পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামসকে ভারতের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ভারতরত্ন দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। আজ বিধানসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি সুনীতা উইলিয়ামসের মহাকাশ অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য তাঁকে অভিনন্দন জানান এবং তার পরেই ভারতের সর্বোচ্চ সম্মান দেওয়ার দাবি জানান।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "সুনীতা উইলিয়ামস এবং তাঁর সঙ্গী মহাকাশচারী বুচ উইলমোরকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আট দিনের মহাকাশ অভিযান শেষে ৯ মাস পর তারা পৃথিবীতে ফিরেছেন। তাঁদের ধৈর্য এবং শারীরিক সক্ষমতা অসাধারণ।" তিনি আরও বলেন, "মহাকাশযান যখন উপরে ছিল, তখন একটি সমস্যা হয়েছিল। সে কারণে তাদের ফিরতে সময় লেগেছে। কিন্তু মহাকাশযান ফিরে আসায়, কল্পনা চাওলার মতো পরিস্থিতি হতে পারত। সেই জন্যই বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল।" মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "তাদের ফেরানোর জন্য সমস্ত সংস্থা এবং দেশকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। সুনীতা উইলিয়ামসের অবদান অসীম, তাই তাঁকে ভারতরত্ন দেওয়া উচিত।"
উলেখ্য, আজ ভোর ৩.২৭ মিনিটে, ফ্লোরিডার অতলান্তিক মহাসাগরে **স্পেস এক্স ড্রাগন স্পেসক্রাফট** সফলভাবে সুনীতা উইলিয়ামস এবং তার সঙ্গী বুচ উইলমোরকে পৃথিবীতে অবতরণ করায়। সুনীতা উইলিয়ামস এবং বুচ উইলমোর মোট ১২ কোটি ১৩ লক্ষ ৪৭ হাজার ৪৯১ মাইল পথ পাড়ি দিয়েছেন এবং ২৮৬ দিন মহাকাশে ছিলেন। এই সময়কালে তারা পৃথিবীকে ৪৫৭৬ বার প্রদক্ষিণ করেছেন। এটি সুনীতা উইলিয়ামসের তৃতীয় মহাকাশ অভিযান ছিল এবং তাঁর মোট মহাকাশে কাটানো সময় ৬০৮ দিন। এই সময়ে তিনি মহাকাশ স্টেশনের বাইরে ৬২ ঘণ্টা ৬ মিনিট সময় ব্যয় করেছেন, যা মহিলাদের মধ্যে মহাকাশে হাঁটার জন্য সর্বাধিক সময়। মহাকাশে হাঁটার ক্ষেত্রে তিনি পুরুষ এবং মহিলা নভশ্চরদের তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছেন।
মাসের পর মাস মহাকাশে থাকলে মহাকাশচারীদের শরীরে কিকি ধরণের প্রভাব পরে
প্রসঙ্গত, সুনীতা উইলিয়ামসের পৈতৃক বাড়ি **গুজরাতের মেহসানা জেলার ঝুলাসান** গ্রামে। তার বাবা দীপক পাণ্ড্য ১৯৫৭ সালে এই গ্রাম ছেড়ে আমেরিকায় পাড়ি দেন। সুনীতা উইলিয়ামসের কৃতিত্ব এবং তার মহাকাশ অভিযানের জন্য তার সাফল্য আজও দেশবাসীর কাছে এক বিশেষ প্রেরণা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, সুনীতা উইলিয়ামসের অসাধারণ সাফল্য এবং তার মহাকাশে অবদানকে ভারতের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান—ভারতরত্ন দেওয়া উচিত, যা তাকে আরও উৎসাহিত করবে এবং দেশের মহাকাশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে তার অবদানকে চিরকাল স্মরণীয় করে রাখবে।