গত, ৩ ডিসেম্বর চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের জামিনের মামলার শুনানি করার কথা ছিল আইনজীবী রমেন রায়ের ৷ কিন্তু তার আগে একদনল মৌলবাদী বাংলাদেশে তাঁর বাড়িতে চড়াও হয় এবং আইনজীবীর উপর আক্রমণ চালায় ৷ তিনি আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৷ এরপর চিন্ময়কৃষ্ণের হয়ে মামলা লড়ার জন্য কোনও আইনজীবী হাজির ছিলেন না ৷ এই পরিস্থিতিতে একমাস পিছিয়ে ২রা জানুয়ারি তারিখে ধার্য করেছে আদালত।
চিন্ময়কৃষ্ণ ছাড়াও বাংলাদেশে আরও কয়েক জন সন্ন্যাসীকে গ্রেফতার করেছে সে দেশের পুলিশ। অভিযোগ, তাঁদের মধ্যে কেউ জেলে চিন্ময়কৃষ্ণের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন, কেউ আবার খাবার পৌঁছে দিতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছেন। শুধু ভারত নয়, বাংলাদেশের অস্থির পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করেছে ব্রিটেনও। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নেতাদের গ্রেফতারির প্রসঙ্গ উঠেছে ব্রিটেনের পার্লামেন্টে। বিরোধী কনজ়ারভেটিভ দলের সাংসদেরা এ বিষয়ে সংসদে আলোচনার দাবিও জানান। সেই আবহেই এ বার ব্রিটেন তাদের নাগরিকদের সতর্ক করল।
ইসকন সন্ন্যাসীরা বাংলাদেশে প্রানে বাঁচতে হিন্দু পরিচয় দেবেন না
প্রসঙ্গত, চিন্ময়ের গ্রেপ্তারিতে আন্তর্জাতিক মহলে এমনিতেই চাপে ছিল ইউনুস সরকার। সেই চাপ আরও বেড়েছে মঙ্গলবার আদালতে চিন্ময়ের তরফে আদালতে কোনও আইনজীবী উপস্থিত থাকতে না পারায়। অভিযোগ, চিন্ময় যাতে আইনি সহায়তা না পান সেটা নিশ্চিত করতে তাঁর আইনজীবীদের মারধর করা হয়, এমনকী বহু হিন্দু আইনজীবীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তাতে আন্তর্জাতিক চাপ আরও বেড়েছে বাংলাদেশ সরকারের সমন্বয়কদের উপর। আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকা যাচ্ছেন ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্ত্রী। এদিকে দেশের অন্দরেও বাড়ছে চাপ। একজোট হয়ে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করছেন সংখ্যালঘু হিন্দুরা।
উলেখ্য, কলকাতা ইসকন-এর মুখপাত্র রাধারমন দাস এই ঘটনায় বাংলাদেশ সরকারের সমালোচনা করে জানান, এই ঘটনা মানুষের মৌলিক অধিকারের বিরোধী ৷ তিনি বলেন, "মামলা লড়ার কোনও আইনজীবী নেই ৷ এটা সত্যিই হতাশাজনক ৷ এটাই কি বিচার ? এইভাবেই কি আপনারা স্বাধীন ও স্বচ্ছ বিচার দেন ? আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে আর্জি জানাব, আপনারা বিষয়টি দেখুন ৷"চিন্ময় প্রভুর গ্রেপ্তারির পর প্রায় দুসপ্তাহ অতিক্রান্ত! উত্তরোত্তর অশান্তি বাড়ছে বাংলাদেশে। বাড়ছে আন্তর্জাতিক চাপও। নয়াদিল্লি, ব্রিটেন, আমেরিকা একযোগে সরব সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে। সব মিলিয়ে চিন্ময় প্রভুর গ্রেপ্তারি এবং সংখ্যালঘু নির্যাতন ইস্যুতে প্রবল চাপে মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার।