সোমবার সুপ্রিম কোর্টে একটি গুরুত্বপূর্ণ রায়ে জানানো হয়েছে যে, শেয়ার বাজারে স্ত্রীর দেনা মেটানোর দায়িত্ব স্বামীর উপরই বর্তাবে, আর এজন্য মৌখিক চুক্তি যথেষ্ট। এই রায়টি শেয়ার বাজারে ব্যবসা সংক্রান্ত একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে দেওয়া হয়েছে, যেখানে স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই শেয়ার বাজারে লগ্নি করতেন এবং স্ত্রীর শেয়ার বাজারে ঋণ সৃষ্টি হয়।
ডিভোর্সের পর স্ত্রীয়ের থেকে খোরপোশ পেতে পারেন স্বামীও
প্রসঙ্গত, একটি শেয়ার বাজারের স্টক ব্রোকারের কাছে যে মামলাটি উঠেছিল, সেখানে দেখা যায়, স্বামী এবং স্ত্রীর আলাদা আলাদা ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট থাকলেও, তারা মৌখিক চুক্তির মাধ্যমে যৌথভাবে এই অ্যাকাউন্ট চালাতেন। এক পর্যায়ে স্ত্রীর শেয়ার বাজারে বড় ধরনের ঋণ হয়ে যায়। এক্সচেঞ্জের মধ্যে লেনদেনের পর তাদের ডেবিট ব্যালান্স উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়, এবং এর ফলে স্বামীর অ্যাকাউন্ট থেকেও কিছু টাকা কাটা হয়। এই পরিস্থিতিতে স্বামী ট্রাইব্যুনালের কাছে আবেদন করেন, তবে ট্রাইব্যুনালও তাদের দায়িত্বকে যৌথভাবে দেখায়। সেই সিদ্ধান্তের পর মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে চলে আসে। শীর্ষ আদালত, বিচারপতি পিএস নরসিংহ ও বিচারপতি সন্দীপ মেটার বেঞ্চের উপস্থিতিতে, রায় দেন যে, মৌখিক চুক্তির ভিত্তিতে স্বামীকে স্ত্রীর শেয়ার বাজারের দেনা মেটানোর জন্য দায়ী করা যেতে পারে। আদালত স্পষ্ট করে জানায়, ট্রাইব্যুনাল চাইলে স্বামীর বিরুদ্ধে এক্তিয়ার প্রয়োগ করতে পারে। এছাড়া আদালত বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের ১৯৪৭ সালের আইনের একটি ধারা উল্লেখ করে এই সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দেয়। সেই সঙ্গে, স্বামীকে ৯ শতাংশ বার্ষিক সুদের সাথে ১ কোটি ১৮ লক্ষ ৫৮ হাজার টাকা দেনা শোধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
উলেখ্য, এই রায়টি শেয়ার বাজারে লেনদেনের ক্ষেত্রে মৌখিক চুক্তির গুরুত্ব এবং যৌথ দায়বদ্ধতা বিষয়ক আইনগত ভিত্তি পরিষ্কার করে। একই সঙ্গে, আদালত জানিয়ে দেয় যে, একে অপরের জন্য দায়ী থাকা, বিশেষ করে শেয়ার বাজারের মতো জটিল ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে, পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং চুক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি ভবিষ্যতে শেয়ার বাজারের লেনদেনে অংশগ্রহণকারী দম্পতিদের জন্য একটি দৃষ্টান্তমূলক রায় হিসেবে কাজ করবে, যেখানে তারা নিশ্চিত করতে পারবে যে, ঋণের ক্ষেত্রে একে অপরের দায়বদ্ধতা কোথায় শেষ হয় এবং কীভাবে তা সমাধান হবে। মৌখিক চুক্তির মাধ্যমে একে অপরের দায়বদ্ধতা ভাগ করে নেওয়া যেতে পারে এমন সিদ্ধান্ত দেশের শেয়ার বাজারে প্রভাব ফেলবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের লেনদেনে যুক্ত পক্ষদের সতর্ক হতে হবে।