Flash News
    No Flash News Today..!!
Monday, November 10, 2025

হার্ভার্ডের চিকিৎসকের সতর্কবার্তা: ক্যান্সারের সম্ভাবনা বাড়াতে পারে এই ৬টি খাবার

banner

journalist Name : Ananya Dey

##Pravati Sangbad Digital Desk:

ক্যান্সার—এই একটি শব্দ শুনলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে মানুষ। চিকিৎসা বিজ্ঞানের অভূতপূর্ব অগ্রগতির মধ্যেও ক্যান্সার আজও এক ভয়ঙ্কর ও প্রাণঘাতী রোগ। নানা গবেষণায় উঠে এসেছে, আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস ক্যান্সারের সম্ভাবনাকে বাড়াতে পারে কিংবা কমাতে পারে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রখ্যাত চিকিৎসক সম্প্রতি এমন ৬টি খাবারের তালিকা প্রকাশ করেছেন, যেগুলি নিয়মিত খাওয়া ক্যান্সার ঝুঁকিকে উল্লেখযোগ্য হারে বাড়িয়ে দিতে পারে।
প্রসেসড মাংস : সসেজ, হট ডগ, সালামি কিংবা প্যাকেটজাত মাংস—এইসব খাবার দীর্ঘমেয়াদী সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয় নানান রাসায়নিক উপাদান, যেমন নাইট্রেট ও নাইট্রাইট।

ক্যান্সার থেকে মুক্তি

এই উপাদানগুলি শরীরে গিয়ে কার্সিনোজেনিক যৌগ তৈরি করে, যা কোলন ক্যান্সারের প্রধান কারণ হতে পারে। চিকিৎসকের মন্তব্য:“প্রসেসড মিটের অতিরিক্ত গ্রহণ ধীরে ধীরে শরীরের কোষে পরিবর্তন আনে, এবং সেটাই ক্যান্সারে রূপ নিতে পারে।” – ড. উইলিয়াম লি, হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল চিনি ও মিষ্টিজাত খাবার। অতিরিক্ত চিনি শুধু ডায়াবেটিস নয়, ক্যান্সার বৃদ্ধির জন্যও দায়ী হতে পারে। বিশেষ করে সফট ড্রিংকস, ক্যান্ডি, কেক-পেস্ট্রির মতো রিফাইনড সুগারযুক্ত খাবার শরীরে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স তৈরি করে। এই অবস্থায় শরীর বেশি ইনসুলিন তৈরি করে, যা টিউমার বৃদ্ধিতে সহায়ক। ক্যান্সার কোষ সুগার থেকে দ্রুত শক্তি গ্রহণ করে বেড়ে ওঠে—তাই চিনি সরাসরি সেই প্রক্রিয়াকে শক্তি জোগায়।


ভাজার সময় ব্যবহৃত পুরনো তেলঃ রেস্তোরাঁ, ফাস্ট ফুড দোকান কিংবা বাড়িতে বহুবার এক তেল ব্যবহার করে খাবার ভাজা হয়। বারবার গরম করা তেলে অ্যাক্রিলামাইড নামে এক ধরনের রাসায়নিক তৈরি হয়, যা কার্সিনোজেনিক। এই রাসায়নিকটি দেহকোষের ডিএনএ-কে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, যার ফলে ক্যান্সার হতে পারে। গরু, খাসি কিংবা শূকরের মাংস, যেগুলি লাল রঙের—এই মাংস নিয়মিত খাওয়া প্রস্টেট, কোলন ও প্যানক্রিয়াস ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। উচ্চ তাপে রান্না করা রেড মিটে হেটারোসাইক্লিক অ্যামাইনস (HCAs) ও পলিসাইক্লিক অ্যারোমেটিক হাইড্রোকার্বনস (PAHs) তৈরি হয়। WHO ২০১৫ সালে রেড মিটকে “প্রবল সম্ভাব্য কার্সিনোজেন” হিসেবে ঘোষণা করে। অতিরিক্ত অ্যালকোহল ,মদ্যপান শুধু লিভার নয়, বরং মুখ, গলা, স্তন ও অন্ত্রের ক্যান্সারের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়ায়। অ্যালকোহল শরীরে গিয়ে অ্যাসিটালডিহাইড তৈরি করে, যা কোষের ডিএনএ ভেঙে দিতে পারে। হার্ভার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ:“সপ্তাহে একদিনের বেশি মদ্যপান না করাই ভালো, তাও সীমিত পরিমাণে।” আল্ট্রা-প্রসেসড ফুড, চিপস, প্যাকেট স্ন্যাকস, ইনস্ট্যান্ট নুডলস, ফ্রোজেন ফুড—এইসব খাবারে থাকে কৃত্রিম রং, সংরক্ষণকারী, অতিরিক্ত সোডিয়াম ও ফ্যাট। এগুলি শরীরের হরমোন ব্যালান্সে বিঘ্ন ঘটায়, এবং দীর্ঘমেয়াদে ক্যান্সার ঝুঁকি বাড়ায়।

কলা থেকে কী ক্যান্সার হতে পারে

২০২৩ সালের এক ইউরোপিয়ান স্টাডিতে দেখা গেছে, আল্ট্রা-প্রসেসড ফুড নিয়মিত খাওয়া মহিলাদের স্তন ক্যান্সারের আশঙ্কা ৩০%-৪০% পর্যন্ত বাড়াতে পারে।
তাহলে যে নিয়মগুলি মেনে চললে এই রোগের হাত থেকে আমরা মুক্তি পেতে পারি সেগুলি হল - ফ্রেশ হোমমেড খাবার খাওয়া, সবজি ও ফলমূলের উপর জোর দেওয়া, প্যাকেটজাত খাবার কমিয়ে দেওয়া, চিনি ও লবণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা, প্রতিদিন কিছু সময় ব্যায়াম ও পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা
খাদ্য আমাদের শরীরের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে। তাই প্রতিদিন প্লেটে কী রাখছি, সেটাই হতে পারে বাঁচার চাবিকাঠি কিংবা বিপদের ইঙ্গিত। হার্ভার্ড চিকিৎসকের মতো বিশেষজ্ঞরা বারবার সচেতন করে দিচ্ছেন—“স্বাদ নয়, এবার সময় এসেছে স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দেওয়ার।”সতর্ক থাকুন, সচেতন থাকুন। ক্যান্সার প্রতিরোধ আপনার হাতেই।

Related News