স্কুলে স্বেচ্ছায় গিয়েও পড়াচ্ছেন তাঁরা, তবুও সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর এক অনিশ্চয়তা যেন ঘিরে ধরেছে রাজ্যের চাকরিচ্যুত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। বেতনের প্রশ্নে অনিশ্চয়তা, ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা, আর তারই মাঝে এক আশ্বাসের আলো দেখিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আইনগত বাধ্যবাধকতা থাকলেও তিনি সমস্যার সমাধান খুঁজে বার করবেন—এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সম্প্রতি একটি চাকরিহারাদের সভায়।
প্রসঙ্গত, এই আশ্বাসের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই একটি ইতিবাচক বার্তা পৌঁছল শিক্ষা মহলে। বুধবার বিকেলে দেখা যায়, শিক্ষা দপ্তরের বেতন সংক্রান্ত নির্দিষ্ট পোর্টালে চাকরিহারাদের নাম এখনও আগের মতোই তালিকাভুক্ত রয়েছে। অর্থাৎ, এখনও পর্যন্ত তাঁদের বেতন বন্ধ হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর 'ভরসা রাখুন' বার্তার প্রতিফলন যেন ঘটল এই ডিজিটাল ইঙ্গিতে। এই বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু স্পষ্ট জানান, “শিক্ষকদের মাইনের পোর্টাল আপডেট করা হচ্ছে। কোনও শিক্ষককে বাদ দেওয়া হয়নি। কোথাও বেতন বন্ধ করার কথা বলা হয়নি।” তিনি আরও জানান, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার ব্যাখ্যা চেয়েছে এবং প্রশাসন পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। তবে বুধবার সকাল থেকেই কলকাতা ও জেলার বিভিন্ন প্রান্তে চাকরিহারাদের একাংশ প্রতিবাদে সামিল হন। কোথাও কোথাও পুলিশি বাধা পেরিয়ে ধস্তাধস্তি, এমনকি সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুরের চেষ্টাও হয়। প্রশাসনের মতে, এই আন্দোলনের পিছনে রাজনৈতিক প্ররোচনার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রী নিজে নবান্ন থেকে পরিস্থিতির উপর নজর রাখেন।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রেপো রেট ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে ৬ শতাংশে, স্বস্তি পাবেন ঋণগ্রহীতারা
উলেখ্য, রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ শিক্ষক সমাজকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী নিজে আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা চেষ্টা করছি তাঁদের পাশে থাকার। কিন্তু অশান্তি কোনও সমাধান নয়। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া চলবে না।” একই বার্তা দেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও। তাঁর মতে, “সরকার সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তা সত্ত্বেও এখনই প্রতিবাদ কেন? একটু ধৈর্য ধরুন।”শনিবার ফের মুখোমুখি বৈঠকে বসতে চলেছেন ব্রাত্য বসু, যেখানে উপস্থিত থাকবেন এসএসসি চেয়ারম্যান, শিক্ষা দপ্তরের সচিব সহ উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। এই বৈঠক থেকেই চাকরিহারাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত উঠে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। সরকারের অবস্থান স্পষ্ট—আইনের গণ্ডির মধ্যে থেকেই সমস্যার সমাধান খোঁজা হবে। তবে আন্দোলন ও আলোচনার পথ একসঙ্গে চলতে পারে না। আপাতত সরকারের উপর আস্থা রেখেই সমাধানের দিকে তাকিয়ে চাকরিহার শিক্ষক-শিক্ষিকারা।