ইউনুস-মোদী বৈঠক: থাইল্যান্ডে সম্ভাব্য দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নতুন দিগন্ত

banner

journalist Name : Bidisha Karmakar

#Pravati Sangbad Digital Desk :

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস সম্প্রতি ভারতের উত্তরপূর্ব রাজ্যগুলিকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার পর, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে নানা জল্পনা শুরু হয়েছিল। তবে, এসবের মাঝেই ৪ এপ্রিল থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ইউনুসের একান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটি মাইলফলক হয়ে দাঁড়িয়েছে।


প্রসঙ্গত,  গত কয়েক দিন আগে ইউনুসের মন্তব্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছিল, যেখানে তিনি ভারতের উত্তরপূর্ব অঞ্চলের ৭ রাজ্যকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু উস্কানিমূলক কথা বলেছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন, "উত্তর-পূর্বের সাতটি রাজ্য স্থলবেষ্টিত অঞ্চল। তাদের সমুদ্রে পৌঁছানোর কোনো উপায় নেই, আর এই অঞ্চলে বাংলাদেশই সমুদ্রের দেখভাল করে, যা চিনা অর্থনীতির সম্প্রসারণের জন্য সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে।" এই বক্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র বিতর্ক শুরু হয় এবং বাংলাদেশে এর ব্যাখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল। তবে ঢাকার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, ইউনুসের বক্তব্য ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এদিকে, এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ভারতের সঙ্গে মহম্মদ ইউনুসের বৈঠকের দাবি তোলা হয়েছিল। ৪ এপ্রিল, থাইল্যান্ডের ব্যাংককে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের সময়, মোদী ও ইউনুসের মধ্যে ঐতিহাসিক এই সাক্ষাৎটি ঘটে। বৈঠকে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন। এই বৈঠকটি বাংলাদেশের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি ছিল ইউনুসের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করার এক সুযোগ। ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে, এই বৈঠকটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। কিছু বিশ্লেষক মনে করছেন, চিন সফরের পর ইউনুস তার অবস্থান নরম করার চেষ্টা করছেন, বিশেষ করে মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার উদ্দেশ্যে। এর আগে, ২০২৪ সালে নিউইয়র্কে মোদীর সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করেছিলেন ইউনুস, তবে তা সফল হয়নি। কিন্তু এবার ব্যাংককে মোদীর সঙ্গে তার এই বৈঠকটি যথেষ্ট আলোচনায় এসেছে এবং এটি কূটনৈতিক সম্পর্কের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করার সম্ভাবনা তৈরি করেছে।

সকাল থেকে মুখভার করে আছে মহানগরের আকাশ

বিশ্লেষকদের মতে, ইউনুসের মন্তব্য এবং বৈঠকের পরের পরিস্থিতি ভারতের উত্তর-পূর্বে বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশ্নে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে। যদিও ভারত সরকার এই বিষয়ে স্পষ্ট কোনো অবস্থান এখনও গ্রহণ করেনি, তবে মোদী-ইউনুস বৈঠকটি সম্পর্কের উন্নতির দিকে একটি ইতিবাচক ইঙ্গিত হতে পারে।অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী মোদী ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে ইউনুসকে শুভেচ্ছা জানিয়ে একটি চিঠি পাঠান। তার পরবর্তী চিঠিটি ৩১ মার্চ ইদ উপলক্ষে ছিল। ইউনুসও ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের গুরুত্ব তুলে ধরে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, "ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো না থাকলে কোনোভাবেই উন্নতি সম্ভব নয়।"এভাবে, এই বৈঠকটি মোদী-ইউনুসের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে পারে, তবে ভবিষ্যতে ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চল এবং বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনো বড় ধরনের রাজনৈতিক পরিবর্তন আসবে কিনা, তা সময়ই বলবে।

Tags:

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Related News