মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আলিপুরের ধনধান্য অডিটোরিয়ামে চিকিৎসকদের সঙ্গে এক মেগা বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ নানা ঘোষণা করেছেন। এই বৈঠকে তিনি রাজ্যের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করার নানা পরিকল্পনা ও উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন। একনজরে দেখে নিন, কী কী বক্তব্য রেখেছেন তিনি:
১. আরজি করের নির্যাতিতার পরিবারকে সমবেদনা – তিনি আরজি করের নির্যাতিতার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন এবং উল্লেখ করেছেন, "অপরাজিতা বিল" এখনও পাশ না হওয়া পর্যন্ত তা কার্যকর করা হবে।
২. ভাইয়ের দায়িত্ব – তিনি জানান, এই ধরনের ঘটনা যাতে পুনরায় না ঘটে, সে জন্য ভাইদের দায়িত্ব নিতে হবে।
৩. চিকিৎসকদের কুর্নিশ – চিকিৎসকদের কোন রাজনৈতিক রং নেই, তারা শুধু সেবা প্রদান করেন। তিনি চিকিৎসক ও তাদের পরিবারের প্রতি কুর্নিশ জানিয়ে বলেন, "আপনারা সেবায় অগ্রণী।"
৪. বাম আমলে স্বাস্থ্যবিভাগের অবহেলা – বাম আমলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অবহেলিত ছিল বলে উল্লেখ করেন, এবং জানান, "এখন স্বাস্থ্যবিভাগে উন্নয়ন হয়েছে।"
৫. বহুল আলোচিত হাসপাতাল সংস্কার** – হাসপাতালের রং পরিবর্তন, প্রবেশপথ বড় করা এবং অন্যান্য উন্নয়ন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন।
৬. রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি – টেলি মেডিসিনের মাধ্যমে গড়ে ৭৫ হাজার রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।
৭. স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প – ৯ কোটি মানুষ স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন।
৮. কোভিডকালীন উদ্যোগ – কোভিডের সময় সরকার ও বেসরকারি হাসপাতালগুলো একসঙ্গে কাজ করেছে, তিনি তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।
৯. চিকিৎসক এবং প্যারামেডিক্যাল স্টাফ নিয়োগ – ১৪ হাজার সরকারি ডাক্তার, ২৫ হাজার প্যারামেডিক্যাল স্টাফ এবং ২৬ হাজার নার্সিং সিট বৃদ্ধি করা হয়েছে।
১০. বিশ্বমানের চিকিৎসা – বাংলার চিকিৎসকরা বিদেশে খ্যাতি অর্জন করেছে এবং রাজ্য স্বাস্থ্যসেবার পরিকাঠামো আন্তর্জাতিক মানের বলে তিনি দাবি করেন।
১১. বেতন বৃদ্ধি এবং হস্টেলের ব্যবস্থা – চিকিৎসকদের বেতন বাড়ানো হয়েছে এবং নারী চিকিৎসকদের জন্য বিশেষ হস্টেলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
১২. রাজস্ব সংকট – কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে রাজ্যের অর্থ সাহায্য কমে আসছে, তবে রাজ্য তা সামাল দিতে কাজ করছে।
১৩. মর্যাদা রক্ষা – সকলের মর্যাদা রক্ষা করার প্রতি তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
১৪. সিমপ্যাথি এবং সমর্থন – তিনি জানিয়েছেন, সব দাবি পূরণ সম্ভব না হলেও, তার প্রতি সিমপ্যাথি রয়েছে।
১৫. নিয়োগের সমস্যার সমাধান – নিয়োগের প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টিকারী মামলা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে।
১৬. ভিআইপি সংস্কৃতি – ভিআইপি চলাচলে মানুষকে আটকানো না হওয়া নিশ্চিত করার কথা উল্লেখ করেছেন।
১৭. হাসপাতালে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা – হাসপাতালগুলিতে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার জন্য ২ কোটি টাকা বরাদ্দ করার নির্দেশ দেন।
১৮.ভাতার বৃদ্ধি – ইন্টার্ন, হাউস স্টাফ, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনিদের ভাতা ১০ হাজার টাকা বাড়ানোর ঘোষণা।
দক্ষিণবঙ্গে শীতল আমেজ, তবে মার্চে শুরু হবে গরমের জ্বালা! জানিয়ে দিল হাওয়া অফিস
১৯. সরকারি সেবা – সরকারি হাসপাতালে ৮ ঘণ্টা পরিষেবা দেওয়ার পর প্রাইভেট সেবা গ্রহণের পরামর্শ দেন।
২০. নিগলিজেন্সের তদন্ত – কিছু ঘটনার পর তদন্ত চলছে, তবে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাবে না।
২১. রেসিডেন্ট ডাক্তারদের বেতন বৃদ্ধি – সর্বস্তরের রেসিডেন্ট ডাক্তারদের বেতন ১৫ হাজার টাকা বাড়ানো হয়েছে।
২২. চিকিৎসকদের সম্মান এবং ভবিষ্যত – এক বছরে আবারও এই ধরনের বৈঠক আয়োজনের আশা ব্যক্ত করেন, যাতে আরও উন্নত যোগাযোগ সম্ভব হয়।
২৩. চিকিৎসকদের দায়িত্ব – তিনি জানান, চিকিৎসকরা রোগীদের সেবা করেন এবং সরকার তাদের পাশে দাঁড়ায়।
২৪. রাজ্য হাসপাতালের গৌরব – সরকারি হাসপাতালে তুলনা সঠিক নয় বলে মন্তব্য করেছেন, তিনি জানান, "এটা অনেক অপমানজনক।"
২৫. শিক্ষা এবং সতর্কতা – একটি ছোট শিশুর আচরণে তিনি তার পরিবার ও সমাজের সাবধানতার কথা তুলে ধরেন।
এই বৈঠকটি শুধু চিকিৎসকদের জন্য নয়, বরং স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নয়নে রাজ্য সরকারের ধারাবাহিক প্রচেষ্টার প্রতিফলন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই উদ্যোগ রাজ্যের চিকিৎসা সেবাকে আরও উন্নত করার লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।