চিনের সিচুয়ান প্রদেশে ভয়ংকর ভূমিকম্পের জেরে বিপর্যস্ত জনজীবন। এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৬৫। কিন্তু বাড়তে পারে মৃতের সংখ্যা। ইউনাইটেড স্টেটস জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে ৬.৬ মাত্রার এই ভূমিকম্পে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে চিনে। সোমবার রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ এই ভূমিকম্প হয়েছে। ২৪৮ জন আহত হয়েছেন। অন্তত পক্ষে ১২ জনের খোঁজ এখনও মেলেনি। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই ভূমিকম্পের এপিসেন্টার দক্ষিণপূর্বের কাংডিং শহর থেকে ৪৩ কিলোমিটার দূরে। গোটা অঞ্চলটায় ভাঙা বাড়ি দোকানঘর, বিধ্বস্ত জনবসতি, ইট-কাঠ-লোহার স্তূপে ভরা। এর ফলে সেখানে লেভেল থ্রি ইমার্জেন্সি জারি করা হয়। সিচুয়ান ৮ কোটি ৪০ লক্ষ মানুষের বসবাস। এমনিতেই চিনে খরা প্রবণতা চলছে, গত ৬০ বছরের মধ্যে এখানে সব চেয়ে ভয়াবহ তাপপ্রবাহ চলেছে। এমনিতেই এই সব নানা প্রাকৃতিক কারণে বিপর্যস্ত চিন। এর উপর আবার ভূমিকম্পের জেরে নতুন করে সংকট ঘনাল সেখানে। এর আগে ২০০৮ সালে রিখটার স্কেলে ৭.৯ মাত্রার ভূমিকম্প ঘটেছিল। সেবার প্রায় ১ লাখ মানুষ মারা গিয়েছিলেন। গত বছরেও সিচুয়ান প্রদেশে ভূমিকম্প ঘটেছিল। সেবার ৩ জন মারা গিয়েছিলেন, ৬০ জন আহত হয়েছিলেন। সম্প্রতি চিনে খরার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। চিনের ইয়াংসি নদী-উপত্যকা ঘিরে তীব্র দাবদাহ ও তার জেরে এই খরা। এর জেরে অনেক জায়গায় তৈরি হয়েছে দাবানল। চিন সরকারের পক্ষ থেকে এজন্য খাদ্যশস্য রক্ষায় বিশেষ দল মোতায়েন করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে চিনে এই প্রথম জাতীয় খরা সতর্কতাও ঘোষণা করা হয়েছিল। সেখানে 'ইয়েলো অ্যালার্ট' জারি করেছিল চিন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, সাংহাইয়ের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সিচুয়ান এলাকায় ইয়াংসি নদীর উপত্যকাগুলিতে তীব্র দাবদাহ চলছে। চিনের সরকারি কর্মকর্তারা এই পরিস্থিতির জন্য গ্লোবাল ওয়ার্মিং ও তার জেরে বিশ্ব জুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের ঘটনাকেই দায়ী করেছেন। চিনের জিয়াংশি প্রদেশের ইয়াংসি নদীর গুরুত্বপূর্ণ বন্যা অববাহিকাগুলির একটি পোয়াং হ্রদ প্রায় শুকিয়ে গিয়েছে। বছরের এই সময়ে হ্রদটির মোট আয়তন তার আকারের এক চতুর্থাংশে নেমে এসেছে। চংকিংয়ের দক্ষিণ-পশ্চিমের ৩৪টি কাউন্টি এলাকায় ৬৬টি নদী শুকিয়ে গেছে। সাধারণ বর্ষা ঋতুর তুলনায় এবার চংকিংয়ে ৬০ শতাংশ বৃষ্টি কম হয়েছে। অনেক এলাকায় ভূমির আর্দ্রতা বেড়েছে। চংকিংয়ের উত্তরাঞ্চলে বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা উঠেছিল ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
|