মঙ্গলবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০২৫ তারিখে রাজ্যের প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ‘ম্যাকাউট’-এর হরিণঘাটা ক্যাম্পাসের অ্যাপ্লায়েড সাইকোলজি বিভাগের ক্লাসরুমে ঘটল এক অস্বাভাবিক ঘটনা, যা সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের মধ্যে শোরগোল সৃষ্টি করে। ক্লাসরুমে প্রথম বর্ষের এক ছাত্র তার বিভাগীয় প্রধান, এক মহিলা অধ্যাপককে কনের সাজে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তাঁর সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে দেন। এ ঘটনায় ক্লাসের অন্যান্য ছাত্রছাত্রীরাও উপস্থিত ছিলেন, এবং ভিডিওটি প্রকাশ পাওয়ার পর থেকেই ক্যাম্পাসে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়।
প্রসঙ্গত, ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে। বিভাগীয় প্রধানকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে এবং তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়ে দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য তাপস চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত বিভাগের প্রধান জানিয়েছেন, এটি তাঁদের পাঠ্যক্রমের অংশ হিসেবে প্রজেক্টের অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে, ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরেই বিষয়টি তদন্তের মধ্যে এসেছে।‘’ বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিযোগ, এই ঘটনার পিছনে আরও কিছু অবৈধ সম্পর্কের জটিলতা থাকতে পারে। ভিডিওটি প্রকাশ হওয়ার পর ক্যাম্পাসে কিছুদিন ধরে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে যে, অভিযুক্ত বিভাগীয় প্রধান এবং ভিডিওতে থাকা ছাত্রের মধ্যে বিবাহবর্হিভূত সম্পর্ক রয়েছে। তবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ কোনো নির্দিষ্ট মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে।
মৌনি অমাবস্যায় অমৃত স্নানের জন্য হুড়োহুড়ি, মহাকুম্ভে পদপিষ্টের ঘটনা
যদিও বিভাগের প্রধান তাঁর পক্ষে দাবি করেছেন, এটি তাঁদের পাঠ্যক্রমের একটি অংশ ছিল, তবুও বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশের অভ্যন্তরীণ অস্বস্তি এবং সিবিএসই, ইউজিসির নির্দেশিকা অনুযায়ী এমন অস্বাভাবিক পরিস্থিতির জন্য বিভাগের প্রধানের সিদ্ধান্ত প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। যেখানে সিঁদুর পরিয়ে দেওয়ার মতো অনুষ্ঠান প্রজেক্টের অংশ হতে পারে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এছাড়া, ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্রছাত্রী, বিশেষ করে ক্লাসের অন্যান্য সদস্যরা এই ঘটনার সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। ভিডিওতে যে ছাত্রকে দেখা যাচ্ছে, তার পরিচয়ও এখনও স্পষ্ট করা হয়নি।
প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এবং শিক্ষকদের দায়িত্ব সম্পর্কে প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে এ ধরনের ঘটনা শিক্ষার পরিবেশ এবং তার সততার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রফেশনালিজম এবং নৈতিকতার গুরুত্বের সঙ্গে এই ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে আরও সতর্কতার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিতে পারে। এই অস্বাভাবিক ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাদান এবং শিক্ষার্থীদের প্রতি দায়িত্ব সম্পর্কে এক গুরুতর প্রশ্ন তোলেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বিষয়টির তদন্ত করা হলে, সত্য বেরিয়ে আসবে। তবে, এই ঘটনা ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশের উপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে এবং এর ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উপর কর্তৃপক্ষের আরও কঠোর নজরদারি প্রয়োজন বলে মনে হচ্ছে।