রাজ্যের শিল্পায়নের পথ আরও মজবুত করতে এবার একাধিক বড় প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধনে নামছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ২১ এপ্রিল পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতে জিন্দাল গোষ্ঠীর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের শিলান্যাস এবং ২২ এপ্রিল গোয়ালতোড়ে সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন করবেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, “শিল্পের নতুন গন্তব্য আজ বাংলা।”
প্রসঙ্গত, শালবনির প্রকল্প ঘিরে তৈরি হয়েছে বিশাল প্রত্যাশা। ৮০০ মেগাওয়াট করে দুটি ইউনিটে তৈরি হতে চলেছে এই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, যেখানে প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ করছে জিন্দাল গোষ্ঠী। এই বিনিয়োগ রাজ্যে শিল্পের পরিকাঠামোকে যেমন শক্তিশালী করবে, তেমনি বাড়াবে কর্মসংস্থানের সুযোগ। নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “জীবনের মান বাড়ছে, মানুষ এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন। আগে এত মানুষ এসি ব্যবহার করতেন না, এখন প্রায় সবাই করেন। বিদ্যুতের চাহিদা ১১ শতাংশ বেড়েছে।” তিনি আরও জানান, “দেউচা-পাঁচামি কয়লাখনি প্রকল্প চালু হলে আগামী ১০০ বছরে বিদ্যুতের জোগান নিয়ে আর চিন্তা থাকবে না। দামও কমবে।” তিনি সাফ জানান, “আমরা বিদ্যুতের দাম বাড়াই না, সেটা সিইএসসির বিষয়। একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী ২২ এপ্রিল গোয়ালতোড়ে ৭৫৭ কোটি টাকার সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। এই প্রকল্পে ৮০ শতাংশ বিনিয়োগ করেছে জার্মানির একটি সংস্থা, বাকি অংশ রাজ্য সরকারের। পরিবেশবান্ধব শক্তি উৎপাদনের পথে এই প্রকল্প বাংলাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলেই মনে করছে প্রশাসন।
সারা রাজ্যজুড়ে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া, দক্ষিণবঙ্গে তীব্র গরমে স্বস্তি, উত্তরবঙ্গে বৃষ্টির দাপট
উলেখ্য, শুধু বিদ্যুৎ প্রকল্পই নয়, ওই দিন রাজ্যের আরও একাধিক পরিকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। ২৫টি নতুন দমকল কেন্দ্র চালু হচ্ছে, যার মধ্যে ১৫টি দিঘায় যাবে জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের আগে, এবং বাকি ১০টি থাকবে কলকাতায়।শিল্প ও কৃষিকে একসঙ্গে নিয়ে এগোনোর যে বার্তা ২০১১ সালে মুখ্যমন্ত্রী দিয়েছিলেন, আজ তার বাস্তব রূপ দেখা যাচ্ছে। সাগরদিঘি, দুর্গাপুর, বক্রেশ্বর এবং সাঁওতালডিহি— সর্বত্রই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ এগোচ্ছে। রাজ্য সরকারের দাবি, এই প্রকল্পগুলি কেবলমাত্র খাতায়-কলমে বিনিয়োগ নয়, বাস্তবে তা মানুষের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। কর্মসংস্থান বাড়ছে, আয় বাড়ছে, এবং সবচেয়ে বড় কথা, এখন আর রাজ্যে লোডশেডিং হচ্ছে না।এই উদ্যোগগুলি বাংলার উন্নয়নচিত্রে একটি বড় মাইলস্টোন হয়ে উঠতে চলেছে— একথা নির্দ্বিধায় বলা যায়।