জগদ্ধাত্রী পূজা: অভূতপূর্ব আলোকসজ্জার সঙ্গে মেলবন্ধন

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

আজ জগদ্ধাত্রী পূজার মহাষ্টমী। নবমীতে দেবী জগদ্ধাত্রীর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ পূজা হয়। কিন্তু এই পূজার রেষ অনেকদিন আগে থেকেই শুরু হয়ে যায়। আসলে কালিপূজা,ভাইফোঁটা শেষ হয়ে গেলে আমাদের মন খারাপ হয়ে যায়, মনে হয় উৎসবের মরশুম শেষ হয়ে গেল। তখন আমাদের মন খারাপের ওষুধ হয়ে আসে জগদ্ধাত্রী পূজা। জগদ্ধাত্রী পূজা শুনলেই আমাদের মনে চলে আসে চন্দননগর, কৃষ্ণনগরের কথা। আলোর রোষনাইয়ে সেজে উঠেছে চন্দননগর। প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে মানুষের থিকথিকে ভিড়। অষ্টমীর সকালে সেই ভিড় বেড়েছে কয়েকগুণ। পূজা উদ্যোক্তাদের মতে নবমীতে এই ভিড় আরও বাড়বে। চন্দননগর থিমের জোয়ারে ভাসলেও নজর কেড়েছে মায়ের সাবেকি রূপ। চন্দননগরে মা সনাতনী। সাবেকিয়ানার সাথে চন্দননগরের বিশেষ আলোকসজ্জার মেলবন্ধন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এখানকার বড় পূজাগুলির মধ্যে অন্যতম হল লালবাগান, বাগবাজার, তেমাথার পূজা।
পিছিয়ে নেই পাশের শহর চুঁচুড়া ও। বড়বাজারের 'চুঁচুড়া ওয়েলফেয়ার আ্যসোসিয়েশান' এই বছর ২৯বছরে পা দিল। এই ক্লাবের সুবিশাল প্যান্ডেল, নয়নাভিরাম আলোকসজ্জা, অপূর্ব সুন্দর মায়ের প্রতিমা সাধারণ মানুষকে অবাক করেছে। তাই মানুষের ঢল নেমেছে এই মন্ডপে।
চন্দননগর, কৃষ্ণনগরের পূজাকে সমানে সমানে টেক্কা দিচ্ছে শান্তিপুরের জগদ্ধাত্রী পূজা। শোভাযাত্রায় রয়েছে আলোকসজ্জার চমক। শান্তিপুর সুত্রাগড় অঞ্চলের পীরেরহাট বারোয়ারি সবথেকে প্রাচীন। এই মন্দিরের জগদ্ধাত্রী প্রতিমা পীরেরহাট নামেই পরিচিত। জানা যায় প্রায় ৩০০ বছরেরও প্রাচীন এই জগদ্ধাত্রী প্রতিমা রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের হাত দিয়ে স্থাপিত হয়। এখনো চিরাচরিত নিয়ম মেনে পুজিত হয় প্রতিমা।উল্লেখ্য, কৃষ্ণনগরের সাথে জগদ্ধাত্রী পুজোর কাহিনী জড়িয়ে রয়েছে ওতপ্রতভাবে। রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের আমল থেকে করে আসা হয়ে আসছে এই পুজো। রাজ্যের নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগর এবং হুগলী জেলার চন্দননগরেই সাধারণত জগদ্ধাত্রী পুজো করা হয়। তবে বর্তমানে প্রায় সমস্ত জেলাতেই ছোট, বড় আকারে জগদ্ধাত্রী পুজো করা হয়ে থাকে।বিভিন্ন জায়গার পূজা এবং নিজেদের মধ্যে একে অপরের থেকে ভালো করার লড়াই সাধারণ মানুষ খুব উপভোগ করছেন।
বিগত দুই বছর করোনা মহামারির কারনে মানুষ কোনো উৎসবেই সেইভাবে আনন্দ করতে পারেনি। বাদ যায়নি জগদ্ধাত্রী পূজাও। কিন্তু বাঙালি উৎসবপ্রিয়। এই উৎসবগুলি বাঙালির মিলন উৎসব। তাই এই বছর পূজা উদ্যোক্তারাও সেইভাবেই পূজার আয়োজন করছে যাতে সাধারণ মানুষকে সবরকমভাবে আনন্দ দেওয়া যায়।
জগদ্ধাত্রী পুজো উপলক্ষে বিশেষ ট্রেন চালাচ্ছে পূর্ব রেল। সোমবার থেকেই হাওড়া-ব্যান্ডেল লাইনে চলছে এই বিশেষ লোকাল ট্রেন। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ভিড় সামলাতে তাঁরা সোম থেকে থেকে শুক্র এই বিশেষ ইএমইউ চালাবেন।
হাওড়া-ব্যান্ডেল রুটে চলবে ৫টি জোড়া বিশেষ ট্রেন এবং এক জোড়া চলবে হাওড়া-বর্ধমান রুটে। হাওড়া-ব্যান্ডেল স্পেশাল ছাড়বে হাওড়া ছাড়বে বিকাল ৫টা ২০ এবং রাত ৭টা ৫৫, ৮টা ২৫, ১১টা ৩০ এবং ১২টা ৩০ মিনিটে। ব্যান্ডেল থেকে এই স্পেশাল ট্রেনগুলি ছাড়বে সন্ধ্যা ৬টা ৩৫ এবং রাত ৯টা ২০, ৯টা ৫৫, ১টা ও ২টায়। এছাড়াও হাওড়া-বর্ধমান ইএমইউ স্পেশাল হাওড়া ছাড়বে রাত ১টা ১৫ মিনিটে এবং বর্ধমান ছাড়বে রাত ১০টা ৩০ মিনিটে। অর্থাত জগদ্ধাত্রী পুজোর সময় হাওড়া-ব্যান্ডেল লাইনে গভীর রাত পর্যন্ত লোকাল ট্রেনের সুবিধা রাখছে পূর্ব রেল। শুধু তাই নয়, শুক্রবার বিসর্জনের দিন অতিরিক্ত একটি স্পেশাল ইএমইউ রাত ২টা ৩৫ মিনিটে হাওড়া ছাড়বে এবং ব্যান্ডেল থেকে ট্রেনটি ভোর চারটেয় ছাড়বে হাওড়ার উদ্দেশে। প্রতিটি ট্রেনই সমস্ত স্টেশনে থামবে বলেও একলব্যবাবু জানিয়েছেন।

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : Sampriti Gole

Tags: