সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী সোমবার দিল্লি সফরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সফরের মূল উদ্দেশ্য, রাজ্যের বকেয়া অর্থ আদায়ের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা। ইতোমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে সময় চেয়েছে নবান্ন, এবং জানা যাচ্ছে, মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর আগেও একাধিকবার দিল্লি সফরে গিয়েছেন রাজ্যের অর্থনৈতিক দাবিদাওয়া নিয়ে। কেন্দ্রের কাছ থেকে একাধিক প্রতিশ্রুতি মিললেও বাস্তবে তার সাফল্য খুবই সীমিত। তবুও গণতান্ত্রিক রীতিনীতি মেনে আবারও রাজ্যের দাবিগুলি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সামনে দাঁড়াতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্ন সূত্রে খবর, বর্তমানে রাজ্যের বকেয়া প্রায় ১ লক্ষ ৭৫ হাজার কোটি টাকা। এই অর্থের মধ্যে রয়েছে একশো দিনের কাজ (MGNREGA), ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্প এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত টাকা। কেন্দ্রের কাছে একাধিকবার চিঠি দেওয়ার পরেও অর্থ ছাড় হয়নি বলে অভিযোগ। বিশেষ করে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ও হিসেবপত্র চাওয়া হলেও রাজ্যের পক্ষ থেকে সব তথ্য দেওয়া হয়েছে, তবুও অর্থ ছাড় বন্ধ রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের। এই অর্থ ছাড় বন্ধ রাখার পেছনে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে, এমনটাই মনে করছে রাজ্যের শাসকদল। তাঁদের দাবি, একশো দিনের কাজ ও আবাস যোজনার প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। সেই দাবিকে সামনে রেখেই কেন্দ্র অর্থ ছাড় করেনি।
আরসিবি’র বিজয় মিছিলে ভয়াবহ দুর্ঘটনা: পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু অন্তত সাতজনের, আহত বহু
উলেখ্য, এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় অর্থ সহায়তা না থাকলেও রাজ্যের প্রকল্পগুলি বন্ধ করেননি মুখ্যমন্ত্রী। বরং নিজস্ব কোষাগার থেকে অর্থ ব্যয় করে প্রকল্পগুলি চালু রেখেছেন। তাঁর নেতৃত্বেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এই অর্থনৈতিক বঞ্চনার প্রতিবাদে তৃণমূল সাংসদরাও দিল্লিতে দরবার করেছেন, কিন্তু এখনো কোনো কার্যকর সাড়া মেলেনি। এই সফরে মুখ্যমন্ত্রী তৃণমূলের দিল্লি শাখার একটি নতুন পার্টি অফিস উদ্বোধন করবেন, এবং দিল্লিতে থাকা সাংসদদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন। তবে সফরের বিস্তারিত কর্মসূচি নবান্ন পরে ঘোষণা করবে। রাজ্য ও কেন্দ্রের টানাপোড়েনের এই জটিল পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর দিল্লি সফর রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক উভয় দিক থেকেই অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। রাজ্যের প্রাপ্য অর্থ আদায় হবে কি না, তা ভবিষ্যতের বিষয় হলেও, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সফর নতুন করে কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের ভারসাম্য নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।