পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার এক মাসেরও বেশি সময় পরে কাশ্মীর সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সূত্রের খবর অনুযায়ী, চলতি সপ্তাহের শুক্রবার, অর্থাৎ ৬ জুন, শ্রীনগর-কাটরা রেলপথের উদ্বোধন করতে কাশ্মীর পৌঁছাতে পারেন তিনি। এই রেলপথের প্রথম ট্রেন হবে বিশেষ বন্দে ভারত এক্সপ্রেস, যা শ্রীনগর থেকে কাটরা পর্যন্ত যাত্রী পরিবহণ করবে।
প্রসঙ্গত, এই রেলপথের উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল গত ১৯ এপ্রিল। কিন্তু প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে সেই সময় সফর বাতিল করতে বাধ্য হন প্রধানমন্ত্রী। এর ঠিক তিনদিন পরেই পহেলগাঁও এলাকায় ঘটে যায় মর্মান্তিক জঙ্গি হামলা, যেখানে পর্যটকদের নিশানা করে হামলা চালায় সন্ত্রাসবাদীরা। এই হামলার আগে একটি গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা রিপোর্ট সামনে আসে। তাতে দাবি করা হয়, শ্রীনগরের পার্শ্ববর্তী জবরবান রেঞ্জের তলহাটি এলাকায় হোটেলে আশ্রয় নেওয়া পর্যটকদের উপর হামলার আশঙ্কা রয়েছে। সেই অনুযায়ী নিরাপত্তা জোরদার করা হলেও কোনও সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত না করতে পারায় ২২ এপ্রিল তল্লাশি অভিযান বন্ধ করা হয়। ঠিক ওই দিনেই ঘটে পহেলগাঁও হামলা, যা গোটা দেশকে নাড়িয়ে দেয়।
উলেখ্য, এই ঘটনার পর বিরোধী দলগুলি কেন্দ্রীয় সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা শুরু করে। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, “কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার বিষয়ে আগাম গোয়েন্দা রিপোর্ট ছিল। সেই তথ্য পেয়েই প্রধানমন্ত্রী নিজের সফর বাতিল করেছিলেন। তাহলে প্রশ্ন ওঠে—জানার পরেও কেন যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি?” তবে বর্তমান পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে। সেই কারণেই প্রধানমন্ত্রী এবার কাশ্মীর সফরে যাচ্ছেন বলে মনে করা হচ্ছে। উদ্বোধনী সফরের জন্য ইতিমধ্যেই রেল ও নিরাপত্তা বিভাগের আধিকারিকরা প্রস্তুতি শুরু করেছেন। শ্রীনগর-কাটরা রেলপথের উদ্বোধনের মাধ্যমে কাশ্মীর উপত্যকা দেশের বাকি অংশের সঙ্গে রেলপথে যুক্ত হতে চলেছে। এই প্রকল্প শুধু পরিবহণ নয়, পর্যটন ও অর্থনৈতিক দিক থেকেও কাশ্মীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালু হলে কাশ্মীরের সঙ্গে দেশের অন্যান্য প্রান্তের সংযোগ আরও মজবুত হবে।