হিম কড়া রহস্য। শেষ সিনে পরিচালক যা দেখাবেন, সেটাই দেখবার জন্যে অপেক্ষা করছিল দর্শক। একেবারে শেষ দিনের টার্নার পিচে এযেন হরভজনের বলে বাই বাই করে স্পিন ভেল্কি! অভিনয়ে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় ও অনির্বাণ ভট্টাচার্য অসাধারণ । পরিণত সিনেম্যাটিক অভিনয়, যা অনেকদিন মনে থাকবে। রাইমাও অমৃতা চরিত্রটিতে যথাযথ। পরমব্রতর পাশাপাশি তাঁর সহয়োগী জুনিয়র পুলিস অফিসারের চরিত্রে গৌরব পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেছেন। বিশেষত, স্ত্রীর কাছে অভিজিতের ফিরে যাওয়ার ঠিক আগের দৃশ্যে গৌরব অপূর্ব। একটি ছোট অথচ গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে চোখ টানবেন বাবুল সুপ্রিয়ও। ছবির মিউজিক ও ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর, সিনেমাটোগ্রাফি, এডিটিং সবই প্রশংসা পাবে, তবে এই ম্যাচে যিনি জিতলেন এবং আবারও প্রমাণ করলেন বাংলায় থ্রিলার বানানোয় তিনিই অন্যতম সেরা, তিনি পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়।৯ বছর পর আবারও এক অন্ধকার ছবি তৈরি করার কাজটা সহজ ছিল না। সিনেমার সবথেকে বড় সম্পদ ছবির সংলাপ। অত জোরদার সংলাপে খারাপ অভিনয় সম্ভবই নয়।‘বাইশে শ্রাবণ’-এর থ্রিলার এবং ফিল দুই-ই ফেরাল ‘দ্বিতীয় পুরুষ’।
#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image