"সাবর্ণ রায় চৌধুরী বাড়ির ঐতিহ্যবাহী দুর্গাপুজো"

banner

#Pravati Sanbad Digital Desk:

সাবর্ণ রায় চৌধুরী বাংলার একটি ঐতিহাসিক পরিবার। এই পরিবার কয়েকটি পরগণার জায়গিরদার ছিলেন, তার একটি বড় অংশ এবং প্বার্শবর্তী এলাকা নিয়ে ইংরেজরা পরবর্তীতে প্রাথমিকভাবে কলকাতা শহর নির্মাণ করেন। ১৬৯৮ সালের ১০ নভেম্বর সুতানুটি, কলিকাতা ও গোবিন্দপুর গ্রাম তিনটির প্রজাসত্ত্ব সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবারের কাছ থেকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ইংরেজরা নেয়। এই পরিবার সাবর্ণ চৌধুরী পরিবার নামেও পরিচিত। ইংরাজী ১৬১০ সাল থেকে বড়িশার পারিবারিক বাড়িতে সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবারের দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এটি বাংলার প্রাচীনতম দুর্গোৎসবগুলির মধ্যে একটি এবং সম্ভবত কলকাতা অঞ্চলের প্রথম দুর্গাপূজা। বর্তমানে সাবর্ণ পরিবারে মোট সাতটি দুর্গাপূজা হয়। এগুলির মধ্যে ছয়টি হয় বড়িশায় এবং সপ্তমটি হয় বিরাটিতে। বড়িশার পূজাগুলি হল আটচালা, বড়োবাড়ি, মেজোবাড়ি, বেনাকি বাড়ি, কালীকিংকর ভবন ও মাঝের বাড়ি। দুর্গাপূজা ছাড়াও সাবর্ণ পরিবারে চণ্ডীপূজা, জগদ্ধাত্রী পূজা, অন্নপূর্ণা পূজা, দোলযাত্রা ও রথযাত্রা উৎসব প্রচলিত। সম্রাট জাহাঙ্গীর কর্তৃক আট পরগনার করমুক্ত জায়গির মঞ্জুর করার পর, রায় লক্ষ্মীকান্ত গঙ্গোপাধ্যায় মজুমদার চৌধুরী এবং তাঁর স্ত্রী ভগবতী দেবী ১৬১০ খ্রিস্টাব্দে বরিশায় শরত্‍কালে দুর্গাপুজো শুরু করেন। সাবর্ণ রায়চৌধুরী বাড়ির পুজো আটচালার। আটটি দুর্গাপ্রতিমা তৈরি হয় এই বাড়ির পুজোতে। সবকটি প্রায় একই কায়দায় তৈরি। প্রতিমার স্বতন্ত্রতা হল এর চলচিত্রগুলিকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে এবং দশমহাবিদ্যা নামে পরিচিত মা শক্তির দশটি ভিন্ন চিত্রের ছবি রয়েছে । প্রতিমার একপাশে শিবের মূর্তি এবং অন্যপাশে রাম। তাদের পূজাও করা হচ্ছে। দুর্গার রং লালচে বা হালকা সোনালি হতে পারে যেমন দুর্গাভক্তিতরঙ্গিণীতে উল্লেখ করা হয়েছে। অসুরের বর্ণ সবুজ যা তার মধ্যে মন্দতা ও ঈর্ষাকে চিত্রিত করে। এখানে কার্কিকেয় রাজকীয় কায়দায় পরিহিত। মোটের উপর চিত্রটি উপাসকদের জন্য আশা এবং সমৃদ্ধি নিয়ে আসে। সাবর্ণ পরিবারে দুর্গাপুজো বিদ্যাপতির দুর্গাভক্তিতরঙ্গিণীতে বর্ণিত আচার ও আচারানুসারে অনুষ্ঠিত হয়। সপ্তমী থেকে দশমী ১৮ টি ভাগে অন্নভোগ নিবেদন করা হয় মা দুর্গাকে। মুখে কাপড় বেঁধে রান্না করতে হয় ভোগ। পরিবারের সন্ধিপুজোর একটি বিশেষত্ব রয়েছে। সদ্যস্নাতা পরিবারের সদস্যা ভিজে গায়ে, ভিজ কাপড়ে ভোগ রান্না করেন। মায়ের ভোগে থাকে ল্যাটা বা শোল মাছ। এই পুজোর বিসর্জন প্রতিষ্ঠিত পুকুরেই হয়ে থাকে। পুজোর শেষে বাড়িতে তৈরি বোঁদে দিয়েই হয় দশমী পালন করা হয়। দিন গড়িয়েছে, বছর গড়িয়েছে, সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবারের ঐতিহ্যময় অতীত এখন লোকের মুখে মুখে ফেরে। নতুন সদস্যরা আসেন পরিবারে। কিন্তু বাড়ির রীতি মেনেই পুজোয় যুক্ত হন তাঁরা । আধুনিকতার রং তাতে এখনও লাগেনি। 

#Source: online/Digital/Social Media News   # Representative Image

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : Sumu Sarkar