আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটার প্রমোদনগর উচ্চ বিদ্যালয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর দুই জনপ্রিয় শিক্ষকের চাকরি চলে যাওয়ায় বিক্ষোভের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ওই দুই শিক্ষকের চাকরি যাওয়ার প্রতিবাদে স্কুলের অন্যান্য শিক্ষকরা কর্মবিরতি পালন করতে শুরু করেন, যার ফলে ইউনিট টেস্টের চতুর্থ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। তবে এই কর্মবিরতির ফলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এদিন, স্কুলে ইউনিট টেস্ট চলছিল এবং চতুর্থ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শিক্ষকরা কর্মবিরতি পালন করায় পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে এসে জানতে পারেন যে, পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। তবে, কোনো পূর্ব ঘোষণা বা বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি, যা নিয়ে অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে যে, আগামী ১২ এপ্রিল পরীক্ষা নেওয়া হবে। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া বেশ কিছু পড়ুয়া জানান, তাঁরা দুই শিক্ষককে ফিরিয়ে আনার দাবিতে প্রতিবাদ করছেন। তবে অভিযোগ উঠেছে যে, অনেক পড়ুয়ার জানা ছিল না কী কারণে বিক্ষোভ হচ্ছে এবং তাঁরা শুধুমাত্র বলা হয়েছিল বিক্ষোভে সামিল হতে। হাতে প্ল্যাকার্ড ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। উঁচু ক্লাসের কিছু পড়ুয়া এই কর্মবিরতি ও বিক্ষোভের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন, তবে অনেকেই এই ঘটনা নিয়ে দ্বিধায় রয়েছেন। শিক্ষকরা দাবি করছেন, ওই দুই শিক্ষক স্কুলের সুনাম বাড়িয়েছিলেন এবং তাঁদের চাকরি চলে যাওয়া তাঁদের জন্য মেনে নেওয়া কঠিন। অঙ্কের শিক্ষক এবং বাংলার শিক্ষকের চাকরি চলে যাওয়ার কারণে তাঁরা কর্মবিরতি পালন করছেন। তবে, প্রধান শিক্ষক প্রদীপ সান্যাল জানান, তিনি কর্মবিরতিতে যোগ দেননি। তিনি জানান, শিক্ষকরা সহকর্মীদের সমর্থনে কর্মবিরতি পালন করছেন এবং পরীক্ষা নেওয়ার জন্য কোনো শিক্ষক না থাকায় তিনি পড়ুয়াদের বাড়ি চলে যেতে বলেন।
চাকরি হারানো যোগ্যদের পক্ষে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি লিখলেন রাহুল গান্ধী
উলেখ্য, এ ঘটনা নিয়ে বিতর্ক শুরু হলে, জেলা স্কুল পরিদর্শক (উচ্চমাধ্যমিক) আশানুল করিম জানান, তিনি প্রধান শিক্ষকের কাছে বিষয়টি বিস্তারিত জানতে চাইবেন। তারপরে পরিস্থিতি পরিষ্কার হওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।এ ধরনের পরিস্থিতি নিয়ে অভিভাবক মহলে ক্ষোভ বেড়ে গেছে। তাদের অভিযোগ, তারা তাদের সন্তানদের পরীক্ষা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে স্কুলে পাঠিয়েছিলেন, কিন্তু স্কুলে এসে জানতে পারেন যে পরীক্ষা স্থগিত হয়েছে। এই ধরনের সিদ্ধান্তকে একেবারে অগ্রহণযোগ্য বলে তারা মনে করছেন। অভিভাবকরা দাবি করেছেন, এই পরিস্থিতি তাদের সন্তানের পরীক্ষার প্রস্তুতির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ফালাকাটার প্রমোদনগর উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক কর্মবিরতি এবং পরীক্ষার স্থগিতির ঘটনা নিয়ে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষকদের প্রতিবাদ, কর্মবিরতি এবং বিক্ষোভের ফলে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি, যা একটি বড় সমস্যা সৃষ্টি করেছে। এ ধরনের পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবিলা করা হবে, তা এখনও পরিষ্কার নয়, তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন পরিস্থিতি যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করা উচিত।