মাইগ্রেন হলে মাথার অর্ধেক অংশ ব্যথা করে। এই ব্যথা মাঝে মাঝে হয় আবার নিজে থেকেই বন্ধ হয়ে যায়। অনেক সময় পুরো মাথা ব্যথা করতে শুরু করে। কয়েক মিনিট থেকে শুরু করে কয়েকদিন পর্যন্ত এই ব্যথা থাকে। এটি একটি নিউরোলজিক্যাল সমস্যা। এতে মাথা ব্যথার পাশাপাশি অনেকের বমি বা সর্দির সমস্যা হতে শুরু করে। তবে সমস্ত মাথা ব্যথা মাইগ্রেন হয় না।
চিকিৎসকদের মতে মাইগ্রেনের ব্যথা হেরিডিটারি। যে কোনও বয়সের ব্যক্তিকে এই ব্যথা হতে পারে। দু ধরণের মাইগ্রেন হয়— ক্লাসিকাল মাইগ্রেন ও নন ক্লাসিকাল মাইগ্রেন। ক্লাসিকাল মাইগ্রেন হলে ব্যক্তির মধ্যে কিছু লক্ষণ দেখা যায়। নন ক্লাসিকাল মাইগ্রেনে নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর তীব্র মাথা ব্যথা হয়। তবে এর অন্য কোনও লক্ষণ দেখা যায় না। মাইগ্রেনের ব্যথা হলে নিজের ইচ্ছানুযায়ী কোনও ওষুধ খাবেন না। চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। মাথা ব্যথার সমস্যাকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। প্রাইমারি হেডেক ও সেকেন্ডারি হেডেক। টিউমার, রক্তপাত বা মাথা ব্যথার পিছনে অন্য কোনও রোগ থাকলে তাকে বলা হয় সেকেন্ডারি হেডেক। অপরদিকে প্রাইমারি হেডেক হল যার পিছনে তেমন কোনও কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। এবার মাইগ্রেন হল সেকেন্ডারি হেডেক।
ডা: দত্ত বলেন, এই এক্ষেত্রে কিছু ক্লাসিক্যাল লক্ষন রয়েছে- ১. মাথার একদিক থেকে ব্যথা শুরু হয়। ২. মাথা দপদপ করে। ৩. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া। ৪. আলোতে সমস্যা। ৫. বেশি আওয়াজেও সমস্যা হতে পারে। মোটামুটি এই হল লক্ষণ।
ডা: দত্ত জানান, এই রোগের কিছু ট্রিগার (Migraine Trigger) রয়েছে। অর্থাৎ যার সম্মুখীন হলে সমস্যা দেখা দেয়। এমনই কয়েকটি ট্রিগার হল-
১. আমারিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ফাস্ট ফুডে থাকা প্রিজারেভেটিভ থেকে মাথা ব্যথা দেখা দেয়। আর আমাদের দেশে বিভিন্ন চাইনিজ ও ভারতীয় থাকা আজিনামোটো থেকে হতে পারে মাথা ব্যথা।
২. রোদে বেরলে সমস্যা হতে পারে।
৩. খালি পেটে থাকা।
৪. অত্যধিক দুশ্চিন্তা।
৫. আতর বা অন্য কোনও গন্ধ থেকে।
৬. কম বা বেশি ঘুম।
ডা: দত্ত বলেন, রোগ কতটা গুরুতর তার উপর নির্ভর করেই চিকিৎসা হয়। যাঁদের মাঝেসাঝে সমস্যা হয় তাঁদের সাধারণ পেইনকিলার (Pain Killer) দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে মাথা ব্যথা হলে সেই ওষুধ খেলে সমস্যা মেটে। তবে যাঁদের নিয়মিত সমস্যা হয় তাঁদের চিকিৎসা দুই ধরনের। প্রথমত, তাঁদের যন্ত্রণা কমানোর ওষুধ দেওয়া হয়। পাশাপাশি যাতে মাথা ব্যথা বারবার না হয় বা মাথা ব্যথা হলেও যাতে কম সময়ের জন্য হয়, এই বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্যও ওষুধ দেওয়া হয়। এই ওষুধ খেতে হয় নিয়মিত। এবার জেনে রাখুন, প্রথমদিকে এই রোগের চিকিৎসা হলে অনায়াসে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিন্তু সমস্যা বাড়তে থাকলে তখন রোগ ক্রনিক মাইগ্রেনে পরিণত হয়। তখন চিকিৎসা কঠিন।