#Pravati Sangbad Digital Desk:
রাজ্যে করোনা সংক্রমণ ভয়ঙ্কর ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরই মধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় মেলা শুরু হয়েছে। আদালতের নির্দেশেই এই মেলা গুলি শুরু হয়েছে। যে মেলা গুলি শুরু হয়েছে তারমধ্যে গঙ্গাসাগর মেলা, জয়দেবের কেন্দুলি মেলা উল্লেখযোগ্য। তবে এই সমস্ত মেলা গুলি হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে হচ্ছে কিনা সেটাই এখন আলোচনার বিষয়। এই বিধি-নিষেধ সঠিকভাবে মানা হচ্ছে কিনা তা নিয়েও বিতর্ক চলছে বিভিন্ন মহলে।
এর আগে ২০২১ সালের গত নভেম্বরে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার ক্যানিংয়ের রাসমেলা চলার আগে হাইকোর্টে অনেক নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু সব নির্দেশ মানা সম্ভব হয়নি বলে জানা গিয়েছিল। সেখানে এড়ানো সম্ভব হয়নি।
কথায় আছে, ''সব তীর্থ বার বার গঙ্গাসাগর একবার।” এবারের গঙ্গাসাগর মেলাতেও হাইকোর্ট বিভিন্ন নির্দেশ দিয়েছে। তবে গঙ্গাসাগরের মতো এত বড় মেলাতে সমস্ত বিধিনিষেধ মেনে চলা আদৌ সম্ভব কিনা তা নিয়ে সন্দেহ বিভিন্ন মহলে।
করোনার এই বাড়বাড়ন্ত পরিস্থিতিতে গভীর বিধি মেনেই মেলা পালন করা হচ্ছে কিনা তা দেখতে বুধবার সাগরে গিয়েছিলেন কমিটির চেয়ারম্যান প্রাক্তন বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়। আদালত যেখানে নির্দেশ দিয়েছে গোটা গঙ্গাসাগর দ্বীপটিকেই “নোটিফাইড এরিয়া” বলে ঘোষণা করতে, সেখানে মঙ্গলবার দেখা যায় হাজার হাজার পুণ্যার্থীর আগমন ঘটেছে। তাদের অনেকের মুখেই আবার মাক্স নেই। এত বিপুলসংখ্যক পুণ্যার্থীরা নানাভাবে তীর্থক্ষেত্রে আসছেন। কেউ জলপথে, কেউ স্থলপথে, কেউবা আসছেন রেলপথে। কিন্তু এদের সকলেই যে কোভিডের দুটি টিকা পেয়েছেন, এই শংসাপত্র খতিয়ে দেখা কতটা সম্ভব তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
গঙ্গাসাগরে কর্তব্যরত এক সিভিক ভলেন্টিয়ারের কথায়, “গোটা গঙ্গাসাগরের মোট পঞ্চাশ জন তীর্থযাত্রী! ভাবা যায়! সম্ভবই নয়। এত বড় একটা জায়গা! কিভাবে কতটা সম্ভব তাও আমরা চেষ্টা করছি।” অন্যদিকে জয়দেব কেন্দুলির মেলা শুরু হয়েছে আজ থেকেই। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছরের জয়দেবের কেন্দুলির মেলা অনেকটাই ছোট পরিসরে করা হয়েছে। জয়দেবের মেলার আকর্ষণ হল মন্দির। এছাড়াও এখানকার বাউল আখরার আকর্ষণও কম জনপ্রিয় নয়। বহু দূর দূরান্ত থেকে মানুষ আসে এই মেলায়। সেইসব বাংলা এবার জানিয়েছেন যেভাবে করোনা পরিস্থিতি বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে মানুষের জীবন সংশয় হয়ে যাচ্ছে। আর তাই তারা এবার এই মেলায় আসবেন না। অর্থাৎ এবারে কেন্দুলির জয়দেবের মেলায় মনের মানুষের আখড়া একেবারে বন্ধ থাকবে এমনই জানা যাচ্ছে।
তবে কীর্তন এলাকাগুলো এবছরও থাকছে। তবে তা অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক কম। বীরভূম জেলাপ্রশাসনের ক্ষেত্রে সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ কীভাবে মেলাটা কোভিড বিধিনিষেধ মেনে করা যায়।
অপরদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনো মেলাই সমস্ত বিধিনিষেধ মেনে করা সম্ভব নয়। চূড়ান্ত বিধিনিষেধ মেনেও সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। বিশেষ করে যখন রাজ্যের একাধিক স্বাস্থ্যকর্মী, নার্স, চিকিৎসকরা আক্রান্ত। তাদের বক্তব্য, গঙ্গাসাগর মেলা “সুপারস্প্রেডার”-এর কাজ করবে। ব্যঙ্গ করে অনেকেই বলেছেন, এটা “করোনা মেলায়” পরিণত হবে। তবে জয়দেবের মেলার ক্ষেত্রে অনেকটাই কাটছাঁট করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে খবর সূত্রে।
বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “রাজ্যে স্কুল-কলেজ, অফিস-কাছারি বন্ধ। তারপরেও মেলা হচ্ছে! বরাবরের মতোই বলব, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে পদক্ষেপ করা হোক।” তাঁর বক্তব্য, গঙ্গাসাগর মেলা এবার বন্ধ থাকলে কি এতটাই ভোট ব্যঙ্কে সমস্যা হত তৃণমূলের? এক বছর মেলা বন্ধ করা যেত না!”