"কলকাতার শোভাবাজার রাজবাড়ী" - রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দ, বিদ্যাসাগর, গান্ধীজির মতো মনীষীদেরও পদধূলি পড়েছিল

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

বর্তমানে জমিদারির পাঠ চুকেছে তাবুও রয়ে গিয়েছে ঐতিহ্য। দুর্গাপুজো জমিদারি বাড়ির সাথে যে এক সুক্ষ সুতো দিয়ে জুড়ে রয়েছে তা এক নস্টালজিয়া। নবকৃষ্ণ দেব  শোভাবাজার রাজবাড়ির দুর্গাপূজা শুরু করে ১৭৫৭ সালে৷ লর্ড ক্লাইভ থেকে লর্ড হেস্টিংসের মতো ব্রিটিশ শাসকরা এসেছিল এই রাজবাড়ির পুজোয়। এমনকী রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দ, বিদ্যাসাগর, গান্ধীজির মতো মনীষীদেরও পদধূলি পড়েছিল এই রাজবাড়িতে৷ নবকৃষ্ণ আমন্ত্রণ করে ক্লাইভকে নিয়ে আসল, কিন্তু নিজে গোঁড়া হিন্দু হওয়ায়, ইংরেজদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করে রেখেছিল। সাহেবদের জন্য পুজোয় নাচ গানের ব্যবস্থা ছিল। আবার  নাচঘর এমন জায়গায় ছিল যে সেখান থেকে চণ্ডীমণ্ডপ সরাসরি দেখা যেত। এইভাবেই ক্লাইভ এবং তার সাঙ্গোপাঙ্গরা মূল বাড়ি বা পুজো প্রাঙ্গণে না এসেও পুজো দেখল। এক দিকে আমোদপ্রমোদ-খানাপিনা-নাচ-গান, চলতে থাকল, অন্য দিকে ভক্তিভরে পুজোও চলতে লাগল। এইভাবে দুইয়ের ভারসাম্য বজায় রেখে নবকৃষ্ণ দারুণভাবে এই পুজো বছরের পর বছর চালিয়ে গেল। এককালে কামানের তোপ দেগে শুরু হত শোভাবাজার রাজবাড়ির সন্ধিপুজো। সমাপ্তিও হত কামানের গোলার শব্দে। এখন আর সেই রামও নেই, সেই রাজত্বও নেই। কিন্তু চিরাচরিত প্রথার অন্যথা ঘটে কী করে! তাই অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিক্ষণে এখনও চিরাচরিত প্রথা মেনে বন্দুকের গুলির শব্দ করা হয়৷ রাজবাড়ির বিশ্বাস, ওই সন্ধিক্ষণে মা দুর্গা ত্রিশূল দিয়ে অসুর বধ করেন। তখনই অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটে, জাগ্রত হয় শুভ শক্তি৷ অশুভ শক্তির বিনাশে ওই শব্দের দ্বারা প্রতিধ্বনিত হয় মর্ত্যবাসীর জয়োল্লাস। তেমনই চিরাচরিত রীতি মেনে নীলকণ্ঠ পাখি ছেড়ে দেওয়ার রেওয়াজ ছিল বিসর্জনের আগে। এখন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন লাগু হওয়ায় নীলকণ্ঠ পাখি ছাড়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে রাজবাড়ির দুর্গাপুজোতে৷ তবে রীতি অনুযায়ী এখন মাটির তৈরি নীলকণ্ঠ পাখি গঙ্গার জলে ভাসিয়ে দেওয়া হয়৷ প্রচলিত বিশ্বাস থেকেই আজও অব্যাহত এই ধারা। বিশ্বাস ছিল, এই নীলকণ্ঠ পাখি কৈলাসে মহাদেবকে মায়ের রওনা হওয়ার খবর দেয়৷ সেই বিশ্বাসকে পাথেয় করেই আজও বর্তমান সমস্ত সাবেকিয়ানা।


#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : Sumu Sarkar