বাজার চলতি চেনা ওষুধেই সারবে ফ্যাটি লিভার সহ লিভারের জটিল রোগ!
একটি ওষুধ কোলেস্টেরল কমানোর, যার নাম পেমাফাইব্রেট। উচ্চ কোলেস্টেরলে ভুগছেন যাঁরা, তাঁদের জন্য এই ওষুধটি প্রেসক্রাইব করা হয়। অন্যটি, রক্তচাপ কমানোর ওষুধ টেলমিসারটান। এই ওষুধ দু’টি বাজারেও সহজলভ্য। এ বার এই দুই ওষুধকে নির্দিষ্ট অনুপাতে মিশিয়ে যে ওষুধ তৈরি করা হয়েছে, সেটি ফ্যাটি লিভার বা লিভার সিরোসিসের মতো জটিল লিভারের অসুখ সারাতে কাজে আসবে বলেই দাবি করা হয়েছে। ‘ফার্মাকোলজিক্যাল রিসার্চ’ জার্নালে এই গবেষণার খবর প্রকাশিত হয়েছে।
পেট-কোমরে মেদ জমলে তা বাইরে থেকে বোঝা যায়। কিন্তু শরীরের ভিতরে লিভারে মেদ জমলে তা বোঝার কি আর সাধ্য আছে?
সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গেছে দেশের কমবয়সিরাই সবেচেয়ে বেশি ভুগছেন লিভারের এই রোগে। সমীক্ষা বলছে, দেশের জনসংখ্যায় প্রাপ্তবয়স্কদের অন্তত ৩৮ শতাংশ ‘নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার’-এর সমস্যায় ভুগছেন। শিশুরাও বাদ যাচ্ছে না। ফ্যাটি লিভার চুপিসাড়ে ডালপালা মেলে শেষে লিভারের আরও এক জটিল রোগ তৈরি করছে, যার নাম ‘মেটাবলিক ডিসফাংশন-অ্যাসোসিয়েটেড স্ট্যাটোটিক লিভার ডিজিজ়’ বা এমএএসএলডি। লিভারে যদি ১০ শতাংশের বেশি মেদ জমে যায়, তখন তা ধীরে ধীরে এই রোগের দিকে বাঁক নেয়। এই রোগ ফ্যাটি লিভারেরই একটি ধরন, তবে তার চেয়েও মারাত্মক। সহজে সারে না। চশমা ছাড়াই চোখের আই ড্রপেই স্পষ্ট দেখা যাবে
বার্সেলোনা ইউনিভার্সিটির গবেষক মার্তা অ্যালিগ্রেট তাঁর গবেষণাপত্রে লিখেছেন, ইঁদুরের উপর ওষুধ দু’টির প্রয়োগ করে সাফল্য পাওয়া গিয়েছে। দেখা গিয়েছে, দুই ওষুধের ‘কম্বিনেশন’ ফ্যাটি লিভার নির্মূল করতে সক্ষম। ওষুধ দু’টি ‘পিসিকে১’ নামক একটি প্রোটিনের ভারসাম্য ধরে রাখতে পারে যা লিভারে মেদ জমতে দেয় না। তবে মানুষের শরীরে প্রয়োগের পরে যদি একই রকম সাফল্য পাওয়া যায়, তবেই ওষুধ দু’টির কম্বিনেশন খুব তাড়াতাড়ি বাজারে নিয়ে আসা হবে বলে জানিয়েছেন গবেষকেরা।
বাজার চলতি কিছু ওষুধ ফ্যাটি লিভারের চিকিৎসায় সাহায্য করতে পারে, তবে এই বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। বার্সেলোনার গবেষকদের দাবি অনুযায়ী, দুটি নির্দিষ্ট ওষুধ ফ্যাটি লিভারের চিকিৎসায় কাজ করতে পারে, তবে এই ওষুধগুলি ব্যবহারের জন্য নির্দিষ্ট নিয়মাবলী ও সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। ফ্যাটি লিভারের জন্য সেমাগ্লুটাইড (Semaglutide) এবং স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ (যেমন প্রেডনিসোলন) ব্যবহৃত হতে পারে, তবে এগুলো শুধুমাত্র চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ীই ব্যবহার করতে হবে।