Flash News
Monday, September 22, 2025

গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে উদ্বিগ্ন চিকিৎসক মহল

banner

journalist Name : Sabyasachi Chatterjee

#Pravati Sangbad Digital Desk:

গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী রাজ্যে করোনা আক্রান্ত ২২ হাজারের বেশি, মৃতের সংখ্যা ২৩। দেশের চিত্রটাও ঠিক একই রকম, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় আক্রান্ত প্রায় আড়াই লক্ষ্যের কাছাকাছি মানুষ। বর্তমানে দেশের মধ্যে সংক্রমণের নিরিখে এগিয়ে পশ্চিমবঙ্গ। তবুও হুঁশ ফেরেনি অনেকের। করোনাই আক্রান্ত হচ্ছেন একের পর এক তারকা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। দেশে তৃতীয় ঢেউয়ের শুরু হয়েছিল গত বছরের ২৫শে ডিসেম্বরের পর থেকে, তার পরে কেটে গেছে বেশ কিছু দিন, চিত্রটা একদম আলাদা।
ক্রমেই কামড় বসাচ্ছে করোনা। চিকিৎসকরা আগেই সতর্ক করেছিলেন বহুবার, কিন্তু তাতেও টনক নরেনি কারোর। গত দুটি প্রজাতির থেকে বহুগুণ সংক্রামক করোনার এই নতুন প্রজাতি, আগেই বলেছিলেন চিকিৎসকেরা, ঠিক তেমনটাই হচ্ছে। গত ৩শরা জানুয়ারি থেকে রাজ্যে বেশ কিছু বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছিল নবান্নের তরফ থেকে, কিন্তু তাতেও করোনার গ্রাফ নিচের দিকে নামার কোন লক্ষণই নেয়, বরং একের পর এক রেকর্ড ব্রেক করছে করোনা নিজেই। এত কিছুর পরেও রাজ্যে বন্ধ হয়নি গঙ্গাসাগর মেলা, চলছে জোড় কদমে। যা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রাজ্যের চিকিৎসক মণ্ডলীর একাংশ।
রাজ্যে একে একে আক্রান্ত হচ্ছেন চিকিৎসকরাও, প্রত্যেক হাসপাতালে আক্রান্ত চিকিৎসক থেকে শুরু করে নার্স টেকনিশিয়ান। স্বাভাবিক ভাবেই রাজ্যের এখন শিয়রে সর্বনাশ। চিকিৎসকরা করোনাই আক্রান্ত হলে চিকিৎসা করবেন কার? সর্বত্র এই একই প্রশ্ন উঠছে। তার মধ্যে নতুন মাথা ব্যাথার কারণ গঙ্গাসাগর মেলা। আগের বছর দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় বেশ ভাল ভাবেই পালিত হয়েছিল কুম্ভ মেলা, আর তাতেই কার্যত সুপার স্প্রেডারে পরিণত হয়েছিল কুম্ভ মেলা। এই বার গঙ্গাসাগর মেলা নিয়েও একই ভয় পাচ্ছেন চিকিৎসকরা।

এই নিয়ে কোলকাতা উচ্চ আদালতেও মামলা করেছিলেন রাজ্য চিকিৎসক মণ্ডলীর এবং সমাজ সেবীদের একাংশ, কিন্তু তাতেও বিশেষ কিছু ফল হয়নি। বন্ধের রায় না দিলেও একাধিক বিধি নিষেধ জারি করেছে কোলকাতা হাইকোর্ট। গঠিত হয়েছে বিশেষজ্ঞ কমিটিও, কিন্তু সেই কমিটিতে নেই একজনও কোভিড বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। গঙ্গাসাগর মেলার জন্য প্রতি বছর বাবু ঘাটে মেলায় আসা সাধুদের জন্য তৈরি হয় ট্রানজিট ক্যাম্প, এই বারেও তার অন্যথা হয়নি। মেলা শুরুর আগেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পূণ্যর্থীরা এসে ভিড় জমান সেই ক্যাম্পে। তাদের অনেকের মুখেই নেই মাস্ক, মানছেন না কোভিড বিধি, এমনকি অনেকেই নেয়নি করোনার প্রতিষেধক। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে তাদের জন্য ব্যাবস্থা করা হয়েছে করোনা প্রতিষেধকের।

মেলায় প্রবেশের জন্য আরটিপিসিআর টেস্ট বাধ্যতামূলক করেছে আদালত। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সাধারণ মানুষের মকর সংক্রান্তির পুণ্য স্নানে বাঁধা দেওয়ার জন্য বাঁশ দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে গঙ্গাসাগরের সমুদ্র চত্তর, তবে সাধুদের স্নানে রয়েছে ছাড়, এছাড়া ড্রোনের মাধ্যমে জল ছিটিয়ে করা হবে স্নানের ব্যাবস্থা। তবে চিকিৎসকদের মনে একটাই প্রশ্ন আদেও কি এত মানুষের আরটিপিসিআর টেস্ট করা সম্ভব? গঙ্গাসাগর মেলা শেষ হলে পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে তা নিয়ে রাতের ঘুম উড়েছে রাজ্যের চিকিৎসক মণ্ডলীর একাংশের।
Related News