গত দুই বছর ধরে মণিপুরের পরিস্থিতি বারবার হিংসায় উত্তপ্ত হয়েছে। রাজ্যের শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার প্রশ্নে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের ভূমিকা নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠেছে। গত রবিবার, মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং রাজ্যপাল অজয় কুমার ভাল্লার কাছে নিজের পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। এ ঘটনায় রাজ্য রাজনীতিতে নতুন অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
তিরুপতি মন্দিরের লাড্ডুর ঘি-তে পশুর চর্বি মেশানোর অভিযোগে গ্রেফতার ৩
বীরেন সিংয়ের পদত্যাগের পেছনে মূল কারণ হিসেবে উঠে এসেছে কংগ্রেসের অনাস্থা প্রস্তাব। কংগ্রেসের দাবি ছিল, রাজ্যের বর্তমান সরকার হিংসা ও অস্থিরতার মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং এর ফলে জনগণের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। তারা পরিকল্পনা করছিল মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার, যার ফলে বিধানসভায় ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। তবে, কনরাড সাংমার নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) সমর্থন প্রত্যাহারের পরও বিজেপির কাছে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল। কিন্তু, একাধিক বিধায়ক দলের হুইপ অমান্য করে বীরেন সিংয়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটে ভোট দিতে প্রস্তুত ছিলেন। তাদের অভিযোগ, রাজ্যের উন্নতি নেই এবং মুখ্যমন্ত্রী বদলের পক্ষে তারা। সূত্রের খবর, মণিপুরের প্রায় ১২ জন বিধায়ক মুখ্যমন্ত্রী পরিবর্তনের পক্ষে রয়েছেন।
বীরেন সিংয়ের বিরুদ্ধে তৈরি হওয়া এই রাজনৈতিক চাপের মধ্যে, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা শেষে তিনি মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। গতকাল সকালে তিনি দিল্লি যান এবং সেখানে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে বৈঠক করেন। বিজেপি, মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে কোনো নেতিবাচক প্রভাব চাননি, এবং তাই সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে, বীরেন সিংকে পদত্যাগ করতে হবে। এখন দেখার বিষয় হল, বীরেন সিংয়ের স্থলে নতুন মুখ্যমন্ত্রী কে হচ্ছেন। বিজেপি বা অন্য কোনো দলের প্রার্থী নির্বাচিত হলে, তার নেতৃত্বে মণিপুরের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কীভাবে বদলে যায়, তা সময়ই বলে দেবে। মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের পর রাজ্যের রাজনীতি নতুন এক দিগন্তের দিকে এগিয়ে যাবে, এমনটাই ধারণা রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। এখন, মণিপুরের জনগণ ও রাজনৈতিক মহল অপেক্ষা করছে, কিভাবে এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হবে এবং রাজ্যের উন্নয়ন ও শান্তি বজায় রাখতে কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হবে।