দলবিরোধী কার্যকলাপের জন্য মেয়ে কবিতাকে মঙ্গলবারই সাসপেন্ড করেছিলেন ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস) প্রধান কে চন্দ্রশেখর রাও। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এবার নিজেই বিআরএসের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করলেন কেসিআর-কন্যা। বুধবার দল ছাড়ার পাশাপাশি তেলঙ্গানা বিধান পরিষদের সদস্যপদ থেকেও ইস্তফা দিয়েছেন তিনি। তারপরই বিস্ফোরক মন্তব্য করেন কবিতা। বলেন, “আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হয়েছে।”
অপমানে লেগেছে, বলে দল ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন সোজা। তবে ততটুকুই নয়, কে কবিতা দল ছেড়ে যে মন্তব্য করেছেন, তাতে তেলেঙ্গানার রাজনীতিতে যে তুঙ্গে গৃহবিবাদ তা স্পষ্ট। কবিতা দল ছাড়ার আগে ভাইকে বলে গেলেন, 'ওকে বিশ্বাস কর না', বাবাকে বলে গেলেন, তাঁকে বিশ্বাস কর না।
সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, তেলঙ্গানার নেত্রী কে কবিতা দল থেকে সাসপেন্ড হওয়ার পরেই, বুধবার দলত্যাগ করেন। তখনই, কবিতা তিনি তাঁর ভাই কেটি রামা রাওকে তুতো ভাই টি হরিশ রাও এবং জে সন্তোষ রাওয়ের বিরুদ্ধে সতর্ক করেন এবং বাবা কে চন্দ্রশেখর রাওকে মানুষের আসল উদ্দেশ্য সম্পর্কে সতর্ক থাকার বার্তা দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, কবিতার বক্তব্য তুতো ভাইয়েদের বিপুল দুর্নীতির কারণেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তদন্ত চালাচ্ছে চন্দ্রশেখরের বিরুদ্ধে। যদিও কবিতা একথা আগেই বলেছেন জনসমক্ষে। বেশকিছু স্বার্থন্বেষী বিআরএস নেতা কেসিআর-কে মেয়েকে সাসপেন্ড করার জন্য চাপ দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ কবিতার। ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি
দলবিরোধী কাজের জন্য মেয়ে কে কবিতাকে ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস) থেকে সাসপেন্ড করেছিলেন দলের প্রধান তথা তেলঙ্গানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও। বিআরএস-এর তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, কবিতার সাম্প্রতিক মন্তব্য এবং কার্যকলাপ দলীয় নীতি-নীতির বিরুদ্ধে, তাই চন্দ্রশেখর রাও এই কঠোর পদক্ষেপ করেছেন। ফের সাসপেন্ড বিরোধী দলনেতা
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বিআরএস-এর মধ্যে টালমাটাল পরিস্থিতি চলছে। গত সোমবার কে কবিতা দলেরই নেতাদের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন। তিনি খোলাখুলি বলেন যে, দলের কিছু নেতার কারণেই তাঁর বাবা কেসিআরের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। কবিতা এজন্য প্রবীণ নেতা তথা তাঁর দুই খুড়তুতো দাদা টি হরিশ রাও এবং প্রাক্তন এমপি মেঘা কৃষ্ণ রেড্ডিকে কাঠগড়ায় তোলেন। এঁদের দু'জনের বিরুদ্ধে সরাসরি বলেন, 'এঁরা সকলে মিলে বাবার গায়ে দুর্নীতির লেবেল সেঁটে দেওয়ার জঘন্য ষড়যন্ত্রের খেলা খেলছেন।'
গত ২২শে আগস্ট, বিদেশে থাকাকালীন কবিতাকে হঠাৎ করেই তেলেঙ্গানা বোগ্গু ঘানি কর্মিকা সংঘম-এর সম্মানীয় সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এ জন্য তিনি দলের অভ্যন্তরীণ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছিলেন। দাবি করেন যে, তাঁর অপসারণ রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তিনি বিআরএসের রজতজয়ন্তী সভার পরে তাঁর বাবার কাছে লেখা একটি ফাঁস হওয়া চিঠির দিকে ইঙ্গিত করে নিজের বিরুদ্ধে বৈরিতার সূত্রপাত করেন। ভারত-রাশিয়া-চিন তিন অক্ষশক্তি
তারপর থেকেই নজরে ছিল, সে রাজ্যে কী হতে চলেছে সেদিকে। দেখা যায় মঙ্গলবার মেয়েকে দলবিরোধী মন্তব্যের জন্য সাসপেন্ড করেন দলীয় প্রধান। তারপরেই বোমা ফাটিয়েছেন কবিতা। একদিকে যেমন ফের নিশানা তুতো ভাইয়েদের, তেমনই আবার রেবন্ত রেড্ডিকেও নিশানা করেছেন কেসিআর-কন্যা। তাঁর অভিযোগ রেভন্তও চেষ্টা চালিয়েছেন বিআরএস ভাঙনে।
বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে দল এবং বিধান পরিষদের সদস্যপদ ছাড়ার ঘোষণা করেন কবিতা। তিনি বলেন, “কেসিআর আমার অনুপ্রেরণা। তেলেঙ্গানায় দলিত এবং পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মানুষদের প্রতি তিনি ন্যায়বিচার করেছেন। কিন্তু দলের অন্দরেই আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হয়েছে। দলীয় কার্যালয় থেকেই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার চালানো হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, এই সব কিছুর মূলে রয়েছেন তাঁর তুতো দাদা হরিশ রাও। তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডির সঙ্গে মিলে তিনি চক্রান্তের বীজ বপন করেছেন। পাশাপাশি, কবিতা আঙুল তুলেছেন তাঁর আরও এক তুতো ভাই সন্তোষের দিকেও। কেসিআর-কন্যার স্পষ্ট বক্তব্য, তাঁর দুই তুতো ভাই নিজেদের স্বার্থে পরিবার ভেঙেছেন।”