Flash News
Monday, September 22, 2025

সিপিএমের গ্রামীণ জনসমর্থন পুনরুদ্ধারে নতুন উদ্যোগ

banner

journalist Name : Bidisha Karmakar

#Pravati Sangbad Digital Desk:

কৃষক, খেতমজুর ও শ্রমিকদের দীর্ঘদিনের সমর্থক সিপিএম (কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইনডিয়া, মার্সিস্ট) এখন তাদের পার্টির ঐতিহ্যবাহী শক্তি ও ভিত্তি, অর্থাৎ গ্রামবাংলার মেহনতি মানুষের কাছে পুনরায় যেতে চায়। অনেক দিন ধরেই এই শ্রেণীর মানুষের সরে যাওয়া বা সিপিএমের মূল শক্তির দিকে না তাকানো দলের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের দিকে নজর রেখে দল গ্রামবাংলার কর্মীদের কাছে ফিরতে একটি নতুন কৌশল গ্রহণ করেছে।

উলেখ্য,  সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব এখন গ্রামে-গ্রামে গিয়ে খেতমজুর, কৃষক, শ্রমিকদের দাবিদাওয়া শোনার পদ্ধতি গ্রহণ করেছে। তারা বাড়ি-বাড়ি গিয়ে, দাওয়ায় বসে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করার উদ্যোগ নিয়েছে। এই কৌশলটি প্রয়োগের পিছনে রয়েছে দলের একটি বড় লক্ষ্য—গ্রামীণ মানুষের আস্থা ফিরে পাওয়া। কিন্তু, এমন উদ্যোগে কাজ কতটা হবে, সে নিয়ে কিছু সংশয়ও রয়েছে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর কৃষক-কেন্দ্রিক স্লোগান ছিল, “কৃষি আমাদের ভিত্তি, শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ।” তাঁর এই স্লোগানটি সিপিএমের মূল আদর্শ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু সিপিএম নেতৃত্বের ভাষ্যে, এই স্লোগানের প্রয়োগে কিছু ভুল ছিল, যা তাদের জন্য ক্ষতিকর হয়েছে। বিশেষ করে সিঙ্গুর আন্দোলনের সময় কৃষকসভার মতামত উপেক্ষা করার কারণে পার্টির প্রতি গ্রামীণ মানুষের ক্ষোভ বাড়ে। সেই সময় থেকেই সিপিএমের গ্রামীণ সমর্থন কমে যায়। তাই বর্তমানে তারা গ্রামে ফিরে গিয়ে মানুষের সমস্যাগুলির প্রতি সজাগ হতে চায়।

সেফ আলি খানের ওপর হামলার ঘটনায় তদন্তে মুম্বই পুলিশ কলকাতায়

সিপিএমের খেতমজুর সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক তুষার ঘোষ বলেছেন, "কৃষক ও গ্রামের গরিব মানুষই আমাদের পার্টির ভিত্তি। কিছুটা তারা সরে গিয়েছে, কিন্তু তা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব। আন্দোলন এবং স্থানীয় জনগণের মধ্যে সঞ্চালনিত কার্যক্রমের মাধ্যমে তাঁদের বিশ্বাস অর্জন করতে হবে।" তিনি আরো বলেন, "এখন ঘরে বসে আন্দোলন চিহ্নিত করা সম্ভব নয়, সেটি করতে হবে গ্রামে-গ্রামে, বাড়ি-বাড়ি গিয়ে।" সিপিএম এখন কৃষক, খেতমজুর, শ্রমিক ও বস্তিবাসীদের নিয়ে একটি বৃহত্তর সমাবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ২০ এপ্রিল ব্রিগেডে একটি বড় সমাবেশের আয়োজন করেছে সিটু (সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেড ইউনিয়ন), কৃষকসভা, খেতমজুর ইউনিয়ন এবং বস্তি উন্নয়ন সমিতি। এর আগে ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে রাজ্যব্যাপী পদযাত্রার আয়োজন করা হবে। এই সমাবেশটি সিপিএমের পার্টির নামে নয়, বরং কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে।  


প্রসঙ্গত,  তুষার ঘোষ এবং অন্যান্য সিপিএম নেতা জানিয়েছেন যে, তাঁদের লক্ষ্য হলো কৃষক, খেতমজুর, শ্রমিক ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করা এবং তাদের আস্থার পুনরুদ্ধার। এমনকি, বৈশাখের গরমে ব্রিগেড সমাবেশকে তাদের এই ধারাবাহিক আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে দেখা হচ্ছে। নিন্দুকরা প্রশ্ন তুলতে পারেন, “এতসব কৌশল আর পদক্ষেপের পরেও, কি পার্টির শূন্যের গেরো কাটবে?” সিপিএম নেতৃত্বের কাছে এর উত্তর হলো—এটা সম্ভব যদি তারা প্রতিটি গ্রামে গিয়ে সত্যিকারের সমস্যাগুলি চিহ্নিত করতে পারে এবং জনগণের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা পুনরায় প্রমাণিত করতে পারে। গ্রামীণ জনসমর্থন ফিরে পেতে সিপিএমের এই নতুন পরিকল্পনা, বিশেষত গ্রামে গিয়ে মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার উদ্যোগ, সম্ভবত তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াবে। তবে, শুধুমাত্র কৌশল নয়, দীর্ঘমেয়াদী আন্দোলন এবং মানুষের কাছে বিশ্বাস ফিরে পাওয়া না হলে সিপিএমের জন্য ‘মেহনতি মানুষ’-এর আস্থা পুনরুদ্ধার সত্যিই কঠিন হয়ে উঠবে।

Tags:

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Related News