ভারতের শিক্ষাব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসতে চলেছে। সেন্ট্রাল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন (সিবিএসই) সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, ২০২৬-২৭ শিক্ষাবর্ষে দশম শ্রেণির পরীক্ষা দুটি পৃথক সেশনে নেওয়া হবে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের উপর চাপ কমানোর পাশাপাশি তাদের শেখার প্রতি মনোযোগ আরও বৃদ্ধি পাবে। এই সিদ্ধান্তটি শুধু ভারতের জন্যই নয়, সারা বিশ্বের মধ্যে সিবিএসই-র ২৬০টি স্কুলে প্রয়োগ হবে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের উপস্থিতিতে সিবিএসই, এনসিইআরটি, কেভিএস, এনভিএস-সহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং ওই বৈঠকের সময়েই এই নতুন নীতি সংক্রান্ত একটি ড্রাফট প্রস্তুত করা হয়, যা আগামী সোমবার জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে।
কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গে মেঘলা আকাশ, বৃষ্টির পূর্বাভাসে সতর্কতা জারি হাওয়া অফিসের
শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান জানান, এই পদক্ষেপটির উদ্দেশ্যই হচ্ছে শিক্ষার্থীদের উপর চাপ কমানো। তিনি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হল, পড়ুয়াদের যাতে বেশি চাপ না আসে এবং তারা আরও মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনায় অংশগ্রহণ করতে পারে। নতুন এই নীতি বোর্ডের পরীক্ষার ক্ষেত্রে একটি বিরাট সংস্কার।” প্রসঙ্গত, গত জানুয়ারিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এই নীতির আভাস দিয়েছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, "২০২৬-২৭ শিক্ষাবর্ষে সিবিএসই পরীক্ষা বছরে দুবার হবে।" পাশাপাশি, জাতীয় শিক্ষা নীতি (NEP)-এর প্রস্তাব অনুসারে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষাগুলো সেমিস্টারে নেওয়ার বিষয়েও আলোচনা চলছে। এখন, প্রশ্ন উঠছে, এই নতুন পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের জন্য কীভাবে কার্যকর হবে? দুই সেশনে পরীক্ষা নেওয়ার ফলে, শিক্ষার্থীরা একবারের বড় চাপের পরিবর্তে সামান্য চাপের মধ্যে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। এর ফলে পড়াশোনার প্রতি আগ্রহও বাড়তে পারে। একইসঙ্গে, একাধিক সেমিস্টারে পরীক্ষা হওয়ার ফলে, একেবারে শেষের দিকে না গিয়ে সময় অনুযায়ী পরিমাণমতো পড়াশোনা করা যাবে, যা শিক্ষার্থীদের জন্য আরও উপকারী হবে।
উলেখ্য, এই পদক্ষেপটি শুধু শিক্ষার্থীদের চাপ কমাবে না, বরং তাদের সৃজনশীলতা এবং দক্ষতা বিকাশেও সহায়ক হবে। শিক্ষামন্ত্রীর মতে, এই নতুন পদক্ষেপ শিক্ষার মান উন্নত করার জন্য একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ। এতদিন ধরে বোর্ড পরীক্ষা শুধুমাত্র একবার নেওয়া হত, যেখানে শিক্ষার্থীরা একবারের চাপ সামলানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের মানসিক চাপের শিকার হতেন। দুই সেশনে পরীক্ষার মাধ্যমে সেই চাপ অনেকাংশে কমবে, এবং পড়ুয়াদের মনোযোগ পড়াশোনার দিকে আরও নিবদ্ধ থাকবে, যা শিক্ষাব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে। সুতরাং, এই সিদ্ধান্তটি শিক্ষাব্যবস্থায় একটি বড় পরিবর্তন নিয়ে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা শিক্ষার্থীদের জন্য ইতিবাচক ফলাফল আনতে সক্ষম হবে।