কেন বাংলাদেশ সীমান্তের সর্বত্র কাঁটাতারের বেড়া বসানো সম্ভব হচ্ছে না, জানতে চান দেব

banner

journalist Name : Bidisha Karmakar

#Pravati Sangabad Digital Desk :

বাংলাদেশ সীমান্তে অনুপ্রবেশের ঘটনা, বিশেষ করে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর, ভারতের সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। সম্প্রতি, তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) সাংসদ দেব, যিনি নিজের সংসদীয় এলাকার জনগণের নিরাপত্তা ও সীমান্ত সমস্যা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে উদ্বিগ্ন ছিলেন, একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে।প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেব এবং কেন্দ্রীয় সরকার একাধিক প্রশ্নের মাধ্যমে সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখেছেন। এর মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও কেন্দ্রের জবাব এইরূপ:

১. ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের দৈর্ঘ্য:

 দেব জানতে চেয়েছিলেন, ভারতের সাথে বাংলাদেশের মোট সীমান্তের দৈর্ঘ্য কত। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভারতের মোট ৪০৯৬.৭০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে বাংলাদেশের সাথে।

২. কোন রাজ্যগুলো সীমান্তে রয়েছে? 

 বাংলাদেশ সীমান্তের সাথে যুক্ত রাজ্যগুলি হল পশ্চিমবঙ্গ (২২১৬.৭ কিলোমিটার), অসম (২৬৩ কিলোমিটার), মেঘালয় (৪৪৩ কিলোমিটার), ত্রিপুরা (৮৫৬ কিলোমিটার) এবং মিজোরাম (৩১৮ কিলোমিটার)।

৩. কাঁটাতারের বেড়া কোথায় নেই?

 প্রশ্ন উঠেছিল, সীমান্তের কোথায় কোথায় কাঁটাতারের বেড়া নেই? কেন্দ্র জানিয়েছে, ভারতের ৮৬৪.৪৮২ কিলোমিটার সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নেই, যার মধ্যে ১৭৪.৫১৪ কিলোমিটার এলাকায় বেড়া বসানো সম্ভব নয়।

শেয়ার বাজারে স্ত্রীর দেনা মেটানোর দায়িত্ব স্বামীর উপর রায় সুপ্রিম কোর্টের

৪. কাঁটাতারের বেড়া বসানোর সমস্যাগুলি কী?

 কিছু এলাকা জলাভূমি, ধসপ্রবণ এলাকা এবং বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর বাধার মুখে পড়েছে। এছাড়াও, আবহাওয়া ও জমি অধিগ্রহণে দেরির কারণে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া বসানো হচ্ছে না।

বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বেআইনি অনুপ্রবেশ বেড়েছে। বিশেষ করে মালদা এবং অন্যান্য এলাকায় অনুপ্রবেশের ঘটনা চোখে পড়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া বসাতে গেলেও সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী কাঁটাতার বসাতে বাধা দেওয়ায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। রাজ্য রাজনীতিতেও সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে বেশ টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে জমি নিয়ে একাধিক অভিযোগ তুলেছেন। তিনি দাবি করেছেন, BSF (বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স) সীমান্তে গমন করতে পারবে না ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে। এর ফলে কেন্দ্র রাজ্যকে দায়ী করেছে বেআইনি অনুপ্রবেশের জন্য। অন্যদিকে, রাজ্যের দাবি, সীমান্ত নিরাপত্তার পুরো দায়িত্ব BSF-এর। সাম্প্রতিক সময়ে, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কিছু জমি BSF-কে দিতে সম্মতি প্রদান করা হয়েছে, যেমন নদিয়ার করিমপুরে প্রায় ১ একর জমি BSF-কে দেওয়া হয়েছে।


সীমান্ত নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন:

১. কাঁটাতারের বেড়া বসানোর কাজ দ্রুত করা: এটি বাধাগ্রস্ত হওয়া সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় অঞ্চলগুলোতে দ্রুত কাঁটাতারের বেড়া বসানো উচিত।

২. উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার: সীমান্তে প্রযুক্তির ব্যবহার যেমন ড্রোন, থার্মাল ক্যামেরা, ও বায়োমেট্রিক সিস্টেমের মাধ্যমে অনুপ্রবেশের ঘটনা কমানো সম্ভব।

৩. রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানো: রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে সীমান্ত নিরাপত্তা আরও শক্তিশালী করা সম্ভব।

বাংলাদেশ সীমান্তে নিরাপত্তা ও বেআইনি অনুপ্রবেশের সমস্যা একটি জটিল পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক বাধা সত্ত্বেও, সীমান্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও কার্যকরী করতে দ্রুত এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা আবশ্যক। তৃণমূল সাংসদ দেবের ভূমিকা এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ ভবিষ্যতে সীমান্ত নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য গুরুত্বপুর্ণ হতে পারে।

Tags:

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Related News