এক বিবাহিত মহিলার সন্তান নিয়ে আইনগত বাবা নির্ধারণের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে দ্বন্দ্বের ঘটনা আলোচিত হয়েছে। মঙ্গলবার, সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে যে, যদি বৈবাহিক সম্পর্ক থেকে থাকে এবং দম্পতির মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক থাকে, তবে ওই সন্তানের আইনগত বাবা হিসেবে স্বামীকে স্বীকৃতি দেওয়া যাবে, যদিও তিনি বায়োলজিকাল বাবা নন। এই রায়ের মাধ্যমে আদালত এক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা ভারতের আইনি পরিপ্রেক্ষিতের জন্য নতুন দৃষ্টিভঙ্গি প্রস্তাব করে।
ওয়াশিংটনে হেলিকপ্টারের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে নদীতে ভেঙে পড়ল আমেরিকান এয়ারলাইন্সের বিমান
বিচারপতি সুর্যকান্ত বলেন, “ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্টের ১১২ ধারা অনুযায়ী, বিয়ের পরবর্তী সময়ে স্ত্রীর যে সন্তান হয়, তার বাবা ওই স্বামীকেই হিসেবে ধরা হয়।" তিনি আরও জানান যে, কোনও স্বামী সন্তানের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে কেবলমাত্র যখন স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে কোনও সম্পর্ক না থাকে। এর মানে, একটি সন্তানকে তার বৈবাহিক বাবা হিসেবে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার ক্ষেত্রে যদি দম্পতির মধ্যে সম্পর্ক থাকে, তবে বায়োলজিকাল বাবা না থাকলেও, স্বামী সেই সন্তানের আইনি বাবা হিসেবে বিবেচিত হবেন। এই মামলার সূত্রপাত এক বিবাহিত মহিলার ক্ষেত্রে, যিনি স্বীকার করেন যে তাঁর সন্তানটি তাঁর স্বামীর নয়, বরং অন্য একটি পুরুষের সঙ্গে সহবাসের ফলে হয়েছে। তার পরবর্তী সময়ে, তিনি ডিভোর্সের আবেদন করেন এবং কোচিন পুরসভায় আবেদন করেন যাতে তার সন্তানের পদবি বায়োলজিকাল বাবার পদবি অনুসারে বদলানো হয়। তবে পুরসভা সেই আবেদন মেনে নিতে অস্বীকার করে এবং জানায় যে, কেবলমাত্র আদালতের নির্দেশে এটি সম্ভব। মহিলা এরপর কোর্টে যান, যেখানে তাঁর দাবিটি ছিল, তিনি যে পুরুষের সঙ্গে সহবাস করেছেন, তিনি তাঁর সন্তানের বায়োলজিকাল বাবা। তবে, সেই পুরুষ এই শারীরিক সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করেন। পরে, কেরল কোর্ট ওই পুরুষের ডিএনএ টেস্টের জন্য নির্দেশ দেয়। কিন্তু পুরুষটি সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন এবং জানান যে, কাউকে জোর করে ডিএনএ টেস্টের জন্য বাধ্য করা যায় না।
সুপ্রিম কোর্ট এই আবেদনটি মেনে নিয়ে ডিএনএ টেস্টের নির্দেশ খারিজ করে দেয়। বিচারপতিরা জানান, "জোর করে ডিএনএ টেস্ট করানো কারোর ব্যক্তিগত জীবনে অনধিকার প্রবেশের সমান। এটি ব্যক্তির সম্মানহানি এবং গোপনীয়তার লঙ্ঘন হতে পারে।" এই রায়টি একদিকে যেখানে বৈবাহিক সম্পর্কের ভিত্তিতে আইনি বাবা নির্ধারণের বিষয়টি স্পষ্ট করেছে, সেখানে অন্যদিকে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার এবং সম্মানের উপরও গুরুত্ব দিয়েছে। এটি ভারতের আইনি ব্যবস্থার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ রায়, যা ব্যক্তিগত অধিকারের সংরক্ষণ এবং পারিবারিক সম্পর্কের আইনি জটিলতা নিয়ে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেছে।