আমাদের ত্বক কোথাও ঘষা খেয়ে খুব সহজেই ফোসকা পড়তে পারে। এছাড়া গরম, ঠান্ডা ও কেমিক্যালের সংস্পর্শেও ফোসকা ওঠতে পারে। ফোসকা ওঠার আরেকটি কারণ হলো পোকামাকড়ের কামড়ের প্রতি অ্যালার্জিক রিয়্যাকশন। কিছু স্বাস্থ্য সমস্যাও ফোসকার প্রকাশ ঘটাতে পারে, যেমন- কোল্ড সোর, চিকেনপক্স, একজিমা, জেনিটাল হার্পিস, স্ক্যাবিস, স্কুল সোর, হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ, ডায়াবেটিস ও অটোইমিউন ব্লিস্টারিং ডিসঅর্ডার। নতুন জুতা পরলে অনেকের পায়ে ফোসকা পড়ে। পায়ের ফোসকা প্রসঙ্গে পিডিয়াট্রিক সার্জনের প্রধান জন গিউরিনি বলেন, ‘সাধারণত জুতা অথবা ভূমিপৃষ্ঠে ঘষা খেয়ে পায়ে ফোসকা ওঠে থাকে। সমস্যাটি এড়ানোর কিছু উপায় রয়েছে, যেমন- খালি পায়ে না হাঁটা, টাইট জুতা না পরা, পায়ে ফিট হয়েছে এমন জুতা পরা এবং দীর্ঘপথ না হাঁটা’। এখানে ফোসকা ওঠলে তা সারাতে ঘরে কি করতে পারেন তা সম্পর্কে বলা হল -
ঢেকে রাখা: ফোসকাতে ব্যান্ডেজ লাগিয়ে দিলে ঘর্ষণের মাত্রা কমবে ও উক্ত্যক্তকারী সংস্পর্শ থেকে রক্ষা পাবে। একটি ব্যান্ডেজের আঠালো প্রান্তদ্বয়কে পাশাপাশি এমনভাবে লাগিয়ে নিন যেন প্যাডের অংশটি ফোসকার ওপর উঁচু হয়ে থাকে। অর্থাৎ ব্যান্ডেজ দিয়ে ফোসকাকে এমনভাবে ঢেকে দিতে হবে যেন তা তাঁবুর মতো দেখায়। এই ঘরোয়া উপায়টি ফোসকাকে ঘর্ষণ, নোংরা বা জীবাণুযুক্ত কিছু থেকে সুরক্ষিত রাখার পাশাপাশি বাতাস চলাচলও নিশ্চিত করে।
আপেল সিডার ভিনেগার: সাবধান, আপেল সিডার ভিনেগার ব্যবহারে জ্বালাপোড়া করতে পারে। কিন্তু ফোসকার চিকিৎসা হিসেবে এটা প্রয়োগ করতে পারেন। এতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল প্রপার্টি রয়েছে। ডা. গিউরিনি বলেন, ‘আপেল সিডার ভিনেগারকে স্বল্পমেয়াদে টপিক্যাল ট্রিটমেন্ট হিসেবে ব্যবহার করা যায়। কিন্তু ইতোমধ্যে সংক্রমণ সৃষ্টি হয়ে গেলে এটা ব্যবহার করবেন না।’ তুলাকে আপেল সিডার ভিনেগারে ভিজিয়ে ফোসকাতে প্রয়োগ করতে পারেন। মনে রাখবেন, আপেল সিডার ভিনেগার নরম টিস্যুকে শক্ত করে ফেলতে পারে।
অ্যালোভেরা : পায়ে ফোসকা পড়লে অ্যালোভেরা একটি সহজ পদ্ধতি। কারণ অ্যালোভেরাতে এন্টিসেপটিক আছে। ফলে পায়ের ক্ষত বা ফোস্কা সহজেই সাড়াতে পারে। আপনি চাইলে অ্যালোভেরা জেল কিনে নিতে পারেন। সেটাও একটা ভালো উপায়।
টুথপেস্ট: ফোসকা পড়লে জ্বলুনি থেকে ছাড়া পাওয়া মুশকিল। আর ক্ষত দ্রুত না শুকোলে ফোসকা আরো জ্বালাতন করে। সেক্ষেত্রে টুথপেস্ট ব্যবহার করুন। টুথপেস্ট ব্যবহারে ক্ষত দ্রুত শুকোতে শুরু করে। তাছাড়া টুথপেস্টের ঠাণ্ডা উপকরণ কিছুটা আরাম দেয়।
নারকেল তেল: পায়ে ফোসকা পড়লে নারকেল তেল ব্যবহার করুন। এতে ফোসকা শুকিয়ে যাবে আস্তে আস্তে। নতুন জুতো পায়ে দেয়ার আগেও নারকেল তেল দিয়ে মালিশ করে নিতে পারেন। তবে বেশি ব্যবহার করবেন না।
গ্রিন টি: গ্রিন টিতে এন্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান আর এন্টি-অক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। তাই ফোসকা পড়ার পর গ্রিন টি ব্যবহার করুন। তবে গরম গরম গ্রিন টি না। প্রথমে ঠাণ্ডা পানিতে গ্রিন টি ব্যাগ ভিজিয়ে নিন। সেই পানি ফোসকায় ব্যবহার করুন। টি ব্যাগটি ফেলে দিবেন না। ব্যবহার শেষে ব্যাগটি ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন। পরবর্তীতে ফোসকায় ব্যাগ ব্যবহার করলে আরাম পাবেন।