পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘভাতা (ডিএ) নিয়ে চলমান মামলায় বড় ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার। ভারতের সর্বোচ্চ আদালত বৃহস্পতিবার নির্দেশ দিয়েছে, আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে রাজ্য সরকারকে কর্মচারীদের ন্যায্য পাওনা হিসেবে ২৫ শতাংশ ডিএ বকেয়া মিটিয়ে দিতে হবে। প্রথমে সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে রাজ্য সরকারকে ৫০% ডিএ মেটানোর নির্দেশ দেওয়া হলেও, রাজ্যের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি সেই নির্দেশে আপত্তি জানান। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বিচারপতিরা শেষমেশ আপাতত ২৫% বকেয়া ডিএ প্রদানের নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গত, শুনানির সময় বিচারপতি সঞ্জয় কারোল বলেন, "এরা আপনাদের কর্মী। ফলে, এই অর্থ দেওয়ায় কোনও অসুবিধার কারণ থাকা উচিত নয়।" শীর্ষ আদালত স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়, রাজ্য সরকার আর সময় নিতে পারবে না। নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেই কর্মীদের ২৫% বকেয়া মহার্ঘভাতা দিতে হবে। তবে, পুরো বকেয়া ডিএ মেটানো হবে কি না, সে সিদ্ধান্ত নির্ভর করবে মামলার পরবর্তী শুনানির উপর। ডিএ মামলা বর্তমানে পঞ্চম বেতন কমিশন সংক্রান্ত বিষয়ের ওপর চলছে, যার সূচনা হয় ২০১৬ সাল থেকে। প্রথমে মামলাটি স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল (স্যাট), পরে কলকাতা হাই কোর্ট হয়ে পৌঁছায় সুপ্রিম কোর্টে।প্রসঙ্গত, স্যাটে রাজ্য সরকার জয় পেলেও পরবর্তীতে প্রতিটি ধাপে কর্মচারীরা জয়লাভ করেন।
ভারত-পাকিস্তান শান্তি আলোচনা: সংঘর্ষবিরতির পরে ‘শান্তিবার্তা’ ও কাশ্মীর ইস্যুতে নতুন টানাপোড়েন
উলেখ্য, ২০২২ সালে মামলাটি প্রথমবার সুপ্রিম কোর্টে ওঠে, তখন বিচারপতি ছিলেন জাস্টিস দীনেশ মাহেশ্বরী এবং জাস্টিস ঋষিকেশ রায়। মামলাটি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বেঞ্চে তালিকাভুক্ত হয়। সর্বশেষ, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে বিচারপতি ঋষিকেশ রায় অবসর গ্রহণ করেন। ডিএ মামলার রায়কে স্বাগত জানিয়ে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ বলেন, "কর্মচারীদের যে মহার্ঘভাতা প্রাপ্য, সেটা এতদিন রাজ্য সরকার অস্বীকার করছিল। আজ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এটা স্বীকৃতি পেল যে, এটা আমাদের প্রাপ্য।" তিনি আরও আশাবাদী যে, বিচারপ্রক্রিয়া শেষে কর্মীরা পূর্ণ বকেয়া ডিএ হাতে পাবেন। এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে আগস্ট মাসে। সেখানে মামলার পরবর্তী ধাপ, অর্থাৎ অবশিষ্ট ডিএ সংক্রান্ত শুনানি হবে বলে জানা গেছে। এর আগে মামলাটি ‘এক্সটেনসিভ হিয়ারিং’-এর আওতায় এনে অন্যান্য ভাতা সংক্রান্ত বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।