মহাকাশে এক ইতিহাস রচনা করে পৃথিবীতে ফিরে এলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামস। ২৮৬ দিন মহাকাশে কাটানোর পর ১৯ মার্চ, ২০২৫ তারিখে ভারতীয় সময় ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ ফ্লোরিডার সমুদ্রে অবতরণ করে স্পেসএক্সের মহাকাশযান ‘ড্রাগন ফ্রিডম’। এই ঘটনাটি পুরো পৃথিবীজুড়ে সংবাদমাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে। তবে, এর চেয়েও অধিক রোমাঞ্চকর ছিল একটি অদ্ভুত ঘটনা—মহাকাশযানটির অবতরণের সময় সেখানে এসে হাজির হয় একদল ডলফিন। ডলফিনগুলোর আচরণ দেখার পর মুহূর্তের মধ্যে সেই ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায় নেট দুনিয়ায়।
উলেখ্য, মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে মহাকাশচারীরা মহাকাশযান 'ড্রাগন ফ্রিডম'-এ চড়ে তাদের পৃথিবীযাত্রা শুরু করেন। এরপর বুধবার আটলান্টিক মহাসাগরে সফলভাবে অবতরণ করেন তাঁরা। পুরো পৃথিবী তখন সজাগ ছিল, কারণ নাসা লাইভ সম্প্রচার করছিল সুনীতাদের পৃথিবী ফেরার রোমাঞ্চকর মুহূর্তটি। এই ঘটনাটি পৃথিবীজুড়ে মহাকাশপ্রেমীদের মধ্যে গভীর আগ্রহ এবং উচ্ছ্বাস সৃষ্টি করেছে। যতই উপস্থাপন করুন, সেই মুহূর্তটি যেন এক স্বপ্নের মতো ছিল। মহাকাশযান সমুদ্রে অবতরণ করার পরে সুনীতাদের স্বাগত জানাতে কিছু মানুষ ও মার্কিন নৌবাহিনীর জাহাজ অপেক্ষা করছিল। কিন্তু, অবাক করার বিষয় হল—যানটি সমুদ্রে অবতরণের পর হঠাৎ সেখানে হাজির হয় একদল ডলফিন। তারা মহাকাশযানটিকে ঘিরে চক্কর কাটতে থাকে। এই অদ্ভুত ও মিষ্টি দৃশ্যটি মুহূর্তেই সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায় এবং সুনীতাদের পৃথিবীতে ফিরে আসার আনন্দে আরো একটি আনন্দময় মুহূর্ত যোগ হয়ে যায়। বিশ্বব্যাপী মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামসের সফল মহাকাশ যাত্রা শেষে পৃথিবীতে ফিরে আসার ঘটনাটি ছিল আনন্দ ও উত্সাহের উপলক্ষ। বিশেষ করে তাঁর পৈতৃক গ্রাম গুজরাটের ঝুলাসানে সাধারণ মানুষের মধ্যে এক উল্লাসের ঝড় উঠেছিল। গ্রামে আতশবাজি ফাটিয়ে উল্লাস প্রকাশ করা হয়, যেন তারা নিজেরাই মহাকাশে গিয়েছিলেন। সুনীতার পরিবারও খুশিতে ভেসে উঠেছে। তাঁর ভ্রাতৃবধূ ফাল্গুনী পাণ্ডিয়া জানান, "ওই দৃশ্যটা যেন বিমূর্ত!" সুনীতার পরিবারের সদস্যরা এখন অপেক্ষায় আছেন সুনীতার ভারতে ফেরার জন্য।
আইপিএলের ‘ক্যাপ্টেন্স মিট’ হবে কোথায়?
প্রসঙ্গত, মহাকাশে এমন এক দীর্ঘ যাত্রা শেষে পৃথিবীতে ফেরার পরে সুনীতা উইলিয়ামস এখন বিশ্বজুড়ে মহাকাশ বিজ্ঞান ও সাহসিকতার এক বড় উদাহরণ হয়ে উঠেছেন। তিনি শুধু আমেরিকান মহাকাশচারীই নন, ভারতের জন্যও গর্বের বিষয়। তাঁর পৈতৃক গ্রামে ফিরে আসার এই ইতিহাস সৃষ্টি করা ঘটনা পৃথিবীজুড়ে বহু মানুষের কাছে এক গুরুত্বপূর্ণ প্রেরণা হয়ে থাকবে। অবশেষে, সুনীতা উইলিয়ামস ও তাঁর মহাকাশযাত্রার সব সঙ্গীকে স্বাগতম জানিয়ে বিশ্বব্যাপী একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো, যেখানে মানবতার সীমানা আরও প্রসারিত হয়েছে, মহাকাশের রহস্য উন্মোচনের জন্য আমাদের অভিযান চলতেই থাকবে।