ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার সহজ উপায়, জেনে নিন এক নজরে:

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

ডায়াবেটিস এমন একটি শারীরিক অবস্থা যা সারা জীবনের জন্যে বয়ে বেড়াতে হয় এবং সারা বিশ্বে এর কারণে প্রতি বছর ১০ লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। চিকিৎসকরা বলছেন, ডায়াবেটিসের এতো ঝুঁকি থাকার পরেও যতো মানুষ এই রোগে আক্রান্ত তাদের অর্ধেকেরও বেশি এই রোগটি সম্পর্কে সচেতন নয়। আর তাই আর অনিয়ম নয়, চট করে দেখে নিন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে কি কি করা উচিৎ আর কি করা অনুচিত।
প্রথমেই জানতে হবে, ডায়াবেটিস কত রকমের হয়। টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসে অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। তখন রক্তের প্রবাহে গ্লুকোজ জমা হতে শুরু করে। টাইপ টু ডায়াবেটিস। এই ধরনের ডায়াবেটিসে যারা আক্রান্ত তাদের অগ্ন্যাশয়ে যথেষ্ট ইনসুলিন উৎপন্ন হয় না অথবা এই হরমোনটি ঠিক মতো কাজ করে না। তবে বেশিরভাগ মানুষেরা টাইপ ওয়ান এই আক্রান্ত হয়।

ডায়াবেটিস হয়েছে বুঝতে পারবেন যে যে উপসর্গ থাকলে তা হলো:
১)খুব তেষ্টা পাওয়া।২)স্বাভাবিকের চাইতেও ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া। বিশেষ করে রাতের বেলায়।
৩)ক্লান্ত বোধ করা। ৪)কোন কারণ ছাড়াই ওজন কমে যাওয়া। ৫)প্রদাহজনিত রোগে বারবার আক্রান্ত হওয়া। ৬)দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া। ৭)শরীরের কোথাও কেটে গেলে সেটা শুকাতে দেরি হওয়া। 
ডায়াবিটিস হলে মিষ্টি তো বটেই, ভাত–আলুও চলে যায় না-এর খাতায়। লিস্ট এ রাখতে হবে ‘সুপার ফুড’। করোলা–লাউয়ের রস, মেথি ভেজানো জল, কাঁচা হলুদ-সহ, শাক–সব্জি, সরবত, ঠান্ডা পানীয় যথা আমলা–অ্যালোভেরা জুস। মাছ–মাংস বাতিল করতেই হবে। রেড মিটের প্রশ্ন নেই। একটা ডিম তাও খেতে হবে ১০ বার ভেবে। তৈলাক্ত মাছ একদমই না। তবে খাবেন কি?? দেখে নেওয়া যাক: 
খেজুর: খেজুরের মিষ্টি স্বাদের কারণে অনেকেই ভেবে থাকেন, ডায়াবেটিক রোগীদের এটা খাওয়া ঠিক নয়। কিন্তু প্রচুর ফাইবারযুক্ত খেজুর আসলে ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী। ডায়াবেটিস আক্রান্তদের ওষুধ হিসেবে কাজ করে খেজুর। এক সমীক্ষায় জানা গেছে, খেজুর শরীরে অনেক বেশি অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের জোগান দেয়। 
দুধ :  ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ‘ডি’-এর ভালো উৎস দুধ। আর সেজন্য দুধ ডায়াবেটিস আক্রান্তদের জন্য উপকারী খাবার। 
তুলসী :  তুলসীকে বলা হয় ডায়াবেটিস রোগের ইনসুলিন। তুলসীপাতা বিবিধভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। খালি পেটে তুলসীপাতার রস পান করলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যায়। 
বার্লি : বার্লি এটি প্রাচীন একটি শস্য। মানুষেরা প্রথম যেসব শস্যের চাষ শুরু করে বার্লি তার মধ্যে একটি। এটি সহজেই দ্রবণীয় আঁশযুক্ত খাবার। যা লাল চালের চেয়েও ভালো। বার্লি যে রক্তে সুগারের মাত্রা ঠিক রাখে এবং কোলোস্টেরলের মাত্রা কমায়। 

আখরোট: আখরোট সপ্তাহে অন্তত দুই দিন নিয়মিতভাবে আখরোট খেলে টাইপ টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি একেবারে কমে আসবে। 
শিম: ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের শুকনো শিম খাওয়া উচিৎ। শিমে গ্লুকোজ উপাদান কম থাকে। ফলে এটি যে কোনো শ্বেতসার জাতীয় খাবারের চেয়ে রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে অনেক বেশি। শিমে উচ্চহারে আঁশ থাকে। ফলে তা রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি কোলেস্টেরলের মাত্রাও কমিয়ে রাখে। 
এছাড়াও খেতে হবে প্রচুর পরিমাণ শাক সবজি। যেমন:
১। শর্করা সম্বলিত সবজি যেমন- আলু, মিষ্টি কুমড়া, কাঁচা কলা, বরবটি, থোড়, মোচা, বিট, শিম, মাটির নীচের কচু, গাজর, কাঁকরোল, শিমের বিচি, কাঁঠালের বিচি, শালগম, ইঁচড়, ঢেঁড়স, বেগুন, মটর শুঁটি, কচুরমুখী, পাকা টমেটো। 
২। শর্করাবিহীন শাকসবজি যেমন- সব ধরনের শাক, যেমন: লালশাক, পুঁইশাক, পালংশাক, কলমিশাক, ডাঁটাশাক, কচুশাক ইত্যাদি এবং সবজি যেমন  ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, ওলকপি, কাঁচা টমেটো, কাঁচা পেপে, শসা, খিরা, উচ্ছে, করলা, ঝিঙা, চিচিঙা, পটোল, লাউ, চালকুমড়া, সজনা ডাঁটা, ধন্দুল, ক্যাপসিকাম, কাঁচামরিচ, মাশরুম ইত্যাদি।
তাই সচেতন থাকুন, খেয়াল রাখুন, সুস্থ থাকুন। ভয় না পেয়ে সময় মত সঠিক চিকিৎসা এবং সঠিক খাওয়া দাওয়ার মাধ্যমে নিরাময় করুন এই রোগ।

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : Aankhi Banerjee

Related News