#Pravati Sangbad Digital Desk:
আদা-জল খেয়ে কাজে লেগে পড়- এই কথাটি তো আমরা প্রায়শই শুনেছি৷ কিন্তু কেন এই প্রবাদটি ব্যবহার করা হয় জানেন? আদা-চা যেমন খান, তার থেকেও কিন্তু বেশি উপকারী এই আদা জল।
শুধুমাত্র রান্নায় মশলা হিসাবে নয়, প্রাচীন কাল থেকে আয়ুর্বেদে আদার রসকে বিভিন্ন ওষুধ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। হোমিওপ্যাথেও আদার নানা ভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। এর অন্যতম কারণ আদার রসের উপসম ক্ষমতা। আদায় পটাসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, কপার এবং ম্যাগনেসিয়াম-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ মিনারেল থাকে। প্রতি দিন এক গ্লাস আদা দিয়ে ফোটানো জল খেলে শরীর থেকে নানা রোগ বিদায় নেবে এবং সুস্থ জীবন যাপন করতে সাহায্য করবে।আমাদের আজকের এই প্রতিবেদন থেকে এই আদা জলের গুণাগুণ সম্পর্কে চলুন জেনে নেওয়া যাক -
হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়:
বেশ কিছু কেস স্টাডি করে দেখা গেছে নিয়মিত সকাল বেলা যদি এক গ্লাস করে আদা জল পান করা যায়, তাহলে পাকস্থলির কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে পাচক রসের ক্ষরণ বেড়ে যেতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বদ-হজম এবং গ্যাস-অম্বলের সমস্যা কমতে শুরু করে। প্রসঙ্গত, গর্ভাবস্থায় সকাল সকাল যদি এই পানীয়টি খাওয়া শুরু করতে পারেন, তাহলে মর্নিং সিকনেসের মতো সমস্যা একেবারে কমে যায়।
ওজন হ্রাস করে:
অতিরিক্ত ওজনের কারণে যদি চিন্তায় থাকেন, তাহলে আজ থেকেই আদা জল খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন দারুন উপকার মিলবে।আসলে আদার অন্দরে থাকা একাধিক উপকারি উপাদান ক্ষিদে কমিয়ে দেয়। ফলে খাওয়ার পরিমাণ কমতে থাকে। সেই সঙ্গে শরীরে জমে থাকা অতিরিক্তও মেদও ঝরতে শুরু করে। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে আসতে একেবারেই সময় লাগে না।
কাশিতে উপশম:
ঠান্ডা লেগে গলা ভেঙে গেলে, কাশিতে গলা খুশখুশ করলে আদা কুঁচিয়ে জলে ফেলে দিন। ঈষদুষ্ণ সেই জল পান করুন দিনে দু’-তিন বার। ঠান্ডাজনিত প্রদাহ কমিয়ে গলাকে আরাম দিতে সিদ্ধহস্ত আদা-জল।
ডায়াবেটিস রোগকে দূরে রাখে:
নিয়মিত আদা জলের সঙ্গে অল্প করে লেবুর রস মিশিয়ে পান করার অভ্যাস করুন একদিকে যেমন কিডনির কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, তেমনি শরীরে জিঙ্কের ঘাটতি দূর হতে শুরু করে। এই খনিজটি ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা এত মাত্রায় বাড়িয়ে দেয় যে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে সময় লাগে না।
পেশীর কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়:
সারা সপ্তাহ দৌড়-ঝাঁপ করে কাজ করতে করতে সপ্তাহান্তে আমাদের শরীরের প্রায় প্রতিটি পেশীই বেশ ক্লান্ত হয়ে পরে। এই সময় তাদের চাঙ্গা করার জন্য কি করা যেতে পারে? কিছুই নয়, এমন পরিস্থিতিতে এক গ্লাস আদা জল পান করে ফেলুন। এমনটা করলে দেখবেন নিমেষে শরীর চাঙ্গা হয়ে উঠবে। আসলে আদা, পেশীর কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই কারণেই তো বডি বিল্ডারদেও আদা জল খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।
ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায়:
আদায় উপস্থিত রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন, যা ত্বকের অন্দের জমে থাকা টক্সিক উপাদানদের বের করে দেয়। সেই সঙ্গে কোলাজেনের উৎপাদনও বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ত্বকের সৌন্দর্য বাড়তে শুরু করে। প্রসঙ্গত, এই মশলাটিতে থাকা ভিটামিন এ এবং সি চুলের সৌন্দর্য বাড়াতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই ত্বকের উপর বয়সের ছাপ না পরুক, এমনটা যদি চান, তাহলে নিয়মিত আদা জল খেতে ভুলবেন না যেন।