বাংলাদেশের রাজনীতির অন্যতম আলোচিত বিষয় এখন ‘ভুয়ো ভোটার’। একই এপিক নম্বরে একাধিক ভোটার কার্ডের বিষয়টি নিয়ে দেশে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। রাজ্যের শাসকদল এবং বিরোধী দলের মধ্যে তীব্র বাগযুদ্ধ চলছে, এবং এই বিষয়টি নিয়ে সংসদে উত্তাল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি, এমন কিছু অভিযোগ উঠে এসেছে যে একক একাধিক ভোটার কার্ড রয়েছে, যা নির্বাচন ব্যবস্থায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে। রাজ্যের শাসকদল, তৃণমূল কংগ্রেস, এই বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাচ্ছে, অভিযোগ করা হচ্ছে যে বিজেপি সরকার এই সমস্যাকে পরিকল্পিতভাবে সৃষ্টি করছে। তাদের দাবি, বিজেপি যেসব রাজ্যে ক্ষমতায় নেই, সেখানে ভোটের প্রভাব ফেলতে এই ভুয়ো ভোটার কাণ্ডের সৃষ্টি করা হচ্ছে। তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় মন্তব্য করেছেন, “এটা সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”তবে এই বিষয়ে পাল্টা সুরে, বিজেপি বিরোধী দলগুলো দাবি করেছে, নির্বাচন কমিশনের যে বিবৃতি এসেছে তা যথেষ্ট নয় এবং তারা দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ চাইছেন। এই উত্তাল পরিস্থিতিতে, রাজ্যসভায় ওয়াকআউট করলেন বিজেডি, টিএমসি ও অন্যান্য বিরোধী দলগুলো। গেট আউট হওয়া সংসদে পরিস্থিতি আরও গরম হয়ে ওঠে।
প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশন একটি বিবৃতির মাধ্যমে জানিয়েছে যে ‘ভুয়ো ভোটার’ একটি পুরনো সমস্যা, যা দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে। এতে তারা জানিয়েছে, একই এপিক নম্বরে একাধিক ভোটার কার্ড তৈরি হওয়ার কারণ মূলত ইলেক্ট্রোলার রেজিস্ট্রেশন অফিসারের ভুল এবং কিছু ডুপ্লিকেট এপিক নম্বরে ভোটার কার্ড তৈরি হওয়ার কারণে এমন সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। তবে নির্বাচন কমিশন পরিষ্কার করে জানিয়েছে, “যদিও একই এপিক নম্বরে একাধিক ভোটার কার্ড তৈরি হয়েছে, তবুও ভোটাররা শুধুমাত্র তাদের নির্দিষ্ট বুথেই ভোট দিতে পারবেন, তাই ভোট কারচুপির কোন সম্ভাবনা নেই।”নির্বাচন কমিশনের এই বিবৃতির পরেই রাজনীতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিরোধী দলগুলো দাবি করেছে, নির্বাচন কমিশন এই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছে না এবং দ্রুত সমস্যা সমাধানের জন্য কঠোর পদক্ষেপ নেয়া উচিত। তৃণমূল ও বিজেপি, দুই পক্ষই এই বিষয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। তৃণমূলের মতে, এটি ভারতের গণতন্ত্রের জন্য একটি বড় ধরনের হুমকি এবং বিজেপি দেশের গণতন্ত্রকে নষ্ট করার চেষ্টা করছে।
বেসরকারি স্কুলে অতিরিক্ত ফি লাগাম টানতে বিধানসভায় আসছে নতুন বিল
উলেখ্য, এই পরিস্থিতি দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য কতটা উদ্বেগজনক হতে পারে, তা নিয়ে বিশ্লেষকরা বিভিন্ন মতামত প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, একটি সুসংগঠিত ও স্বচ্ছ নির্বাচন ব্যবস্থার জন্য প্রয়োজন নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় যে কোনও ধরনের ত্রুটি বা কারচুপির যেকোনো ইঙ্গিতের তীব্র তদন্ত। এদিকে, নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, আগামী তিন মাসের মধ্যে তারা এই সমস্যার সমাধান করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং ভোটারদের জন্য আরও বেশি সচেতনতা কার্যক্রম চালাবে। তবে রাজনৈতিক মহলে, বিশেষত বিরোধী দলগুলোর মধ্যে, বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ বিরাজমান রয়েছে।