নবান্ন অভিযান কর্মসূচিতে মানুষের স্বতস্ফূর্ত সাড়া দেখে ফের একই ধরনের অভিযানে নামতে চলেছে ছাত্র সমাজ। শুক্রবার সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন নবান্নব অভিযানে ছাত্র সমাজের অন্যতম মুখ শুভঙ্কর হালদার।
সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, আরজি করের প্রতিবাদে এবং মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে তাঁদের আন্দোলন চলবে। তারই অঙ্গ হিসেবে অগস্টের মতো সেপ্টেম্বরেও অভিযানে হবে। পুজোর পরে আরও বড় আকারে প্রতিবাদ কর্মসূচি সংগঠিত করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
শুভঙ্কর বলেন, "পরিকল্পনা চলছে। পুজোর আগেই আমরা দ্বিতীয় অভিযানে নামব। খুব শীঘ্রই সবটা জানতে পারবেন।" ছাত্র সমাজের দ্বিতীয় অভিযানে দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি শামিল হতে পারেন উত্তরবঙ্গের মানুষও।
২৭ অগস্ট কলেজ স্কোয়্যার এবং সাঁতরাগাছি, দু’টি জায়গা থেকে মিছিল করে নবান্ন অভিযানে নেমেছিল ছাত্র সমাজ। অভিযান ঘিরে বিস্তর গোলমাল হয়েছিল। জখম হয়েছিল পুলিশ এবং আন্দোলনকারী দু'পক্ষেরই একাধিকজন। পুলিশের তরফে যেমন আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ আনা হয়েছিল তেমনই আন্দোলনকারী-সহ বিরোধীরা পুলিশের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ মিছিলে আক্রমণের অভিযোগে সরব হয়েছিল।
ছাত্র সমাজের অন্যতম মুখ সায়ন লাহিড়ি-সহ একাধিক জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। যদিও প্রথমে হাইকোর্ট এবং পরে সুপ্রিমকোর্ট সায়নের জামিন মঞ্জুর করে। এ ব্যাপারে শুভঙ্কর বলেন, "আমরা যে সেদিন কোনও অন্যায় করিনি সেটা তো আদালতের পর্যবেক্ষণে স্পষ্ট হয়ে গেছে। ফলে মানুষের স্বতস্ফূর্ত সমর্থনের সাহায্যে সেপ্টেম্বরেও আমরা একই ধরনের অভিযান করব।"
নবান্ন অভিযান সফল হয়েছে বলেই মনে করে পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ। তাদের ডাকে নবান্ন অভিযান ঘিরে সংঘর্ষের আবহ তৈরি হয় কলকাতা ও হাওড়ায়।
কলেজ স্কোয়্যার এবং সাঁতরাগাছি থেকে দু’টি মিছিল বার হয়ে নবান্নের দিকে যাবে জানালেও সে দিন বেশ কয়েকটি ছোট ছোট মিছিল হয়। তা আটকাতে যুদ্ধকালীন প্রস্তুতি নিয়েছিল পুলিশ। কাঁদানে গ্যাস, জলকামানের পাশাপাশি লাঠিও চালায় পুলিশ। পাল্টা ইট ছোড়ার অভিযোগ ওঠে মিছিল থেকে। কয়েক জন পুলিশকর্মী আহতও হন। পুলিশ কর্মসূচির আগে থেকেই অভিযান আহ্বায়কদের কয়েক জনকে গ্রেফতার করে। পরে সায়ন লাহিড়ী নামে এক জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। কলকাতা হাই কোর্ট সায়নকে জামিন দিলেও বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। সেখানেও সায়নের পক্ষেই রায় মেলে। সেই জয়কে পাথেয় করেই আবার কর্মসূচি নিতে চান শুভঙ্করেরা। তিনি বলেন, ‘‘সে দিন সাধারণ মানুষ আমাদের ডাকে যে ভাবে সাড়া দিয়েছেন তা এখনও পাচ্ছি। আদালতও জানিয়ে দিয়েছে, আমরা কোনও অন্যায় করিনি। তাই আরও বড় আকারে নির্যাতিতার বিচার এবং মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি নিয়ে আমরা পথে নামব।’’