এটা স্বাস্থ্য বা চিকিৎসকদের সমস্যা, এরজন্য সাধারণ মানুষ কেন চিকিৎসা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হবে?
প্রথম থেকেই জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনকে প্রকাশ্যে সমর্থন করে এসেছেন ডঃ কুনাল সরকার।
কলকাতার এই ঘটনা সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে থাকা, তাদের আন্দোলনকে সমর্থন করে এসেছেন কলকাতার এই প্রখ্যাত চিকিৎসক।
প্রায় ১০ ঘণ্টা ধরে বৈঠক করলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। পুজোর আগে কি কর্মবিরতি প্রত্যাহার করবেন তাঁরা? না কি আন্দোলনের জন্য অন্য কোনও পন্থা বেছে নেবেন? এই সমস্ত প্রশ্নের জবাব পাওয়া যেতে পারে আজ, শুক্রবার। এ দিন ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্টের জেনারেল বডি-র বৈঠক শেষ হয়। ডাঃ কুনাল সরকার আলোচনার টেবিলে সমস্যা মেটানোর পক্ষে। তাঁর সাফ বক্তব্য, ‘‘জুনিয়র চিকিৎসকরা আদর্শবাদী। পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় কী কী ঘাটতি রয়েছে সেগুলি নিয়ে চিন্তাভাবনা করে যদি কর্মবিরতি করা যায় তা হলে তো ডাক্তাররা কাজ করার সুযোগই পাবেন না।’’ সেই সঙ্গে তিনি যোগ করলেন, ‘‘তারা (জুনিয়র চিকিৎসক) স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে ভাবছেন। এটা প্রয়োজন। কাজের সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সম্পর্কিত বিভিন্ন কথা চলতেই পারে। তাই আমি অবশ্যই বলব কর্মবিরতি ফিরিয়ে নিক জুনিয়র চিকিৎসকরা।’’ ডাঃ সরকারের সঙ্গে একই মত পোষণ করেছেন কলকাতার আরও একজন প্রখ্যাত চিকিৎসক ডাঃ অরিন্দম বিশ্বাস। তিনি বলেছেন, ‘‘ঘটনা যেদিকে যাচ্ছে সেটা মোটেই বাঞ্ছনীয় নয়। মনে রাখতে হবে বহু মানুষ সরকারি চিকিৎসার ওপর নির্ভর করেন। সেই জায়গা থেকে বারবার যদি কর্মবিরতি হয়, তা হলে সমস্যায় পড়ে সাধারণ মানুষ।’’
গতকাল রাতের জেনারেল বডি-র বৈঠকে কাজে ফেরা নিয়েও জুনিয়র চিকিৎসকদের নানা মত সামনে এসেছে। তবে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও ঘোষণা করা হয়নি। একটি সূত্রের খবর, এসএসকেএম বা কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে ধর্মতলা মেট্রো চ্যানেল অথবা গান্ধী মূর্তি পর্যন্ত একটি মিছিল করতে পারেন জুনিয়র ডাক্তাররা।
কর্মবিরতি নিয়ে জুনিয়র চিকিৎসকরা আরও একটু ভাবুক– এই অনুরোধ করে ডাঃ অরিন্দম বিশ্বাস জানালেন, শুরুটা হয়েছিল একটা নির্মম ঘটনার প্রতিবাদকে ঘিরে। কিন্তু বারবার এই ধরনের কর্মবিরতিতে মানুষের ধারণা অন্যরকম হবে। সাধারণ মানুষ প্রশ্ন করতে শুরু করেছেন, এটা কি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত? ‘‘বর্তমানের আন্দোলন এবং পরিপ্রেক্ষিতের মধ্যে বিভ্রান্তি রয়েছে। থ্রেট কালচারের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু এটা তো বাইরের থেকে আসছে না।
ডাঃ কুনাল সরকার বলছেন, ‘‘যেটা নিয়ে আন্দোলন শুরু হয়েছিল ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তার ধার কমেছে’’
‘‘সাম্প্রতিক পরিস্থিতি বিষয়টিকে বিভ্রান্তিতে নিয়ে যাচ্ছে’’
‘‘এটা স্বাস্থ্য বা চিকিৎসকদের সমস্যা, আমজনতার সমস্যা নয়– এটা বুঝতে হবে’’
‘‘চিকিৎসকদের সমস্যায় ১০ কোটি মানুষকে খেসারত দিতে হবে কেন?’’
‘‘আমি অবশ্যই বলব কর্মবিরতি ফিরিয়ে নিক জুনিয়র চিকিৎসকরা’’
এটা তো বাই দ্যা ডক্টরস- ওন দ্যা ডক্টরস। এটা তো সাধারণ মানুষের সমস্যা নয়। এটা স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সঙ্গে যারা জড়িত অর্থাৎ মেডিক্যাল কমিউনিটির সমস্যা’’– এমন চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করলেন ডাঃ কুণাল সরকারের। বেশ কিছু ইনকোয়ারি কমিটি তৈরি হয়েছে। সেগুলি সবটাই ধূর্ততার বশে তৈরি হয়েছে তা নয়। এগুলি থেকে কোনও ফলাফল নিশ্চয়ই পাওয়া যাবে এই আশাও করেছেন ডাঃ সরকার।
তিনি আরও বলেন, ‘‘আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের যে নিকৃষ্টতম ঘটনা ঘটেছে তার তদন্ত চলছে। যা নিয়ে আমরা সবাই জাস্টিস চাইছি, এটা তখনই সমাধান সূত্র বের হবে যখন সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের মুষ্টিমেয় ১০-১২ জন ছেলে-মেয়ে যারা বিষয়টা জানে তারা তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই-এর সামনে বলুক”। তিনি আরও জানালেন, ‘‘সিবিআইকে যদি তাদের স্ট্যাটাস রিপোর্টে বলতে হয়, আমরা অনেক চেষ্টা করলাম কিন্তু আরজি করের ভেতর থেকে মূল কথাটা বেরিয়ে আসেনি। তা হলে তো কঠিন চুনকালি আমাদের মুখে আর কোনওদিন পড়বে না।’’
কলকাতার এই ঘটনা সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে থাকা, তাদের আন্দোলনকে সমর্থন করে এসেছেন কলকাতার এই প্রখ্যাত চিকিৎসক। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি চিকিৎসকের মনে সন্দেহ দানা বেধেছে। একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন চিকিৎসক কুণাল সরকার। তিনি বলেছেন, ‘‘মনে রাখতে হবে মেয়েটিকে তো রাস্তার লোক এসে মারেনি।