#Pravati Sanbad Digital Desk:
প্রতিবছর
বর্ষার আগমন মানেই সঙ্গে
আসে ডেঙ্গুর আতঙ্ক। বিশেষ করে জুন থেকে
অক্টোবর পর্যন্ত সময়টা ডেঙ্গুর জন্য সবচেয়ে বেশি
আশঙ্কাজনক। এটি একটি ভাইরাসজনিত
রোগ, যা এডিস ইজিপ্টাই
নামক এক বিশেষ প্রজাতির
মশার মাধ্যমে ছড়ায়। এই মশাটি মূলত
দিনে কামড়ায়, এবং এদের প্রজননের
জন্য স্বচ্ছ জমা জলের প্রয়োজন
হয়। তাই ডেঙ্গু প্রতিরোধের
প্রথম ও প্রধান পদক্ষেপ
হল মশার বংশবৃদ্ধি আটকানো।
এই সিজিনে বেশি বেশি আনারস খান; এতে লুকিয়ে আছে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা
প্রতিটি
বাড়ির আশেপাশে কোথাও যেন জল জমে
না থাকে, সেই দিকে সর্বদা
খেয়াল রাখা উচিত। ফুলের
টবের তলায় জল জমে
আছে কিনা, বালতি, হাঁড়ি, ড্রাম, ছাদের জলাধার, ফ্রিজ বা এসির নিচের
ট্রে, পুরনো টায়ার, নারকেলের খোল, কিংবা যেকোনো
খোলা পাত্রে তিন দিনের বেশি
জল থাকলে তা ডেঙ্গুবাহি মশার
প্রজননক্ষেত্র হয়ে ওঠে। তাই
সেগুলি নিয়মিত খালি করে দেওয়া,
ঢেকে রাখা বা পরিষ্কার
করা অত্যন্ত জরুরি। শুধু বাড়ির ভিতরে
নয়, বাড়ির চারপাশও পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। জমে থাকা
জল নিকাশির ব্যবস্থা করতে হবে। পুরসভা
বা স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে নিকাশি ব্যবস্থা
ঠিক রাখাও জরুরি। বর্জ্য পদার্থ বা প্লাস্টিক যেখানে-সেখানে না ফেলে নির্দিষ্ট
জায়গায় ফেলা, এবং সেগুলি নিয়মিত
পরিষ্কার রাখা উচিত। ব্যক্তিগতভাবে
প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি
পারিবারিক ও সামাজিক স্তরেও
সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। দিনের
বেলা মশার কামড় থেকে
বাঁচতে ফুলহাতা জামা, ঢিলেঢালা লম্বা প্যান্ট, মোজা ইত্যাদি পরার
পরামর্শ দেওয়া হয়। ঘুমের সময়,
বিশেষত ছোট বাচ্চাদের জন্য
দিনে মশারি ব্যবহার করা উচিত। এছাড়া
মশা তাড়ানোর ক্রিম, স্প্রে, ধূপ বা লিকুইড
ব্যবহার করাও উপকারী। যদি
কোনো ব্যক্তি ডেঙ্গুর উপসর্গ যেমন হঠাৎ করে
জ্বর, তীব্র মাথাব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা, গা ব্যথা, গাঁটে
ব্যথা, বমি ভাব, ত্বকে
র্যাশ ইত্যাদি অনুভব করেন, তবে দেরি না
করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডেঙ্গুর কোনো নির্দিষ্ট ওষুধ
নেই, তাই শুরুতেই উপসর্গ
চিহ্নিত করে চিকিৎসা শুরু
করা জরুরি। শিশুদের জন্য স্কুলে পাঠানোর
আগে তাদের শরীরে মশা নিরোধক লোশন
বা ক্রিম লাগিয়ে দেওয়া দরকার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিকেও উচিত ক্লাসরুম ও
আশেপাশের অঞ্চল পরিষ্কার ও মশামুক্ত রাখা।
অবশেষে,
ডেঙ্গু রোধে শুধু ব্যক্তি
সচেতনতা নয়, প্রশাসনিক উদ্যোগ,
স্বাস্থ্য দফতরের প্রচার, এবং সক্রিয় নাগরিক
ভূমিকা—এই তিনের সমন্বয়ই পারে একটি সমাজকে
ডেঙ্গুমুক্ত রাখতে। আমরা সকলে যদি
সচেতন হই, নিয়ম মেনে
চলি এবং একে অপরকে
সতর্ক করি, তবে এই
ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই জয় করা সম্ভব।
তাই আসুন, সবাই মিলে ডেঙ্গুর
বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই, নিজের
পরিবার, প্রতিবেশী ও সমাজকে সুরক্ষিত
রাখি।